জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলে আবার ধাক্কা খেলেন ট্রাম্প
Published: 11th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অভিবাসন–সংক্রান্ত কঠোর ব্যবস্থার অংশ হিসেবে জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের স্বয়ংক্রিয় অধিকার রদ করার প্রচেষ্টা আরও একবার ধাক্কা খেয়েছে। তাঁর এ–সংক্রান্ত আদেশ আরও একবার আটকে দেওয়ার কথা বলেছেন তৃতীয় আরেকজন ফেডারেল বিচারক। গত সপ্তাহে সিয়াটল ও মেরিল্যান্ডের দুজন বিচারপতির পর নিউ হ্যাম্পশায়ারের ডিস্ট্রিক্ট বিচারপতি জোসেফ এন ল্যাপলান্ট গতকাল সোমবার একই ধরনের আদেশ দেওয়া কথা বলেছেন।
গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ গ্রহণের পর অবৈধভাবে বাস করা ব্যক্তিদের সন্তানের জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের অধিকার রদ করতে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের দায়ের করা এক মামলায় দাবি করা হয়, ট্রাম্পের ওই নির্বাহী আদেশ সংবিধান লঙ্ঘন করছে এবং সংবিধানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মূল্যবোধকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের রিপাবলিকান প্রশাসন জোর দিয়ে বলেছে, যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক নন, এমন মা–বাবার সন্তানেরা যুক্তরাষ্ট্রের এখতিয়ারের অধীন নয়, তাই তারা নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী নয়। এর আগে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশকে সিয়াটলের বিচারপতি বাধা দেওয়ার পড় ট্রাম্প প্রশাসন রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করছে।
আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের মামলায় পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক জোসেফ ল্যাপলান্ট বলেন, তিনি ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশ বাস্তবায়নে বাধা দিতে প্রাথমিক নিষেধাজ্ঞা জারি করবেন।
সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে নিয়োগ পাওয়া বিচারক ল্যাপলান্ট আদালতে শুনানির সময় বলেন, তিনি তাঁর যুক্তি ব্যাখ্যা করে লিখিত সিদ্ধান্ত জানাবেন। তিনি আশা করেন, সমস্যাটি সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমেই কোনো না কোনোভাবে সমাধান হবে।
ট্রাম্পের আদেশে মার্কিন সংস্থাগুলোকে ১৯ ফেব্রুয়ারির পর মা বা বাবা কেউই মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা না হলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী শিশুদের নাগরিকত্ব স্বীকৃতি দিতে অস্বীকার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী চাকরিচ্যুত
বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর ট্রাম্প ইতিমধ্যে ২০০ জনের বেশি কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করেছেন। ট্রাম্প লাখো সরকারি কর্মচারীকে আর্থিক সুবিধার বিনিময়ে স্বেচ্ছায় পদত্যাগের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি মার্কিন সরকারে বৈচিত্র্য, ন্যায্যতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক (ডিইআই) কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন।
হোয়াইট হাউস ২০ লাখের বেশি ফেডারেল কর্মচারীদের পদত্যাগের প্রস্তাব দেয়। কেন্দ্রীয় সরকারের আকার কমানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই প্রস্তাব দেওয়া হয়। তবে একজন বিচারক সাময়িকভাবে ট্রাম্পের পরিকল্পনাটি স্থগিত করেছেন। ট্রাম্প তাঁর প্রস্তাবে ফেডারেল কর্মীদের ৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে চাকরি ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে আট মাসের বেতনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
হোয়াইট হাউসের দাবি, ইতিমধ্যে ৪০ হাজারের বেশি সরকারি কর্মচারী প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন পরিবহন সেবা চালুর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
কুমিল্লা নগরীর জাঙ্গালিয়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে কুমিল্লা-চাঁদপুর-কুমিল্লা সড়কে ‘আইদি এন্টারপ্রাইজ’ নামে একটি পরিবহন সেবা চালু করা হয়েছে। কিন্তু উদ্বোধনের পরপরই তা বন্ধের দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন অন্যান্য পরিবহনের শ্রমিকরা। এতে প্রায় এক ঘণ্টা বাস চলাচল বন্ধ থাকে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে আইদি এন্টারপ্রাইজের পরিবহন সেবা উদ্বোধন করা হয়। এতে আমন্ত্রিত অতিথি ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা জেলা শাখার আহ্বায়ক মুহাম্মাদ সাকিব হুসাইন, কুমিল্লা মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব মুহাম্মদ রাশেদুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা জেলা শাখার সদস্য সচিব জিয়া উদ্দিন মুহাম্মদ রুবেল, আইদি এন্টারপ্রাইজের উপদেষ্টা তাজুল ইসলাম সুমন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, উদ্বোধন শেষে কুমিল্লা থেকে চাঁদপুরগামী আইদি এন্টারপ্রাইজের বাস ছেড়ে যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় অবরোধ করেন উত্তেজিত পরিবহন শ্রমিকরা। এলোপাতাড়ি বাস রেখে তারা কুমিল্লা-চাঁদপুর সড়ক বন্ধ করে দেন। এ সময় উভয় পক্ষের বাগ্বিতণ্ডার এক পর্যায়ে পরিবহন শ্রমিকদের হামলায় মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা ফারুক নাহিয়ানসহ বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় প্রায় এক ঘণ্টা সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সদর দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, নতুন একটি পরিবহন সেবা উদ্বোধনের পর অন্যান্য পরিবহনের শ্রমিকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। এতে সাময়িক যান চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
আইদি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মীর পারভেজ আলমের ভাষ্য, সব নীতিমালা মেনে রুটপারমিটের জন্য আবেদন করা হলেও বাহার (সাবেক এমপি বাহার) সিন্ডিকিটের বিরোধিতার কারণে তারা এতদিন সেবা চালু করতে পারেননি। এতে কয়ক কোটি টাকা লোকসান হয়েছে।
কুমিল্লা জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের সভাপতি অধ্যক্ষ কবির আহম্মেদ সমকালকে জানান, রুটপারমিট দেয় জেলা প্রশাসন। এতদিন আইদি বাস সার্ভিস কেন অনুমোদন পায়নি তা জেলা প্রশাসন ভালো বলতে পারবে। তিনি কুমিল্লার বাইরে থাকায় বাসস্টেশনে কী ঘটেছে, তা জানা নেই তাঁর।