সার কারখানার সাবেক সেই হিসাব রক্ষকের ৯১ গাড়ি-জমিজমা জব্দ
Published: 11th, February 2025 GMT
খোন্দকার মুহাম্মদ ইকবাল; গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাড়বকুন্ডে। বিসিআইসির আওতাধীন শাহজালাল ফার্টিলাইজার কারখানায় হিসাব বিভাগের প্রধান ছিলেন। তবে চাকরি জীবনে দুর্নীতি, অনিয়ম করে কোটি কোটি টাকা কামিয়েছেন। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডির তদন্তে এখন পর্যন্ত ইকবালের ৩৮ কোটি ৮৩ লাখ ২৭ হাজার ৮৫১ টাকার সম্পদের খোঁজ মিলেছে। দুর্নীতির টাকায় ৯১টি গাড়ি কিনেছেন তিনি। তার মধ্যে ২১টি মিনিবাস রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রে মাসিক চুক্তিতে ভাড়া দেন। ‘আশিক ট্রেডার্সের’ মাধ্যমে ভাড়ায় বিষয়টি দেখভাল হতো। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সিআইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি ইকবালের সম্পদ জব্দ করে রিসিভার নিয়োগের আদেশ দেয় আদালত। সিআইডির দায়িত্বশীল সূত্র থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ইকবাল ও তার স্ত্রী হালিমা আক্তারের নামে একাধিক ফ্ল্যাট, জমি পাওয়া গেছে। তাদের মোট ফ্ল্যাট ৪টি। রমনার মেহজাবীন স্কয়ারে ফ্ল্যাটের আয়তন তিন হাজার ৮৩৫ বর্গফুটের। দক্ষিণখান আইকন ভিলেজে রয়েছে এক হাজার ৫৯৯ বর্গফুটের ফ্ল্যাট। যার দলিল মূল্য দুই কোটি ৯৩ লাখ ৯৩ হাজার চারশত টাকা। রমনায় দুই হাজার ১০৬ বর্গফুট ও এক হাজার ৩৬৮ বর্গফুটের দুই ফ্ল্যাটও আছে। তদন্তে ইকবাল ও তার স্ত্রীর ২৯৯ দশমিক ১ শতাংশ জমির খোঁজ মিলেছে। যার দলিল মূল্য সাত কোটি ১১ লাখ ৫১ হাজার টাকা। তার মধ্যে গাজীপুরের শ্রীপুরে ৬১ শতাংশ। এছাড়া মুন্সীগঞ্জ ও ময়মনসিংহে আছে একাধিক দাগে জমি–জমা।
সিআইডির সূত্র বলছে–২০০৫ সালে বিসিআইসির প্রকল্প শাহজালাল সার কারখানায় সহকারী হিসাবরক্ষক পদে চাকরি নিয়েছিলেন। সেখানে এক যুগের বেশি সময় তিনি কাজ করেন। ইকবাল তাঁর স্ত্রীর নামে দুটি নামসর্বস্ব কোম্পানি খোলেন। কোম্পানি দুটির নামে বেশ কিছু ভুয়া বিল ও রসিদ জমা দিয়ে ইকবাল শাহজালাল সার কারখানা প্রকল্প থেকে ৩৮ কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন বলে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) মামলায় বলা হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির নামে জালিয়াতির মাধ্যমে বিপুল অর্থ বের করে নিয়েছেন ২০১৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে। ২০২৩ সালের এপ্রিলে ইকবাল ও তার স্ত্রী হালিমা আক্তারের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করে পুলিশ। এ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা আছে ১৬টি। ২০২২ সালে র্যাব তাদের গ্রেপ্তার করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স আইড র তদন ত ইকব ল
এছাড়াও পড়ুন:
একই রশিতে ঝুলছিল স্বামী-স্ত্রীর লাশ
শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় একই রশিতে স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে সাভারের আশুলিয়ার জামগড়া কাঁঠালতলা এলাকা থেকে পোশাক শ্রমিক স্বামী-স্ত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়। মারা যাওয়া দম্পতি হলেন বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার বড়ইতলা গ্রামের মোস্তফার ছেলে শাওন আহম্মেদ ও একই উপজেলার জমাদ্দার বাড়ি গ্রামের শাহ-আলম মাতব্বরের মেয়ে হাফিজা আক্তার। তারা দু’জনেই আশুলিয়ার দ্য রোজ ড্রেসেস নামের পোশাক কারখানায় অপারেটর পদে চাকরি করতেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, প্রায় ৫ মাস আগে আশুলিয়ার কাঁঠালতলা এলাকায় একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নেন শাওন-হাফিজা দম্পতি। সোমবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এক প্রতিবেশী জানালা দিয়ে তাদের কক্ষে একই রশিতে দু’জনকে ঝুলতে দেখেন। তাঁর চিৎকারে ওই ফ্ল্যাটের অন্য প্রতিবেশীরা সেখানে যান এবং বাড়িওয়ালাকে খবর দেন। বাড়িওয়ালা এসে আশুলিয়া থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে কক্ষের দরজা ভেঙে ওই দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
বাড়ির মালিক আফাজ উদ্দিন জানান, তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ ছিল কিনা জানেন না। কী কারণে তারা এই পথ বেছে নিয়েছেন, বুঝতে পারছেন না।
আশুলিয়া থানার এসআই জসিম উদ্দিন জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে তারা আত্মহত্যা করেছেন, তবে কী কারণে করেছেন, তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।