লালমনিরহাটে বিএনপি নেতার অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাতে গিয়ে অবরুদ্ধ ভ্রাম্যমাণ আদালত
Published: 11th, February 2025 GMT
লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জাহাঙ্গীর আলমের মালিকানাধীন অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালাতে গেলে ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারকসহ অন্যদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কালীগঞ্জের দলগ্রাম ইউনিয়নের শ্রীখাতা গ্রামে অবস্থিত মেসার্স এমজেএ ব্রিকসে এ ঘটনা ঘটে। এমন পরিস্থিতিতে কোনো ব্যবস্থা না নিয়েই ফিরে আসতে হয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত–সংশ্লিষ্টদের।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসককে একটি চিঠি দিয়েছেন কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সিফাত আনোয়ার তুমপা।
চিঠিতে বলা হয়েছে, মেসার্স এমজেএ ব্রিকস-২ এর মালিক মো.
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্যের জন্য বিএনপি নেতা ও ইটভাটার মালিক জাহাঙ্গীর আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি সাড়া দেননি।
ইউএনও সিফাত আনোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার এস এম শাফায়াত আখতার নুর, রাকিবুল ইসলাম এবং লালমনিরহাট পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক মো. গোলাম আসিফ রহমান ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছিলেন। উদ্ভূত নেতিবাচক পরিস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কার্যক্রম সমাপ্ত না করেই ফিরে আসতে হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অবরুদ্ধ থাকার পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের সবাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে কালীগঞ্জ ইউএনও কার্যালয়ে ফিরে আসেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে বাজার ইজারা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ১২
নোয়াখালীর কবিরহাটে বাজারের ইজারার দরপত্র মূল্যায়ন শেষে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। আজ বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে কবিরহাট উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকে এ ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১২ জন আহত হয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি কবিরহাট উপজেলার বার্ষিক হাটবাজার ইজারার বিজ্ঞপ্তি দেয় উপজেলা প্রশাসন। এরপর অনেক নতুন ও পুরোনো দরদাতা দরপত্র জমা দেন। আজ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই দরপত্র মূল্যায়ন শেষে বাজার ইজারার প্রথম ধাপের কার্যক্রম শেষ করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পূদম পুষ্প চাকমা।
সূত্র জানায়, দরপত্র মূল্যায়ন শেষে ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের আমিন বাজারের ইজারার সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন একই উপজেলার বাসিন্দা চট্টগ্রাম নগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল হাসান ওরফে আকাশ। তিনি দর দেন ২৩ লাখ টাকা। একই বাজারের দ্বিতীয় নিকটতম দরদাতা ছিলেন ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব মো. সুজন, তাঁদের পক্ষে দর দেওয়া হয় ২২ লাখ টাকা।
কামরুল হাসানকে সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত ঘোষণার পর ইউএনও কার্যালয়ের সামনে দুই পক্ষ প্রথমে বাগ্বিতণ্ডা, পরে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্সের প্রধান ফটকের সামনে পাল্টাপাল্টি হামলা ও সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে কবিরহাট থানার পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহত ব্যক্তিদের ২৫০ শয্যার নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালসহ স্থানীয় একাধিক হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে মহানগর ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কামরুল হাসান বলেন, প্রকাশ্যে ডাকের মাধ্যমে সেরা দরদাতা নির্বাচন করা হয়েছে। যাঁরা অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইজারা নিয়েছিলেন, তাঁরা এবার না পেয়ে হামলা করেছেন।
অপর দিকে ধানসিঁড়ি ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব মো. সুজনের ছোট ভাই সাবেক ছাত্রদল নেতা মিরাজুল ইসলাম দাবি করেন, ইউনিয়ন, উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতারা তাঁর ভাই সুজনের নামে বাজার ইজারা নেওয়ার কথা বলে তাঁর (সুজনের) কাছ থেকে কাগজে সইও নিয়েছিলেন। কিন্তু ইজারার সময় দেখা যায়, কামরুল হাসান নামের একজন উচ্চ দর দিয়ে বাজার তাঁর নামে ইজারা নিয়ে নিয়ে যান।
মিরাজের অভিযোগ, তাঁরা বাজার ইজারাকে কেন্দ্র করে আগেই পরিষদ এলাকায় লোকজন জড়ো করেন এবং তাঁদের লোকজনের ওপর হামলা করেন। এতে তাঁদের ৯-১০ জন আহত হয়েছেন।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহীন মিয়া বলেন, ইজারা এক পক্ষ পেয়েছে, আরেক পক্ষ পায়নি। এটা নিয়ে মনোমালিন্য ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। তাৎক্ষণিকভাবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে বের করে দেয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ইউএনও পূদম পুষ্প চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, ইজারা শেষে ইজারায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সম্ভবত তর্কাতর্কি, হাতাহাতি হয়েছে। তাঁর কার্যালয়ে কিছু হয়নি।