বোকা পেয়ে ধোঁকা দিয়েছে: চরমোনাই পীর
Published: 11th, February 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, “আমরা গত ৫৩ বছর সংসদে যেতে পারি নাই, কারণ স্বার্থান্বেষী মহল আমাদের বোকা পেয়ে ধোঁকা দিয়েছে। ওরা ক্ষমতায় বসলে ইসলাম আর ইসলামি দলের কথা ওদের মনে থাকে না। আমাদেরকে ব্যবহার করে ইসলামকে আর যেন ধ্বংস করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। আমরা চাই বাংলার জমিনে ইসলাম বীর দর্পে বৃক্ষ রোপণের চেয়েও শক্তিশালী হোক।”
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকালে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “অনেকে ভয় দেখায়, ইসলাম ক্ষমতায় আসলে যদি কেউ চুরি করে তাহলে তার হাত কর্তন করে দেওয়া হয়। যদি এমনই হতো তাহলে বাংলাদেশের নেতাদের হাত থাকবেই না। আসলে বাস্তবতা হলো ইসলাম সকল মানুষদের হাত কর্তনের নির্দেশ দেয় নাই। বাংলাদেশের মধ্যে যে এমপি-মন্ত্রীরা স্বভাবী চোর। এদের মধ্যে যদি একটির হাত কর্তন করা হয়, তাহলে পুরো বাংলাদেশ চোরমুক্ত হবে।”
রেজাউল করিম আরো বলেন, “আল্লাহ আজকে আমাদেরকে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার মতো তৌফিক দান করেছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে ছোট মনে করলে হবে না। যখন দেশে কোন ষড়যন্ত্র হয় তখন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তার প্রতিবাদী হয়ে রাজপথে আওয়াজ তোলে তখন বদমাইশদের কলিজা থরথর করে কাঁপন ধরে।”
চরমোনাই পীর আরো বলেন, “আমি আমার ভাইদের বলবো, ইসলামের বাইরে থাকার কোন সুযোগ নেই। মুসলমান থাকবে ইসলামের সঙ্গে। আর অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা থাকবে শান্তির লক্ষ্যে। আপনারা দেখে থাকবেন ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাঠে যুব কনভেনশনে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব তার বক্তব্যে বলেছেন, কথা কাজে ঠিক পাই, পীর সাহেব চরমোনাই।”
ছাত্র-জনতা আন্দোলনের স্মৃতি চারণ করে তিনি বলেন, “আজকে ন্যায্য দাবী আদায়ের জন্য রাজপথে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে পাখির মতো রাজপথে লুটিয়ে দেয়া হয়েছে আমরা বসে বসে দেখবো এটি হতেই পারে না।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চরম ন ই ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ঘরোয়া রান্নার স্মৃতিময় বই ‘খাদ্যবিলাস’
নাম বললেই চেনা যাবে, আনোয়ারা তরফদার এমন কোনো বিখ্যাত রন্ধনশিল্পী নন। তাঁর রান্না একান্তই ঘরোয়া, তবে তাঁর সৃজনশীলতা ভিন্নতর। সেসব রান্নার রেসিপি নিয়েই প্রকাশিত তাঁর রান্নার বই ‘খাদ্যবিলাস’–এর মোড়ক উন্মোচন হলো আজ বুধবার সন্ধ্যায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।
একসময়ের জনপ্রিয় সাময়িকী সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’য় প্রায় ৩০ বছর আগে আনোয়ারা তরফদারের রান্নার রেসিপিগুলো প্রকাশিত হয়েছিল। পরে সেই লেখাগুলো নিয়ে বইও প্রকাশিত হয়। অনেক দিন থেকেই বইটি বাজারে ছিল না। আনোয়ারা তরফদারের মেয়ে কবি শামীম আজাদ বইটি নতুন করে সম্পাদনা ও পরিবর্ধন করেছেন। প্রকাশ করেছে পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ষাটের দশকে মধ্যবিত্ত পরিবারের রান্নার বিলাস বাহুল্য ছিল না বটে, কিন্তু তার মধ্যেও বিশেষ বিশেষ দিনে প্রিয়জনদের সামনে ভালোমন্দ রান্না তুলে ধরতে চাইতেন সব গৃহিণী। সীমিত বাজেটে কীভাবে হৃদয়, বুদ্ধি, মমতা এবং ভালোবাসায় সাধারণ রান্নাকে অসাধারণ সুস্বাদু করে আপনজনের রসনা তৃপ্ত করা যায়, সে ব্যাপারটি আনোয়ারা তরফদারের ‘খাদ্যবিলাস’ বইটিতে রয়েছে।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘আমরা এখন বাণিজ্যের পৃথিবীতে বসবাস করছি। একটা সময় প্রকৃতি ও সভ্যতা জড়াজড়ি করে থাকত। এখন চলছে প্রকৃতি বিনাশী কর্মকাণ্ড। এই রান্নাগুলো কেবল খাদ্য প্রস্তুত করা নয়, এর সঙ্গে সেই সময়ের যৌথ জীবন, সংস্কৃতি, প্রকৃতি সংলগ্নতা আর মায়া–মমতার বিষয়ও মিলে মিশে আছে। এই রান্না একান্তই বাঙালির ঘরোয়া রান্না। ঘরে ঘরে বাঙালির রান্না যেন টিকে থাকে, সেই কামনা করি।’
অর্থনীতিবিদ সেলিম জাহানের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশ নেন শাহীন আনাম, আফজাল হোসেন, আব্দুন নূর তুষার, আলপনা হাবিব ও প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের পক্ষে মজুমদার বিপ্লব। মায়ের স্মৃতিচারণা করেন ছেলে ফজলে আকবর তফরদার ও বইটির সম্পাদক কবি শামীম আজাদ। ধন্যবাদ জানান নাতি লাবিব তালুকদার।
‘খাদ্যবিলাস’ বইটি নিয়ে আলোচকেরা বলেছেন, এই রান্নার মধ্যে জড়িয়ে আছে স্মৃতি। একটি সময়কে ধরে রাখা আছে। এগুলো আসলে মায়ের হাতের রান্না। আর মায়ের হাতের রান্না শুধু খাদ্য নয়, অমৃতের মতো।
আনোয়ারা তরফদারের জন্ম গত শতকের ত্রিশের দশকে বৃহত্তর সিলেটে। স্বামী ছিলেন পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা। স্বামীর চাকরিসূত্রে অবিভক্ত ভারতের আসাম ও পরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে থেকেছেন। স্বামীর সীমিত আয়ে তিনি নিপুণভাবে সংসার পরিচালনা করেছেন। বাঙালির চিরায়ত রান্নায় তাঁর ছিল বিশেষ পারদর্শিতা। এ ছাড়া সূচিকর্ম, মৃৎপাত্রে অঙ্কনসহ বিভিন্ন কারুকর্মেও তাঁর বিশেষ সৃজনশীলতা ছিল। একটা সময় তিনি ঢাকায় গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রে মেয়েদের পুঁতির গয়না তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়েছেন।