সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় লিড ব্যাংক হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্সের আয়োজন করেছে ব্র্যাক ব্যাংক।

স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স আয়োজনের লক্ষ্য হলো, ব্যাংকিং সেবা সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সমৃদ্ধ করা এবং ছোটবেলা থেকেই তাঁদের প্রয়োজনীয় আর্থিক জ্ঞান ও সচেতনতাসহ সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করা। এই অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় পরিচালিত সকল ব্যাংক, বেশ কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক এবং অভিভাবকরা। আয়োজনে আধুনিক ব্যাংকিং প্র্যাকটিস ও আর্থিক সাক্ষরতা নিয়ে সেশন পরিচালনা করা হয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও আর্থিক সাক্ষরতা উদ্যোগের অংশ হিসেবে দেশব্যাপী এমন কনফারেন্সের আয়োজন করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন ডিপার্টমেন্ট শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাংকিং ও আর্থিক সেবা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় স্কুল ব্যাংকিং কনফারেন্স পরিচালনা করে থাকে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পৌর কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত এই কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করে উক্ত জেলায় পরিচালিত ৩০টি ব্যাংক। আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো.

আরিফুজ্জামান, বাংলাদেশ ব্যাংক প্রধান কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক কাজী মুতমাইন্না তাহমিদা, সোনালী ব্যাংক পিএলসি-এর উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মোবারক হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা শিক্ষা অফিসার মো. জুলফিকার হোসেন, ব্র্যাক ব্যাংকের সিলেট রিজিওনের রিজিওনাল হেড রেজাউর রহমান এবং অভিভাবকরা।

শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে এদিন স্কুল ব্যাংকিং কনাফারেন্স শুরু হয় র‍্যালির মধ্য দিয়ে। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের জন্য কুইজ প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়। পরবর্তীতে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। অনুষ্ঠান শেষ হয় শিক্ষার্থীদের মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে, যেখানে তাঁরা তাঁদের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় লিড ব্যাংক হিসেবে এমন আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরে ব্র্যাক ব্যাংক গর্বিত। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার শিক্ষার্থীরা যাতে সদা পরিবর্তনশীল আধুনিক বিশ্বে প্রয়োজনীয় ব্যাংকিং জ্ঞান ও আর্থিক দক্ষতা নিয়ে এগিয়ে যেতে পারে, সেই লক্ষ্যেই এই কনফারেন্স সম্পন্ন হয়েছে।

এএ

উৎস: SunBD 24

কীওয়ার্ড: ব র হ মণব ড কনফ র ন স ও আর থ ক পর চ ল

এছাড়াও পড়ুন:

হুটহাট যেন জামিন না হয়, সতর্ক থাকুন

দেশে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টাকারী ব্যক্তি ও সন্ত্রাসীরা যাতে সহজে জামিন না পান, সেটা নিশ্চিত করার জন্য পুলিশ ও আইনজীবীদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের দুই উপদেষ্টা। তাঁরা জামিন পাওয়ার যোগ্য মানুষেরা যাতে সহজে জামিন পান, সেটিও নিশ্চিত করার পক্ষে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক কর্মশালায় গতকাল মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘আইনজীবীদের বলব, আপনারা আদালতে দায়েরকৃত প্রতিটি মামলার ধার্য তারিখে উপস্থিত থাকুন। প্রসিকিউটিং এজেন্সির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ করে পর্যাপ্ত তথ্য দিয়ে নিজেকে সমৃদ্ধ রাখুন। কোনোভাবেই যেন কোনো সন্ত্রাসী জামিন না পায়, সর্বোচ্চ সতর্ক থাকুন।’

অন্যদিকে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, পতিত ফ্যাসিস্টরা লাখ লাখ কোটি টাকা খরচ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। হুটহাট কাউকে জামিন দেওয়া যাবে না। আবার যিনি জামিনের যোগ্য, তাঁকে জামিন থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। জামিন দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে। কেউ যেন জামিন নিয়ে বের হয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে না পারেন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

দেশে সাম্প্রতিক কালে বেশ কয়েকজন শীর্ষ সন্ত্রাসী জামিনে বেরিয়ে এসে অপরাধে জড়িয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগেরও দু–একজন জামিন পেয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা হয়েছে। এমন অবস্থায় দুই উপদেষ্টা জামিন প্রসঙ্গে বক্তব্য দিলেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে। ‘দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগবিষয়ক কর্মশালা’য় বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি), পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব নাসিমুল গনির সভাপতিত্বে তিন পর্বে কর্মশালাটি হয়। প্রথম পর্বে আগত অতিথিরা বক্তব্য দেন। পরের দুই পর্বে মানবাধিকার, পরিবেশ, আইন প্রয়োগ, মামলা রুজু ও তদন্তে যথাযথ আইনের প্রয়োগসহ বিভিন্ন বিষয় আলোচনা করা হয়।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিকভাবে কাজ করলে মব-তন্ত্র (সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) কমে যাবে। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে। আসিফ নজরুল, আইন উপদেষ্টা

প্রথম পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। অতিথি ছিলেন আসিফ নজরুল এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।

সারা দেশে চলমান বিশেষ অভিযান ‘অপারেশন ডেভিল হান্টের’ কথা উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসর, দুষ্কৃতকারী, নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও সন্ত্রাসীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিয়েছে; কিন্তু তাদের দোসররা দেশে-বিদেশে সরকারের বিরুদ্ধে নানাবিধ ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন পুলিশ সদর দপ্তরে স্থাপিত ‘জয়েন্ট অপারেশন সেন্টারের’ মাধ্যমে অপারেশন ডেভিল হান্টের সার্বিক কার্যক্রম সমন্বয় করা হবে।

মহানগর এলাকায় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এই অভিযান পরিচালনায় সমন্বয় করবেন বলে উল্লেখ করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, আদালতের বিচারক, সরকারপক্ষের আইনজীবী, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য নিয়োজিত রয়েছেন।

অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামারি ট্রায়ালের (সংক্ষিপ্ত বিচার) জন্য সরকার ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় আটজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করেছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘কোনো অপরাধীকে রাস্তায়, বাজারে, মাঠে, ময়দানে, রাজপথে দেখতে চাই না। প্রত্যেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে চাই। তাদের বিচার নিশ্চিত করতে চাই।’

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাড়ে ১৫ বছরের প্রতিটি হত্যার বিচার হবে বলে উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, তা ছাড়া উপদেষ্টা পদে থাকার মানে হয় না। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সঠিকভাবে কাজ করলে মব-তন্ত্র (সংঘবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) কমে যাবে। সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যা যেন আর না হয়, তা নিশ্চিতের কথা বলেছেন গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, অপরাধীকে যেন আইনের আওতায় এনে বিচার করা যায়। মানবাধিকার রক্ষা করে পুলিশিং সম্ভব।

কর্মশালার দ্বিতীয় পর্বে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম, অ্যাটর্নি জেনারেল আসাদুজ্জামান প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ