ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ঢিলেঢালা যানজটে নাকাল শহর
Published: 11th, February 2025 GMT
পরিবর্তিত পরিস্থিতির বিরূপ প্রভাব পড়েছে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোথাও বাহিনীর সদস্যদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কের ট্রাফিক পয়েন্টে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। আইন অমান্য করে বেপরোয়া যান চলাচল ও ট্রাফিক আইন পালনে সাধারণের মাঝে উদাসীনতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনে ঢিলেঢালাভাব পরস্থিতিতে আরও জটিল করে তুলেছে।
হবিগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির নির্দেশ এবং ট্রাফিক বিধান উপেক্ষা করে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায় প্রবেশ করছে ভারী যানবাহন। যে কারণে শহরের প্রধান সড়ক
ও বাইপাস সড়কে বেড়েছে যানজটের তীব্রতা।
এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্য ও শহরবাসীর।
একাধিক সূত্র জানায়, শহরের সড়ক নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্বে ঘাটটি দৃশ্যমান। এর সুযোগ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যানবাহনের চালকরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের ম্যানেজ করে সড়কে পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও বেআইনি কর্মকাণ্ড চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দিনের অংশে এভাবেই শহরের মূল সড়কগুলোতে নির্মাণসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মাটিকাটার ট্রাক্টর।
বর্তমানে হবিগঞ্জ শহরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে এই যানজট। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। বিশেষ করে শহরের চৌধুরীবাজার বাণিজ্যিক এলাকা, বৃন্দাবন কলেজ রোড, ঘাটিয়া বাজার, অনামিকা কমিউনিটি সেন্টার ও বগলা বাজার এলাকায় এই সংকট সবচেয়ে তীব্র।
এসব পয়েন্টে যানজট তীব্র হওয়ার অন্যতম কারণ হলো দিনের বেলায় শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মালবাহী ভারী পরিবহনের বেপরোয়া চলাচল। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রধান প্রধান সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের ঢিলেঢালা কাজকর্মে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বরং উল্টো অনেক ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আর্থিক সুবিধার বিপরীতে আইন লঙ্ঘনকারীদের মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শহরবাসী রেজাউল হক জানান, শুধু আইন করলেই হবে না। তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। যানবাহনের চালকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করেন। প্রয়োগ যথাযথ না হলে পরিস্থিতি বদলাবে না। ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সবার শতভাগ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা উচিত।
রোহান আহমেদ নামে শহরের আরেক বাসিন্দা জানান, হবিগঞ্জ এখন যানজটের শহর। চালক থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারী কারও মাঝেই আইন মানার প্রবণতা নেই। স্থানীয় ইকবাল আহমেদ জানান, শহরের প্রধান সড়ক এমনিতেই সংকীর্ণ। সেখানে আবার দিনের অংশে ভারী যানবাহন ঢুকলে যানজটের তীব্রতা বাড়ে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বগলাবাজার ও চৌধুরীবাজার পয়েন্টে দিনের বেলায় মালপত্র লোড-আনলোড করা হয়। যে কারণে রাস্তা আটকে যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে চুনারুঘাট উপজেলায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা হয়। সোমবার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। ইউএনও রবিন মিয়া বলেন, ১৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট শাহজিবাজার আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন আরাফি তাজওয়ার আমিন, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম ও চুনারুঘাট ওসি নুর আলম সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সচেতন মহলের দাবি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। যে সব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ থাকার কথা, সেখানে এখন কোনো পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় রোহান আহমেদ জানান, চালক থেকে শুরু করে কারও মধ্যেই আইন মানার কোনো প্রবণতা নেই। যে কারণে দিন দিন যানজট বাড়ছে।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক জিয়া উদ্দিন খান জানান, যানজট নিরসনে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। ইতোমধ্যে শহরের চৌধুরী বাজারের পুরাতন ব্রিজ ওয়ানওয়ে করা হয়েছে। ভারী যানবাহন শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য নজট শহর র প র পর স থ ত য নজট সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ঢিলেঢালা যানজটে নাকাল শহর
পরিবর্তিত পরিস্থিতির বিরূপ প্রভাব পড়েছে ট্রাফিক পুলিশের কার্যক্রমে। এখন পর্যন্ত কোথাও কোথাও বাহিনীর সদস্যদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে আন্তরিকতার ঘাটতি দেখা যাচ্ছে।
হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন সড়কের ট্রাফিক পয়েন্টে এমনটাই দেখা যাচ্ছে। আইন অমান্য করে বেপরোয়া যান চলাচল ও ট্রাফিক আইন পালনে সাধারণের মাঝে উদাসীনতা বেড়েছে। সেই সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনে ঢিলেঢালাভাব পরস্থিতিতে আরও জটিল করে তুলেছে।
হবিগঞ্জ জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির নির্দেশ এবং ট্রাফিক বিধান উপেক্ষা করে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন এলাকায় দিনের বেলায় প্রবেশ করছে ভারী যানবাহন। যে কারণে শহরের প্রধান সড়ক
ও বাইপাস সড়কে বেড়েছে যানজটের তীব্রতা।
এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দায়িত্বরত ট্রাফিক সদস্য ও শহরবাসীর।
একাধিক সূত্র জানায়, শহরের সড়ক নিয়ন্ত্রণে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের পেশাদারিত্বে ঘাটটি দৃশ্যমান। এর সুযোগ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন যানবাহনের চালকরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি স্থানে ট্রাফিক পুলিশের সদস্যদের ম্যানেজ করে সড়কে পরিবহন খাতের নৈরাজ্য ও বেআইনি কর্মকাণ্ড চলছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দিনের অংশে এভাবেই শহরের মূল সড়কগুলোতে নির্মাণসামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যবাহী ভারী যানবাহন চলাচল করছে বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিটি পাড়া-মহল্লা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে মাটিকাটার ট্রাক্টর।
বর্তমানে হবিগঞ্জ শহরবাসীর গলার কাঁটা হয়ে উঠেছে এই যানজট। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত শহরের প্রায় প্রতিটি সড়কে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চলাচলকারীদের। বিশেষ করে শহরের চৌধুরীবাজার বাণিজ্যিক এলাকা, বৃন্দাবন কলেজ রোড, ঘাটিয়া বাজার, অনামিকা কমিউনিটি সেন্টার ও বগলা বাজার এলাকায় এই সংকট সবচেয়ে তীব্র।
এসব পয়েন্টে যানজট তীব্র হওয়ার অন্যতম কারণ হলো দিনের বেলায় শহরের প্রধান প্রধান সড়কে মালবাহী ভারী পরিবহনের বেপরোয়া চলাচল। জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত প্রধান প্রধান সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল করতে নিষেধ করা হয়েছে। তবে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের ঢিলেঢালা কাজকর্মে এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বরং উল্টো অনেক ট্রাফিক পুলিশের সদস্য আর্থিক সুবিধার বিপরীতে আইন লঙ্ঘনকারীদের মদদ দিচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
ভুক্তভোগী শহরবাসী রেজাউল হক জানান, শুধু আইন করলেই হবে না। তার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। যানবাহনের চালকরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইন ভঙ্গ করেন। প্রয়োগ যথাযথ না হলে পরিস্থিতি বদলাবে না। ট্রাফিক বিভাগে কর্মরত সবার শতভাগ পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করা উচিত।
রোহান আহমেদ নামে শহরের আরেক বাসিন্দা জানান, হবিগঞ্জ এখন যানজটের শহর। চালক থেকে শুরু করে সাধারণ পথচারী কারও মাঝেই আইন মানার প্রবণতা নেই। স্থানীয় ইকবাল আহমেদ জানান, শহরের প্রধান সড়ক এমনিতেই সংকীর্ণ। সেখানে আবার দিনের অংশে ভারী যানবাহন ঢুকলে যানজটের তীব্রতা বাড়ে। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বগলাবাজার ও চৌধুরীবাজার পয়েন্টে দিনের বেলায় মালপত্র লোড-আনলোড করা হয়। যে কারণে রাস্তা আটকে যানজট সৃষ্টি হয়।
এদিকে চুনারুঘাট উপজেলায় যানজট নিরসনের লক্ষ্যে সেনাবাহিনী ও উপজেলা প্রশাসনের মতবিনিময় সভা হয়। সোমবার উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে এ সভার আয়োজন করা হয়। ইউএনও রবিন মিয়া বলেন, ১৩ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট শাহজিবাজার আর্মি ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার ক্যাপ্টেন আরাফি তাজওয়ার আমিন, সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার আনোয়ারুল ইসলাম ও চুনারুঘাট ওসি নুর আলম সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সচেতন মহলের দাবি, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা অকার্যকর হয়ে পড়েছে। যে সব পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশ থাকার কথা, সেখানে এখন কোনো পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালন করতে দেখা যাচ্ছে না। স্থানীয় রোহান আহমেদ জানান, চালক থেকে শুরু করে কারও মধ্যেই আইন মানার কোনো প্রবণতা নেই। যে কারণে দিন দিন যানজট বাড়ছে।
ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক জিয়া উদ্দিন খান জানান, যানজট নিরসনে কাজ করছে ট্রাফিক পুলিশ। ইতোমধ্যে শহরের চৌধুরী বাজারের পুরাতন ব্রিজ ওয়ানওয়ে করা হয়েছে। ভারী যানবাহন শহরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে দাবি করেন তিনি। পরিস্থিতি বিবেচনায় এ ব্যাপারে প্রয়োজনে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেবে প্রশাসন।