পুঁজিবাজারের ছয় প্রতিবেদন জমা, দোষীরা মোড়কবন্দি
Published: 11th, February 2025 GMT
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) গঠিত ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি' ১২টি বিষয়ের মধ্যে ছয়টির তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী কারসাজিতে জড়িত প্রতিষ্ঠানের নাম প্রকাশ করেছে সিএসইসি। তবে প্রতিবেদনের মোড়কেই বন্দি রাখা হয়েছে দোষী ব্যক্তিদের নাম-পরিচয়। অবশ্য সবার জন্য এই প্রতিবেদন উন্মুক্ত করা হবে বলে জানানো হয়েছে।
অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির হস্তান্তর করা প্রতিবেদনগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম চলমান আছে এখন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
পুঁজিবাজারের ছয় প্রতিবেদন জমা, দোষীদের মোড়কবন্দি
‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তর ৪ কোম্পানি
প্রতিবেদনে নাম আসা দায়ীদের বিষয়ে কোনো কিছু প্রকাশ করা না হলেও সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেছেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট সবার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করা হবে।
বিজ্ঞপ্তিতে বিএসইসি জানিয়েছে, বিগত সময়ের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনার জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জকমিশন (বিএসইসি) গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি এরইমধ্যে ছয়টি তদন্ত প্রতিবেদন কমিশনের কাছে জমা দিয়েছে। প্রতিবেদনগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম চলমান আছে।
যেসব বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা হয়েছে, সেগুলো হলো:
১.
২. আইএফআইসি গ্র্যান্টেড শ্রীপুর টাউনশিপ গ্রীন জিরো কুপন বন্ড ইস্যু-সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি অনুসন্ধান ও তদন্ত।
৩. বেস্ট হোল্ডিংস লিমিটেড সংক্রান্ত আইপিও অনুমোদন ও ইস্যু সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়াদি অনুসন্ধান ও তদন্ত।
৪. আল-আমিন কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ সংক্রান্ত পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজি, ব্লক মার্কেটে শেয়ার অধিগ্রহণসংক্রান্ত কারসাজি এবং ওটিসি থেকে এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন কর্তৃক আরোপিত শর্তসমূহ পরিপালনের হালনাগাদ তথ্যাদিসহ যাবতীয় বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
৫. ফরচুন সুজ লিমিটেড-সংক্রান্ত পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজি, বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লভ্যাংশ বিতরণ সংক্রান্ত অনিয়ম এবং কোম্পানিটির শেয়ার মূল্য বৃদ্ধির সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ ও প্রতিষ্ঠানসমূহের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
৬. কোয়েস্ট বিডিসি লিমিটেড-সংক্রান্ত (পূর্বে পদ্মা প্রিন্টার্স অ্যান্ড কালারস লিমিটেড) পুঁজিবাজারের যাবতীয় অনিয়ম ও কারসাজির বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত।
২০২৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর কমিশনের ৯১৮তম জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স-১৯৬৯ এর সেকশন এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-১৯৯৩ এর ধারা ১৭ক এ প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পাঁচ সদস্যের একটি ‘অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি’ গঠন করা হয়।
পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষা ও তাদের আস্থা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিগত সময়ের অনিয়ম, কারসাজি ও দুর্নীতির বিষয়ে আইন ও বিধি-বিধানের আলোকে অনুসন্ধান ও তদন্ত করার জন্য গঠন করা কমিটি মোট ১২টি বিষয়ে অনুসন্ধান ও তদন্ত পরিচালনা করছে।
ঢাকা/এনটি/রাসেল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর তদন ত প ব এসইস র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
অর্থবছরের প্রথমার্থে কঠিন সময় পার করেছে পুঁজিবাজার
চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে (জুলাই থেকে ডিসেম্বর) বাংলাদেশের পুঁজিবাজার কঠিন সময় অতিক্রম করেছে। এ সময়ে পুঁজিবাজারে টানা নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের আস্থাহীনতা ছিল এর মূল কারণ। বিশেষ করে, শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে হওয়া বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অস্থিরতা পুঁজিবাজারের পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তোলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) বড় ধরনের পরিবর্তন আনা হয়।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। মুদ্রানীতিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
মুদ্রানীতি ঘোষণায় পুঁজিবাজার প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হয়, বিএসইসির নবনিযুক্ত নেতৃত্ব বাজার স্থিতিশীল করতে বেশকিছু কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—বাজারে অনিয়ম ও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বড় অঙ্কের জরিমানা আরোপ। পাশাপাশি, বাজার অস্থিরতার মূল কারণ খুঁজে বের করতে এবং বাজারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
অর্ধবার্ষিকে সোনালী পেপারের মুনাফা বেড়েছে
যমুনা অয়েলের এজিএমের তারিখ পরিবর্তন
এতে আরো উল্লেখ করা হয়, শুধু শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নয়, পুঁজিবাজার পুনরুদ্ধারে বিএসইসি একটি বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে। এর মূল লক্ষ্য হলো— পুঁজিবাজারকে পুনরুজ্জীবিত করা, বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুনরুদ্ধার করা এবং সুশাসন নিশ্চিত করা। এই বহুমুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদে একটি শক্তিশালী ও স্থিতিশীল আর্থিক পরিবেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছে।
উল্লিখিত সময়ে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স উল্লেখযোগ্যভাবে ২.৩ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যা ২০২৪ সালের জুন মাসে ৫৩২৮ পয়েন্ট থেকে কমে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ৫২০৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। এছাড়া, গড় দৈনিক লেনদেনের পরিমাণও ১০ শতাংশ কমে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে ৫৬০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে, যেখানে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে পুরো সময়ে এটি ছিল ৬২২ কোটি টাকা। এই পতন বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ হ্রাস এবং বাজারে আগ্রহ কমার ইঙ্গিত দেয়।
মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে ডেপুটি গভর্নরগণ, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্রসহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/এনটি/রফিক