বাংলাদেশের আকাশপথে যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে এবং টিকিটের অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি রোধে একগুচ্ছ নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। সাধারণ যাত্রীদের সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট প্রাপ্তি নিশ্চিত করা এবং বিমান পরিবহনব্যবস্থাকে আরো স্বচ্ছ ও জনবান্ধব করার লক্ষ্যে সরকারের এই পদক্ষেপ। 

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় এই নির্দেশনা জারি করে।

নির্দেশনাগুলোর মধ্যে রয়েছে—গুরুত্বপূর্ণ রুটে বিমানের ফ্লাইটসংখ্যা বাড়ানো, টিকিটের মূল্য নির্ধারণে স্বচ্ছতার নির্দেশনা, অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক রুটে টিকিট মূল্য ব্যবস্থাপনা সহজতর করা এবং স্পেশাল এয়ারফেয়ার চালুর উদ্যোগ।

এ ছাড়া টিকিট কালোবাজারি রোধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার এবং এজেন্সিগুলোর অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের ক্ষমতা সীমিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এসব পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিটের মূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখা সম্ভব হবে এবং যাত্রীসেবার মান উন্নত হবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

ফ্লাইটের টিকিটের দাম কমাতে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা

* অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধির লাগাম টানতে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। এ জন্য অনলাইনে বা সরাসরি কেনা টিকিটের দামের মধ্যে অস্বাভাবিক পার্থক্য থাকলে সংশ্লিষ্ট এয়ারলাইনসকে কারণ ব্যাখ্যা করতে বলেছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ রুটে টিকিটের দাম নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

* যাত্রীচাহিদার ভিত্তিতে অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক—উভয় রুটেই ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হবে। গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যগুলোর জন্য বিশেষ পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

* অনলাইন ও ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট বিক্রির ক্ষেত্রে দামের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। যাত্রীদের প্রতারণা থেকে রক্ষায় অননুমোদিত এজেন্টদের মাধ্যমে অতিরিক্ত দাম নেওয়া বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

* বিদেশগামী শ্রমিক ও শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ভাড়ার (স্পেশাল এয়ারফেয়ার) সুবিধা চালু করতে বলা হয়েছে।

* কালোবাজারি প্রতিরোধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সরকার। দায়ীদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ট্রাভেল এজেন্সি (নিবন্ধন ও নিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৩ অনুসারে অননুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে টিকিট বিক্রয় নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সরকারের প্রত্যাশা—এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর হলে বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও সাধারণ যাত্রীদের জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট প্রাপ্তি সহজতর হবে। আর ফ্লাইটসংখ্যা বৃদ্ধির মাধ্যমে অতিরিক্ত চাপ কমানো যাবে এবং আকাশপথের যাত্রীসেবা উন্নত হবে।

ঢাকা/হাসান/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদক ষ প সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঘর ঠান্ডায় ইনডোর প্লান্ট

গরমকালে আমাদের ঘর যেন একেকটা ওভেনে পরিণত হয়। ফ্যান চালিয়ে উপকার মেলে না। এসি বা কুলারের ওপর নির্ভর করতে হয় দিনের বেশির ভাগ সময়। ভাবুন তো, যদি এমন কিছু প্রাকৃতিক উপায় থাকে, যা ঘরকে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে– তাও কোনো বিদ্যুৎ বা মেশিন ছাড়াই? 
হ্যাঁ, প্রকৃতির কাছে আছে এমন কিছু দারুণ সমাধান। কিছু ইনডোর প্লান্ট আছে, যেগুলো শুধু ঘরের শোভা বাড়ায় না, বরং তাপমাত্রা কমিয়ে আনতে সাহায্য করে, বাতাস পরিষ্কার করে আর আপনার মন-মেজাজও ঠান্ডা রাখে। 
কেন ইনডোর প্লান্ট ঘর ঠান্ডা রাখে? 
গাছ বা পাতার মাধ্যমে পানি ছাড়ে, যাকে বলে বাষ্পমোচন (ট্রান্সপিরেশন)। এই জলীয় বাষ্প বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে এবং ঘরের গরম তাপ শোষণ করে। ফলে ঘর একটু ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। বড় পাতার গাছগুলো আবার সূর্যের আলো আটকে দেয়। ফলে সরাসরি রোদ ঘরে ঢুকে গরম করতে পারে না। শুধু তাই নয়, কয়েকটা গাছ একসঙ্গে রাখলে ঘরের আর্দ্রতা ও তাপমাত্রার একটা প্রাকৃতিক ভারসাম্য তৈরি করে। 
কোন গাছগুলো ইনডোরে লাগানো সবচেয়ে ভালো?
ঘর ঠান্ডা রাখতে পারে এমন অনেক ইনডোর গাছ আছে। আজ আমরা এমন কিছু গাছ নিয়ে বলব, যেগুলো বাংলাদেশে সহজে পাওয়া যায় এবং সহজে ঘরে রাখা যায়।  
স্নেক প্লান্ট 
অল্প আলো আর কম পানিতে দিব্যি বেঁচে থাকতে পারে এ গাছ। যারা ব্যস্ত জীবনে নিয়মিত গাছের খেয়াল রাখতে পারেন না, তাদের জন্য আদর্শ। বিশেষ করে রাতেও অক্সিজেন ছাড়ে বলে শোবার ঘরে রাখার জন্য দারুণ। এ ছাড়া বাতাসের ক্ষতিকর উপাদান যেমন ফরমালডিহাইড শোষণ করে। 
পিস লিলি
নরম পাতার এ গাছটি ঘরে ঠান্ডা ভাব আনে বাষ্পমোচনের মাধ্যমে। এর সাদা ফুল ঘরে এনে দেয় প্রশান্তি ও সৌন্দর্যের ছোঁয়া। বাতাস পরিষ্কারে কার্যকর এবং ঘরের ভেতরের বাতাসকে আর্দ্র রাখে, যা গরমে খুব উপকারী। 
আরবিকা পাম
সবুজ পাতায় ঘেরা এ গাছ শুধু চোখে শান্তি দেয় না, বাতাসে আর্দ্রতাও বাড়ায়। হালকা বাতাসে পাতাগুলো দুলে যেন প্রকৃতির স্পর্শ এনে দেয়। এটি বিভিন্ন টক্সিন শোষণ করে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখে এবং সহজে মানিয়ে যায় ঘরের কোনায় বা জানালার পাশে। 
স্পাইডার প্লান্ট 
এই গাছ দ্রুত বড় হয়, তাপ শোষণ করে ঘরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। একে মা গাছ বলা হয়। কারণ, এর শরীর থেকে ছোট ছোট চারা জন্ম নেয়, যেগুলো আবার নতুন করে লাগানো যায়। খুব বেশি যত্ন ছাড়া বেড়ে ওঠে এবং ঘরের বাতাসে থাকা কার্বন মনোঅক্সাইড ও ফরমালডিহাইড দূর করে। 
অ্যালোভেরা 
ঔষধি গাছ হিসেবে বেশি পরিচিত হলেও, অ্যালোভেরা ইনডোর ঠান্ডা রাখতে দারুণ কাজে দেয়। পাতার ভেতরের জেল আমাদের ত্বকের যত্নে যেমন ব্যবহার হয়, তেমনি পাতাগুলো গরম তাপ শুষে ঘরের পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।  
রাবার প্লান্ট 
বড় আকারের মোটা পাতায় সূর্যের আলো আটকে দিতে পারে এ গাছ। তাই রোদ থেকে আসা অতিরিক্ত উত্তাপ কিছুটা কমে যায়। পাশাপাশি ঘরের ভেতর দারুণ এক সবুজ পরিবেশ তৈরি করে। কম আলো ও মাঝারি পানির চাহিদা থাকায় এর যত্ন নেওয়া সহজ। 
জেড প্লান্ট 
ছোট আকৃতির এ গাছটি টেবিল বা জানালার ধারে রাখলে জায়গা কম লাগে অথচ সৌন্দর্য বাড়ে অনেকগুণ। খুব কম পানি লাগে এবং পরিবেশে হালকা ঠান্ডা ভাব ধরে রাখতে সাহায্য করে।  
ইনডোর গাছের যত্নের কিছু সহজ টিপস 
আলো বুঝে গাছ রাখুন: যেসব গাছ রোদ পছন্দ করে (যেমন অ্যালোভেরা, আরবিকা পাম) সেগুলো দক্ষিণ দিকে রাখুন। কম আলো সহ্য করতে পারে এমন গাছ (যেমন স্নেক প্লান্ট, স্পাইডার প্লান্ট) উত্তরমুখী স্থানে রাখাই ভালো। 
পানি দিন বুঝেশুনে: সব গাছে প্রতিদিন পানি দেওয়ার দরকার নেই। মাটি শুকিয়ে গেলে পানি দিন। অতিরিক্ত পানি দিলে গাছের শিকড় পচে যেতে পারে। 
মাটি ও সার: জৈব সার ব্যবহার করলে গাছ ভালো বেড়ে ওঠে। বছরে ২-৩ বার সার দিতে পারেন। 
পাতা পরিষ্কার রাখুন: পাতায় ধুলো জমে গেলে গাছ ঠিকভাবে শ্বাস নিতে পারে না। তাই মাঝে মধ্যে নরম কাপড় দিয়ে পাতাগুলো মুছে দিন। v

সম্পর্কিত নিবন্ধ