সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচার দাবিতে আগামীকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দেবে ঢাকা ভিত্তিক রিপোর্টারদের সংগঠন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ)।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ডিআরইউয়ের সামনে সাগর-রুনি হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশ থেকে এ ঘোষণা দেন সংগঠনটির সভাপতি সভাপতি আবু সালেহ আকন।

তিনি বলেন, এখানে আমরা যারা আছি সবাই সাগর-রুনি হত্যার বিচার চাই। আগামী নতুন কমিটিতে যারা আসবেন তারাও আশা করি এই হত্যার বিচার চাইবেন। যারা আমাদের আন্দোলন সংগ্রামকে ভিন্ন খাতে প্রভাবিত করতে চেয়েছেন, পকেটে টাকা ভরেছেন, সরকারের টাকায় বিদেশে গেছেন, আলিশানভাবে থেকেছেন, ইনশাল্লাহ তাদেরও বিচার হবে।

আবু সালেহ আকন বলেন, আজকের সমাবেশ থেকে সংগ্রাম পরিষদ গঠনের কথা এসেছে। আমরা জেনেছি আগামী ২ মার্চ এই হত্যার প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। আমরা ২ মার্চ পর্যন্ত দেখব। যদি ২ মার্চ এই হত্যার প্রতিবেদন দাখিল করা না হয়, তাহলে আমরা সংগ্রাম কমিটি গঠন করে রাস্তায় নামব এবং জোরালোভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ব। এছাড়া এই হত্যার বিচার দাবিতে আগামীকাল বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

ডিআরইউ সভাপতি বলেন, গত ১৩ বছরেও এই হত্যার বিচার হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার যে ফ্যাসিস্ট ছিল তার প্রমাণ হচ্ছে, এই হত্যার বিচারকে তারা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করেছে। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে প্রভাবশালীরা জড়িত ছিল। তার প্রমাণ হচ্ছে, আমরা এখনো খুনিদের নাম জানতে পারি নাই। সেই সময় শেষ হয়েছে, এখন আওয়ামী লীগ নেই। এখন বিপ্লবী সরকার ক্ষমতায়। আমরা তাদের কাছে আশা করছি, এই হত্যার বিচার পাব। যদি না পাই আপনারা মনে রাখবেন, কেয়ামত পর্যন্ত এই হত্যার বিচার দাবি করে যাব আমরা।

সমাবেশে এর আগে সিনিয়র সাংবাদিকরা দাবি জানিয়ে বলেন, আমরা যারা মাঠের সাংবাদিক হিসেবে তখন সাগর-রুনির বাসায় গিয়েছি, তারা কেউ হত্যার বিচারের দাবি থেকে সরে দাঁড়াব না। আমরা আগামী বছরের এই দিনে বিচারের দাবি আর করতে চাই না। অতি দ্রুত আমাদের এই দাবি বাস্তবায়ন করুন। আমরা আরও দাবি করছি, সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের দিনটি সাংবাদিক সুরক্ষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক।

প্রতিবাদ সমাবেশ বক্তব্য রাখেন ডিআরইউয়ের সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য কুদরত-ই-খুদা, রাশেদ আহমেদ, স্থায়ী সদস্য গাজী আনোয়ার, ডিইউজে প্রচার সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক বাবুল তালুকদার প্রমুখ।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোররাতে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের বাসায় নৃশংসভাবে খুন হন এ সাংবাদিক দম্পতি। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের পর ১৩ বছর পেরিয়ে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। কবে নাগাদ মামলার তদন্ত শেষ হবে বলতে পারছেন না তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। থানাপুলিশ-ডিবি-র‍্যাবের হাত ঘুরে বর্তমানে মামলার তদন্তভার পেয়েছে পিবিআই। সবমিলিয়ে চার বার বদল হয়েছে তদন্ত সংস্থা। কিন্তু দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি।

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স বর ষ ট র তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর-রুনি হত্যার বিচার হতেই হবে, না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি

আওয়ামী লীগ সরকার যে ফ্যাসিস্ট ছিল, তার বড় প্রমাণ সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচার না করা। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হতেই হবে। বিচার না করলে কেউ পার পাবেন না। মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরবর্তী তারিখে (২ মার্চ) প্রতিবেদন জমা না হলে রাজপথে আন্দোলনে নামা হবে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সামনে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিচারের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করে ডিআরইউ।

২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ভোরে রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া ফ্ল্যাট থেকে মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর সরওয়ার ও এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক মেহেরুন রুনির ক্ষতবিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ সেই খুনের ১৩ বছর পূর্ণ হলো।

সমাবেশে ডিআরইউর সভাপতি আবু সালেহ আকন বলেন, আওয়ামী লীগ যে ফ্যাসিস্ট দল ছিল, তার প্রমাণ সাগর-রুনি হত্যার বিচার না করা এবং কারা এই হত্যাকাণ্ডে জড়িত, তাদের নাম প্রকাশ না করা। পাশাপাশি তদন্তকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করা। এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জড়িত থাকায় নাম প্রকাশ করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরবর্তী তারিখ ২ মার্চ। আবু সালেহ আকন বলেন, ওই তারিখেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া না হলে তাঁরা একটি সংগ্রাম পরিষদ গঠন করবেন। ওই কমিটির মাধ্যমে আবারও তাঁরা রাজপথে আন্দোলনে নামবেন। সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আগামীকাল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নেওয়ার পরও সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কেন সময়ক্ষেপণ করা হচ্ছে, এ প্রশ্ন তোলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান। তিনি বলেন, ২ মার্চের পরও সময়ক্ষেপণ করা হলে তাঁরা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচি দেবেন।

ডিআরইউর সাবেক সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা বলেন, সাগর-রুনিকে যে বাড়িতে হত্যা করা হয়েছিল, ওই বাড়িটি সিসিটিভির আওতায় ছিল। কারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, এটা পুলিশের জানার কথা। তিনি আরও বলেন, কারও বেডরুমে নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের নয়—সংসদে দাঁড়িয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্য দেওয়ার পর বোঝা গেছে এই হত্যাকাণ্ডের বিচার পাওয়া যাবে না। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে এই হত্যার বিচার হবে, এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যার ১৩ বছর: ৬ বছর মামলার কার্যত কোনো তদন্ত হয়নি ১০ ঘণ্টা আগে

সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে গত ছয় মাসে আশাবাদী হওয়ার মতো কিছু ঘটেছে কি না, এমন প্রশ্ন রেখে সাংবাদিক নেতা ইলিয়াস হোসেন বলেন, তদন্তের দায়িত্ব যাদের হাতে ছিল, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা উচিত।

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়ে বলেন, অন্তত অভিযোগপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বিচার না করার পেছনে যারা দায়ী, তাদেরও বিচারের আওতায় আনা উচিত বলে মত দেন তিনি।

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেলের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা মানোয়ারুল ইসলাম, রাজু আহমেদ, সালেহ বিপ্লব, গাজী আনোয়ার, বাবুল তালুকদার, এম এম বাদশা, আজমল হক হেলালী প্রমুখ।

সংহতি জানিয়ে সমাবেশে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এ এম এম আনিসুল আউয়াল।

আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যা: ১৩ বছরে হত্যা মামলার তদন্ত পিছিয়েছে ১১৫ বার৩ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাগর-রুনি হত্যার বিচার হতেই হবে, না হলে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি