রাজবাড়ীতে পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে প্রাণ গেল সেনাসদস্যের
Published: 11th, February 2025 GMT
দুই মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন সেনাবাহিনীর সদস্য মো. আজিজুল ব্যাপারী (২৬)। কাল বুধবার কর্মস্থল সিলেট সেনানিবাসে যোগ দেওয়ার কথা ছিল তাঁর। জরুরি কিছু কাজ করতে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে রাজবাড়ী শহরে যাচ্ছিলেন তিনি। পথে এক পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ঘটনাস্থলেই আজিজুলের মৃত্যু হয়।
মঙ্গলবার বিকেল পাঁচটার দিকে রাজবাড়ী সদর উপজেলার আলীপুর ইউনিয়নের নতুন রাস্তা এলাকায় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত আজিজুল আলীপুর ইউনিয়নের বারবাকপুর গ্রামের মোস্তফা ব্যাপারীর ছেলে। দুর্ঘটনায় তাঁর বন্ধু মোটরসাইকেলচালক নয়ন শেখ (২৫) ও পথচারী হাসান শেখ (৮০) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় নাদের মোল্লা জানান, বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ির কাছে নতুন রাস্তা থেকে মহাসড়কে উঠছিলেন আজিজুল। বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ি অতিক্রম করে সামনে থাকা পথচারী হাসান শেখকে বাঁচাতে গিয়ে মোটরসাইকেল সজোরে গাছের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে ঘটনাস্থলেই আজিজুল মারা যান। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজবাড়ী পৌরসভার শ্রীপুর এলাকার নয়ন শেখ ও হাসান শেখকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়।
সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রাজীব দে বলেন, সন্ধ্যার দিকে মৃত অবস্থায় সেনাসদস্য আজিজুল ব্যাপারীকে আনা হয়। এ সময় হাসান শেখ ও নয়ন শেখ নামের দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় আনা হয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজিজুলের চাচা তাজেল মিজি প্রথম আলোকে বলেন, অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসা করাতে দুই মাসের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন আজিজুল। চিকিৎসা শেষে চাচাতো ভাইয়ের বিয়ের কেনাকাটা করতে বন্ধুকে নিয়ে মোটরসাইকেলে রাজবাড়ী শহরে যাচ্ছিলেন। পথে এক পথচারীকে বাঁচাতে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন। কাল তাঁর সিলেটে যাওয়ার কথা ছিল।
গোয়ালন্দ মোড় আহ্লাদীপুর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: নয়ন শ খ আজ জ ল পথচ র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, থানায় মামলা
গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে, ওই ঘটনায় উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।
বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়নের খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে।
আরো পড়ুন:
হবিগঞ্জের সাবেক এমপি আবু জাহিরসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা
বাহুবলে গাছে বেঁধে আগুন, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
আহতদের মধ্যে জামায়াতের দুই কর্মীকে গাজীপুর পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ঈশ্বরপুর এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে আসলাম (২৬) এবং খলাপাড়া এলাকার ইসলাম সরকারের ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৩৫)।
বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সুমন মিয়া বলেন, “উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ইফতারের আগ মুহূর্তে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আপেল, নুর ইসলাম ও আকরামসহ ১০-১৫ জন এসে বলেন, এই এলাকায় ইফতার মাহফিল করা যাবে না। এরপর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা ইফতারের খাবার ফেলে দেন। পরে জামায়াতের কর্মীরা অন্য স্থানে ইফতার ও নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিএনপি কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ১০ জন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।”
বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, “কেউ যদি আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়, তাহলে কি তারা রক্ষা করবে না? জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৭-৮ জন আহত হন।”
বিএনপির এই নেতা তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় দিতে পারেনি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।
গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় গাজীপুর পাঠানো হয়েছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টার দিকে জামায়াতের পাঁচজন কর্মীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুইজনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”
কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “জামায়াত নেতা মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ