শেয়ারবাজারে ১০ লাখ টাকার কম বিনিয়োগ রয়েছে, এমন কোনো বিনিয়োগকারীকে শেয়ারের বিপরীতে ঋণসুবিধা না দেওয়ার সুপারিশ করেছে পুঁজিবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্কফোর্স। একই সঙ্গে যেসব বিনিয়োগকারীর নিয়মিত আয়ের কোনো উৎস নেই, তাঁদের জন্যও ঋণসুবিধা বন্ধের সুপারিশ করা হয়েছে। এ ছাড়া অবসরে থাকা বিনিয়োগকারী, গৃহিণী ও শিক্ষার্থীদেরও ঋণসুবিধার বাইরে রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।

শেয়ারবাজারের প্রান্তিক ঋণ বা মার্জিন ঋণসুবিধা বিষয়ক আইনি সংস্কারের সুপারিশসহ প্রাথমিক প্রতিবেদন আজ মঙ্গলবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) জমা দিয়েছেন টাস্কফোর্সের সদস্যরা। সেই প্রতিবেদনে শেয়ারের বিপরীতে দেওয়া ঋণসুবিধা–সংক্রান্ত আইনি বিধিবিধান পরিবর্তন ও ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু শর্ত ও সীমা আরোপের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। ব্রোকারেজ হাউসের পাশাপাশি মার্চেন্ট ব্যাংককেও আইন সংশোধনের মাধ্যমে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে।

পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইনকানুন সংশোধনসহ বিভিন্ন বিষয়ে সুপারিশের জন্য গত ৭ অক্টোবর ৫ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে বিএসইসি। তবে এ–সংক্রান্ত সরকারি চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত ১০ জানুয়ারি। টাস্কফোর্সের সদস্যরা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক কে এ এম মাজেদুর রহমান, নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান হুদা ভাসি চৌধুরী অ্যান্ড কোংয়ের অংশীদার এ এফ নেসারউদ্দীন, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অধ্যাপক মোস্তফা আকবর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিং ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগের শিক্ষক আল–আমিন।

বিএসইসির এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয় মার্জিন ঋণ ও মিউচুয়াল ফান্ড নিয়ে টাস্কফোর্স তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে। বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের হাতে টাস্কফোর্সের সুপারিশসংক্রান্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। এ সময় বিএসইসির অন্যান্য কমিশনার ও টাস্কফোর্স সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

টাস্কফোর্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেয়ারবাজারে সেসব বিনিয়োগকারীই ঋণসুবিধা পাবেন, যাঁদের ন্যূনতম ১০ লাখ টাকা বা তার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে। শুধু ১০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ থাকলেই হবে না, সেকেন্ডারি বাজারে বিনিয়োগের ৬ মাসের অভিজ্ঞতা না থাকলে সেসব বিনিয়োগকারীকেও ঋণসুবিধা না দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। শর্ত পূরণের পর শেয়ারের বিপরীতে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে ঋণগ্রহীতার সক্ষমতা যাচাইয়ের বিধান করারও প্রস্তাব করা হয়েছে।

মার্জিন ঋণসংক্রান্ত টাস্কফোর্সের সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, শেয়ারের বিপরীতে বিনিয়োগকারীদের দেওয়া ঋণের মেয়াদ হবে ছয় মাস থেকে এক বছর। মেয়াদ শেষে তা আবার নবায়ন করা যাবে। কোম্পানির উদ্যোক্তা–পরিচালক, প্লেসমেন্টধারী ও বিক্রয় নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা শেয়ার, গুজবনির্ভর এবং জামানত রাখা শেয়ারকে ঋণসুবিধার বাইরে রাখতে হবে।

কোন ধরনের শেয়ারে বিনিয়োগকারীরা ঋণসুবিধা পাবেন, তার একটি তালিকা প্রতিদিন স্টক এক্সচেঞ্জের পক্ষ থেকে প্রকাশ করার সুপারিশ করা হয়েছে টাস্কফোর্সের পক্ষ থেকে। শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ‘এ’ শ্রেণির কোম্পানি, যাদের মূল্য–আয় অনুপাত (পিই রেশিও) ৩০–এর বেশি হবে না, সেসব শেয়ারকে ঋণযোগ্য শেয়ার হিসেবে বিবেচনার কথা বলা হয়েছে সুপারিশে। এ ক্ষেত্রে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পিই রেশিও হতে হবে ২০।

টাস্কফোর্সের সুপারিশে আরও বলা হয়েছে, ঋণদাতা কোনো প্রতিষ্ঠান তার বিতরণ করা ঋণের ২৫ শতাংশের বেশি একক কোনো শেয়ারে ঋণ হিসেবে বিতরণ করতে পারবে না। ঋণদাতা প্রতিষ্ঠানের ঋণগ্রহীতা সব বিনিয়োগকারীকে বিবেচনায় নিয়ে এই বিনিয়োগ সীমা পরিপালন করতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ য় র র ব পর ত র স প র শ কর ১০ ল খ ট ক ব এসইস সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিএসইসি চেয়ারম্যান-কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান সাক্ষাৎ

বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন চেয়ারম্যানের সাথে কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যানসহ শ্রীলঙ্কান বিনিয়োগকারীদের একটি দল সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন।

মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিএসইসি ভবনে বিএসইসি চেয়ারম্যানের দপ্তরে অনুষ্ঠিত উক্ত সৌজন্য সাক্ষাৎ-এ কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান দিলশান ইউরাসেকারা, শ্রীলঙ্কার ফার্স্ট ক্যাপিটাল হোল্ডিংস পিএলসির চিফ অপারেটিং অফিসার থারুশা একানায়াকে ও চিফ রিসার্চ অ্যান্ড স্ট্রাটেজি অফিসার দিমান্থা ম্যাথিউ অংশ নেন।

এ সময় বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ ও বিএসইসির কমিশনার ফারজানা লালারুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

ফার্স্ট ফাইন্যান্সের সিইও হলেন আব্দুল বারী

কী বার্তা দেবেন বিএসইসি চেয়ারম্যান, অপেক্ষায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

সাক্ষাতের সময় শ্রীলঙ্কান বিনিয়োগকারীদের দলটি বাংলাদেশে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগ এবং দেশের পুঁজিবাজারের অপারেশনাল ক্ষেত্রগুলোতে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এ সময় পুঁজিবাজারের বিভিন্ন দিক এবং ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হয়।

ঢাকা/এনটি/এনএফ/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিএসইসি চেয়ারম্যান-কলম্বো স্টক এক্সচেঞ্জ চেয়ারম্যান সাক্ষাৎ