আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু হতে বাকি আর ৭ দিন। সময় যতই ঘনিয়ে আসছে, টুর্নামেন্ট নিয়ে ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহ ততই বাড়ছে।

দলগুলো নিয়ে বিশ্লেষণ করাও শুরু হয়ে গেছে। সেমিফাইনাল ও ফাইনালে উঠবে কারা, কোন দলের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি, কোন দল চমক দেখাতে পারে—এমন ভবিষ্যদ্বাণীও করছেন কেউ কেউ।

রিকি পন্টিং সরাসরি কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করেননি। তবে দলগুলোর শক্তিমত্তা–দুর্বলতার জায়গাগুলো দেখে তাঁর মনে হচ্ছে, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির বাংলাদেশ দলে মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের ঘাটতি আছে। মুশফিক–মাহমুদউল্লাহ–নাজমুল–তাসকিনদের চেয়ে রশিদ–নবী–গুরবাজদের আফগানিস্তানকেই এগিয়ে রাখছেন অস্ট্রেলিয়ার কিংবদন্তি অধিনায়ক।

২০০৬ ও ২০০৯ সালে রিকি পন্টিংয়ের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। দুবার এই শিরোপা জেতা একমাত্র অধিনায়কও তিনি। আট বছর পর ফিরতে চলা আইসিসির এই ইভেন্ট নিয়ে পন্টিং কথা বলেছেন আইসিসি রিভিউয়ে। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেছেন ভারতের তারকা ফাস্ট বোলার যশপ্রীত বুমরার স্ত্রী, ক্রীড়া সাংবাদিক ও উপস্থাপিকা সঞ্জনা গণেশন।

সঞ্জনা পন্টিংয়ের কাছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, তারা (বাংলাদেশ) চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বেশ ভুগতে চলেছে। আমার মনে হয়, অন্য দলগুলোর সঙ্গে মানের বিচার করলে এই দলটা পিছিয়ে থাকবে। তাদের দলে কোয়ালিটির (মানসম্পন্ন খেলোয়াড়ের) কিছুটা অভাব আছে।’

৫০ বছর বয়সী পন্টিং আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ যদি ঘরের মাঠের মতো আদর্শ কন্ডিশন পায়, তাহলে বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু আমার মনে হয় না চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তারা সেই সুবিধা পাবে। আপনি (সঞ্জনা গণেশন) যাদের নাম বললেন, তারা বড় মাপের ও বেশ অভিজ্ঞ খেলোয়াড়। বড় টুর্নামেন্টগুলোতে বাংলাদেশ সেসব খেলোয়াড়ের ওপর (অতিমাত্রায়) নির্ভরশীল। এই শূন্যস্থান পূরণ করা তাদের জন্য কঠিন হবে। আমার তো মনে হয় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বাংলাদেশের চেয়ে আফগানিস্তানের (ভালো করার) সম্ভাবনা বেশি।’

কদিন আগে পাকিস্তান কিংবদন্তি শোয়েব আক্তারও জানিয়েছেন, চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে তিনি আফগানিস্তানের সেমিফাইনালে ওঠার দারুণ সম্ভাবনা দেখছেন। এক্সপ্রেস ট্রিবিউনকে ক্রিকেট ইতিহাসের দ্রুততম এই বোলার বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যদি পরিপক্বতা ধরে রাখতে পারে, তাহলে তারা অপ্রত্যাশিত কিছু (অঘটন) করে ফেলতে পারে।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। শোয়েব মনে করেন, ফাইনালে ভারত–পাকিস্তানের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। তাঁর এই কথার অর্থ, বাংলাদেশকে তিনি চ্যালেঞ্জ মনে করেন না এবং সেমিফাইনালেও দেখেন না।

সাম্প্রতিক সময়ে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স আশাব্যঞ্জক নয়। গত বছর ৯ ওয়ানডে খেলে ৬টিতে হেরেছে, সর্বশেষ দুটি সিরিজেও হার। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজে হয়েছে ধবলধোলাই, শারজায় আফগানিস্তানের বিপক্ষে হেরেছে ২–১ ব্যবধানে।

বিপরীতে আফগানিস্তান গত পাঁচটি ওয়ানডে সিরিজ খেলে চারটিতেই জিতেছে। এর মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে স্মরণীয় সিরিজ জয়ও আছে। ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দুর্দান্ত খেলেছে আফগানিস্তান। পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কাকে তারা হারিয়ে দিয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জিততে জিততে হেরে গেছে। নয়তো সেবারই সেমিফাইনালে উঠতে পারত।

অল্পের জন্য ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে সেমিফাইনালে খেলার স্বপ্নপূরণ না হলেও বেশি দিন অপেক্ষা করতে হয়নি আফগানদের। গত বছর ক্রিকেট বিশ্বকে চমকে দিয়ে প্রথমবারের মতো টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয় তারা। সুপার এইট পর্বের শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে হারিয়েই শেষ চারে পৌঁছে যান রশিদ–নবীরা।

চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ‘বি’ গ্রুপে আফগানিস্তানের প্রতিপক্ষ অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন র স ম ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক অক্ষর

আইপিএলের দল দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ভারতীয় জাতীয় দলের বাঁ-হাতি স্পিন অলরাউন্ডার অক্ষর প্যাটেলকে। অক্ষর ২০১৯ সাল থেকে দিল্লিতে খেলছেন। আসন্ন আসরের জন্য তাকে সাড়ে ১৬ কোটি রুপিতে ধরে রেখেছিল দিল্লি। 

গত মৌসুমে দিল্লির অধিনায়ক ছিলেন ঋষভ পান্ত। কিন্তু এবার তিনি দিল্লি শিবিরে নেই। রেকর্ড ২৭ কোটি রুপিতে লক্ষ্নৌ সুপার জায়ান্টে গেছেন বাঁ-হাতি এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। যে কারণে তার জায়গায় অক্ষরকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

নতুন দায়িত্ব পেয়ে উচ্ছ্বসিত অক্ষর, ‘দিল্লি ক্যাপিটালসের অধিনায়ক করায় আমি আনন্দিত। ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিক ও কোচিং স্টাফ আমার ওপর আস্থা রাখায় আমি কৃতজ্ঞ। খেলোয়াড় ও মানুষ হিসেবে দিল্লিতে খেলে আমি বেড়ে উঠেছি। আমি দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত ও আত্মবিশ্বাসী।’ 

অক্ষর দুই মৌসুম দিল্লির সহ অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন। ঋষভ পান্তের নিষেধাজ্ঞায় এক ম্যাচে নেতৃত্বও দিয়েছেন তিনি। এছাড়া দেশটির ঘরোয়া ক্রিকেটে গুজরানের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন এই অলরাউন্ডার। 

দিল্লি ক্যাপিটালসের চেয়ারম্যান কিরণ কুমার গান্ধী বলেছেন, ‘আমরা অক্ষরকে অধিনায়ক বানাতে পেরে উচ্ছ্বসিত। ২০১৯ সাল থেকে তিনি দিল্লি পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সহ অধিনায়ক থেকে অধিনায়ক, তার নেতৃত্বভার পাওয়া স্বাভাবিক নেতৃত্বগুনের অংশ। দলের দরকারে সে সবসময় অগ্রগামী থেকেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ