সিঙ্গাপুর থেকে ৫০ হাজার টন নন–বাসমতী সেদ্ধ চাল আমদানি করা হচ্ছে। এতে ২৬৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয় হবে। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ বিষয়ক প্রস্তাব অনুমোদিত হয়।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের অ্যাগ্রো কর্প ইন্টারন্যাশনাল পিটিই, এলটিডি চাল সরবরাহের কাজ পেয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে তা কেনা হবে। প্রতি টনের মূল্য ধরা হয়েছে ৪৩৪ দশমিক ৭৭ মার্কিন ডলার।

এদিকে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে এক কার্গো তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি করা হচ্ছে। এক কার্গো সমান ৩৩ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট (এমএমবিটিইউ) এলএনজি। প্রতি এমএমবিটিইউর মূল্য ধরা হয়েছে ১৬ দশমিক ৭৭৫০ মার্কিন ডলার। এতে এক কার্গো এলএনজি আমদানিতে ব্যয় হবে ৭৭৯ কোটি ৪০ লাখ টাকা। সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওকিউ ট্রেডিং লিমিটেড এই এলএনজি সরবরাহ করবে।

এ ছাড়া পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ডিজাস্টার রিস্ক ম্যানেজমেন্ট এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট’ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় চুক্তিমূল্য ২০ কোটি ৭১ লাখ টাকা বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে ক্রয় কমিটি। এ প্রকল্পের মূল চুক্তিমূল্য ছিল ৫০ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আমদ ন

এছাড়াও পড়ুন:

বোতলজাত ভোজ্যতেলের আমদানি বেশি হলেও বাজারে সংকট, পাচারের আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক বাজারে ভোজ্যতেলের দাম কমছে। ভোজ্যতেল পরিশোধনকরী দেশীয় কারখানাগুলোর মালিকেরাও সরকারকে জানিয়েছেন, অন্যান্যবারের তুলনায় এ বছর আমদানি পরিস্থিতি ভালো। তারপরও বোতলজাত ভোজ্যতেলের সংকট চলছে। কিন্তু কেন তা হচ্ছে, সেটি তাঁরা জানেন না। এদিকে পরিশোধন কারখানার মালিকেরা অন্য পণ্য কেনার শর্তে ভোজ্যতেল বিক্রি করছেন তা–ও সত্য।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন (বিটিটিসি) কার্যালয়ে গতকাল রোববার অনুষ্ঠিত ভোজ্যতেলের সরবরাহ পরিস্থিতি পর্যালোচনাবিষয়ক এক বৈঠকে এসব তথ্য উঠে আসে। এ নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তাতে ভাসা ভাসা কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও যথাযথ কোনো সমাধান হয়নি। ফলে ভোজ্যতেল নিয়ে মূল সংকট থেকেই যাচ্ছে।

বিটিটিসির চেয়ারম্যান মইনুল খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান ছিলেন আমন্ত্রিত অতিথি। দেশের শীর্ষ ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

বৈঠক শেষে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বিটিটিসি জানায়, বাজারে ভোজ্যতেলের কোনো ঘাটতি নেই। যেটি হয়েছে তা কৃত্রিম সংকট এবং প্রকৃত তথ্যের ঘাটতি থেকে তা সৃষ্ট। কাস্টমসের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ভোজ্যতেলের আমদানি প্রায় ৩৫ শতাংশ বেড়েছে। ঋণপত্রও (এলসি) বেড়েছে একই হারে। শুধু তা–ই নয়, বিশ্ববাজারেও এখন পণ্যটির মূল্য স্থিতিশীল।

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ভোজ্যতেলের উৎপাদন ও বিপণনের সব পর্যায়ে বাজার তদারকির দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলো প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। কিন্তু ‘প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা’ সুনির্দিষ্ট করে বলা হয়নি।

কেউ কেউ অন্যান্য পণ্য কেনার শর্তে ভোজ্যতেল বাজারজাত করছে, এমন তথ্য উঠে আসে বৈঠকে। এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উৎপাদক বা কোনো পর্যায়ে এ ধরনের শর্তযুক্ত বিক্রি বা বাজারজাত করা প্রচলিত আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ ধরনের কোনো অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ভোক্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অনেক দিন ধরেই ভোজ্যতেল নিয়ে সমস্যা চলছে। কিন্তু বাজার তদারকিতে তা ধরা পড়ে না। পড়লেও সেটি চেপে যাওয়া হয়। ছদ্মবেশে বা ক্রেতা সেজে বাজারে ঢুকলেই এর প্রমাণ পাওয়া যাবে। যারা এটি করছে, তারা সরকারের বাজার তদারকি ব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে অর্থাৎ আইনানুগ ব্যবস্থার বাইরেই থেকে যাচ্ছে।

নতুন একটি বিষয় উঠে আসে বৈঠকে, আর সেটি হচ্ছে ভোজ্যতেল পাচার বা এর অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য। প্রতিবেশী দেশে মূল্য বেশি হওয়ায় অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে ব্যবসায়ীদের। অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য হচ্ছে কি না, সীমান্তসংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন ও সংস্থাগুলোকে তা খতিয়ে দেখতে এবং তা প্রতিরোধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বৈঠকে আরও বলা হয়েছে, নিজেদের পরিবেশকদের কাছে সরবরাহ করা ভোজ্যতেল ভোক্তারা সব সময় নির্ধারিত দামে কিনতে পারছেন কি না, তা ভোজ্যতেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোই তদারক করবে।

পরিশোধন কোম্পানিগুলো যা বলেছে

বিটিটিসি জানায়, সিটি গ্রুপের প্রতিনিধি (উপদেষ্টা) অমিতাভ চক্রবর্তী বৈঠকে জানান, তাঁরা গত জানুয়ারিতে মোট ৫০ হাজার ৭০০ টন ভোজ্যতেল সরবরাহ করেছেন। এর মধ্যে ২২ হাজার ২৪২ টন বোতলজাত। এর আগের মাস ডিসেম্বরে তাঁরা ১৪ হাজার ২৬২ টন বোতলজাত ভোজ্যতেল সরবরাহ করেছিলেন।

এ ছাড়া মেঘনা গ্রুপের প্রতিনিধি জি এম তসলিম শাহরিয়ার জানান, জানুয়ারিতে তাঁরা মোট ৪৭ হাজার ৬৬৮ হাজার টন সরবরাহ করেন। এর মধ্যে ১৫ হাজার টন বোতলজাত। আগের মাসের ২৫ হাজার টনের মধ্যে ১২ হাজার টন ছিল বোতলজাত।

টি কে গ্রুপের পরিচালক শফিউল আতাহার তসলিম জানান, জানুয়ারিতে তাঁরা ১১ হাজার ৮১০ টন বোতলজাত সয়াবিন তেল সরবরাহ করেন, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ৯ হাজার ৫০০ টন।

অন্যান্য উৎপাদনকারীরাও জানান, তাঁরাও আগের মাসগুলোর তুলনায় সম্প্রতি বেশি তেল সরবরাহ করেছেন। ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান উপলক্ষে এখন পাইপলাইনে প্রায় দেড় লাখ টন ভোজ্যতেল ভর্তি জাহাজ চট্টগ্রামের বন্দরে নোঙর করার অপেক্ষায় আছে। এই তেল শিগগিরই সরবরাহব্যবস্থায় যুক্ত হবে।

ব্যবসায়ীরা আরও জানান, মাঠপর্যায়ে কেউ অতিরিক্ত মজুত করে থাকতে পারেন। আবার কেউ কেউ অধিক লাভের আশায় বোতল কেটে খোলা তেলে পরিণত করে তা বিক্রি করতে পারেন।

বিটিটিসির তথ্য অনুযায়ী দেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা ২৩ থেকে ২৪ লাখ টন। তবে রমজানের চাহিদা বেশি, ১ লাখ ৮০ হাজার থেকে ৩ লাখ টন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুনামগঞ্জে শনিবার সাড়ে ৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকবে
  • সাত ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন, ব্যয় হবে ১২৫৫ কোটি টাকা 
  • রি-প্যাকিংয়ের নামে সার-কীটনাশকে ভেজাল
  • বানরের ‘হানায়’ শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ বিপর্যয় নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে যত আলোচনা
  • পুরো শ্রীলঙ্কায় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণ এক বানর
  • এক বানরের কাণ্ডে অন্ধকার পুরো শ্রীলঙ্কা
  • ভোক্তাদের জিম্মি করা যাবে না
  • বোতলজাত ভোজ্যতেলের আমদানি বেশি হলেও বাজারে সংকট, পাচারের আশঙ্কা
  • এশিয়ার বাজারে এলএনজির দাম দুই মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ