এবার জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডারের কর্মকর্তারা। কমিশনের প্রতিবেদনে বিভিন্ন ক্যাডার সার্ভিস পুনর্গঠনের প্রস্তাব করলেও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে এর বাইরে রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় পরিসংখ্যান ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন। এতে বলা হয় সার্ভিস পুনর্বিন্যাসে পরিসংখ্যান ক্যাডার ‘প্রযোজ্য নয়’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ প্রশাসনসহ অন্য ক্যাডারে সার্ভিসের নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, কমিশন তাঁদের প্রস্তাবে বিসিএস প্রশাসন, খাদ্য ও সমবায় ক্যাডার মিলে বাংলাদেশ প্রশাসনিক সার্ভিস নাম রাখার প্রস্তাব করেছে। পররাষ্ট্র, পুলিশসহ অন্য ক্যাডারদের ক্ষেত্রেও আলাদা সার্ভিস নামের প্রস্তাব করা হয়েছে। কিন্তু পরিসংখ্যান ক্যাডারের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত কোনো সার্ভিসের কথা বলা হয়নি।

পরিসংখ্যান অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, এই ক্যাডার নিয়ে সংস্কার কমিশনের মনোযোগের অভাব ছিল। এই ক্যাডারের গুরুত্ব আমলে নেওয়া হয়নি। বরং অবজ্ঞা করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের বিভিন্ন প্রস্তাবকে জনবিরোধী উল্লেখ করে তা প্রত্যাখ্যান করেছিল আন্তক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ।

বিসিএস প্রশাসন ছাড়া ২৫টি ক্যাডার নিয়ে গঠিত পরিষদের নেতারা বলেছেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন উপসচিব পদে পদোন্নতিতে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০ ভাগ ও বাকি ২৫ ক্যাডারের জন্য ৫০ ভাগ কোটা দিয়ে হাস্যকর ও অযৌক্তিক প্রস্তাব করেছে। এমন কোটা মানা হবে না ঘোষণা দিয়ে কমিশনের এই প্রস্তাব সংশোধন করে শতভাগ পদোন্নতি সব ক্যাডারের জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানায় পরিষদ।

জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন কেন দায়সারা ও অদূরদর্শী, তার যুক্তি তুলে ধরে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রতিবেদনের ৬ষ্ঠ অধ্যায়ের ১৩ নম্বর পৃষ্ঠায় পরিসংখ্যান ব্যুরোকে (বিবিএস) বাংলাদেশ পরিসংখ্যান কমিশনে উন্নীত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে কমিশন স্বাধীনভাবে জনবল নিয়োগ করতে পারবে বলা হয়।অন্যদিকে ১৮২-১৮৩ পৃষ্ঠায় পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ‘পরিসংখ্যান বিভাগ’কে বহাল রেখে প্রস্তাবিত পরিসংখ্যান কমিশন গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিসংখ্যান বিভাগকে বহাল রেখে পরিসংখ্যান কমিশন করা মানে হচ্ছে, আমলাতন্ত্রের ছড়ি ঘোরানো। পরিসংখ্যান কমিশনে ক্যাডারের বাইরে থেকে বেসরকারি পর্যায় থেকে ঢালাও নিয়োগ হবে বলে আশঙ্কা তাঁদের।

কমিশনের সুপারিশের প্রতিবাদ জানিয়ে আজ পরিসংখ্যান ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সংস্কার প্রস্তাবে ১৯৮০ সালে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ পেশাভিত্তিক এ ক্যাডার সার্ভিসকে ‘অস্তিত্বহীন’ করার মতো অদূরদর্শী সুপারিশ কর্মকর্তাদের বিস্মিত ও ব্যথিত করেছে। সব বৈষম্য নিরসন ও গতিশীল জনবান্ধব জনপ্রশাসন তৈরির লক্ষ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার সঙ্গে এ সুপারিশ পুরোপুরি সাংঘর্ষিক।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন এ সুপারিশ করার আগে পরিসংখ্যান ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তার মতামত নেওয়ার প্রয়োজন অনুভব করেনি। এমনকি বিসিএস (পরিসংখ্যান) ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্বপ্রণোদিত হয়ে লিখিত কয়েকটি সংস্কার প্রস্তাব কমিশনে পাঠালেও তা আমলে নেওয়া হয়নি। বরং একতরফাভাবে এ ক্যাডারকে অস্তিত্বহীন করার মতো সুপারিশ করে দায়সারা প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর স খ য ন ক য ড র ব স এস

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে যুবক অপহরণ, দশ লাখ মুক্তিপণ দাবি  

কক্সবাজারের টেকনাফের পাহাড় থেকে মোহাম্মদ দেলোয়ার (২৫) নামে এক যুবককে অপহরণ করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠী। এ ঘটনায় অপহরণকারী দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করছে। 

জানা যায়, মোহাম্মদ দেলোয়ার মারিশবনিয়া এলাকার মৃত আব্দুল করিম মিস্ত্রীর ছেলে।

সোমবার দুপুরে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন টেকনাফের বাহারছড়ার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ উল্লাহ। 

তিনি বলেন, সকালে এলাকার তিনজন মিলে পাহাড়ে ছন আনতে যায়। ওই সময় সশস্ত্র গোষ্ঠী ধাওয়া করে একজনকে ধরে নিয়ে যায়। অপর দুজন কোন রকম পালিয়ে এসেছে। এরপর দুপুরে অপহরণকারীরা অপহৃত পরিবারের কাছে ফোনে দশ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। 

এ বিষয়ে বাহারছড়া তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ (পরিদর্শক) শুভ রঞ্জন সাহা বলেন, এক যুবক অপহরণের বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় পুলিশ কাজ করছে। তবে মুক্তিপণের বিষয়টি আমরা অবগত নই।

এদিকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগী ব্যক্তিদের তথ্য বলছে, এ নিয়ে গত ১৫ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৫০ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এদের মধ্য বেশির ভাগই মুক্তিপণ দিয়ে ফিরেছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ