টাঙ্গাইলে আ. লীগের ২১ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার
Published: 11th, February 2025 GMT
টাঙ্গাইলের বিভিন্ন এলাকায় অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ পরিচালনা করে আওয়ামী লীগের ২১ জন নেতাকর্মীকে আটক করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও পৌরসভার কাউন্সিলররাও রয়েছেন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়েছেন।
পুলিশ জানায়, টাঙ্গাইলের বিভিন্ন উপজেলায় গতকাল সোমবার রাতে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। গ্রাম পর্যায়ে এসব অভিযানে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকমীদের আটক করা হয়। পরে আটক এসব নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরো পড়ুন:
সেনা কর্মকর্তা হত্যা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি গ্রেপ্তার
ক্রীড়া অনুষ্ঠানে ওসি, আ.
জেলার কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ তালুকদার, দুর্গাপুর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম ও কোকডহরা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ইসমাইল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
কালিহাতী থানার ওসি আবুল কালাম ভূইয়া বলেন, “গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।”
ভূঞাপুর পৌরসভার সাবেক প্যানেল মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম তালুকদার এবং পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একেএম রেজাউল করিম বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতরা টাঙ্গাইল সদর থানার নাশকতা মামলার আসামি। তাদের টাঙ্গাইল সদর থানায় পাঠানো হয়েছে।”
এছাড়া, মধুপুরে একজন, গোপালপুরে চারজন, ঘাটাইলে দুইজন, টাঙ্গাইল সদরে চারজন, মির্জাপুরে তিনজন, সখীপুরে একজন এবং নাগরপুর থেকে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ঢাকা/কাওছার/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ত কর ম আওয় ম
এছাড়াও পড়ুন:
১ মাস ৯ দিন শুরু হলো টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রয়, ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি
রাজধানীর কাজীপাড়া মেট্রোরেল স্টেশনের নিচে আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে দাঁড়িয়ে ছিলেন গৃহিণী রাজিয়া সুলতানাসহ প্রায় ১৫ জন নারী। একটু দূরে ছয়জন পুরুষকেও দাঁড়িয়ে। তাঁদের সবার অপেক্ষা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ট্রাকের জন্য।
ঠিক সকাল ১১টা ২৯ মিনিটে টিসিবির পণ্য বোঝাই ট্রাকটি আসে সেখানে। ট্রাক দেখেই হুড়মুড় করে ছুটতে শুরু করেন উপস্থিত নারী-পুরুষেরা। তাঁদের দেখাদেখি আশপাশ থেকে আরও মানুষ আসতে শুরু করেন। মাত্র আধা ঘণ্টার ব্যবধানে টিসিবির ওই ট্রাকটির পেছনে দুই শতাধিক মানুষের সারি তৈরি হয়ে যায়। টিসিবির ট্রাকে ২৫০ মানুষের জন্য পণ্য থাকে। অর্থাৎ আরেকটু সময় পরেই যেসব মানুষ লাইনে দাঁড়াবেন, তাদের অনেকে শেষ পর্যন্ত পণ্য কেনার সুযোগ পাবেন না। এই ভিড়ের কারণ হলো, টিসিবির ট্রাক থেকে পণ্য কিনলে ৪০০ টাকার মতো বাঁচবে।
১ মাস ৯ দিন বন্ধ থাকার পর নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য আবারও ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছে সরকারি সংস্থা টিসিবি। ঢাকা শহরের ৫০টি ও চট্টগ্রামের ২০টি স্থানে ট্রাক থেকে পণ্য বিক্রি করছে সংস্থাটি।
এ দফায় টিসিবির ট্রাক থেকে একজন ভোক্তা সর্বোচ্চ দুই লিটার ভোজ্যতেল (সয়াবিন বা কুঁড়ার তেল), দুই কেজি মসুর ডাল, এক কেজি চিনি, দুই কেজি ছোলা ও ৫০০ গ্রাম খেজুর কিনতে পারবেন। এর মধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম ১০০ টাকা। এ ছাড়া প্রতি কেজি মসুর ডাল ৬০ টাকা, চিনি ৭০ টাকা, ছোলা ৬০ টাকা ও আধা কেজি খেজুর ১৫৫ টাকায় বিক্রি করছে সংস্থাটি। মূলত আসন্ন রমজান মাস উপলক্ষে ছোলা ও খেজুর বিক্রি করা হচ্ছে।
টিসিবির ট্রাকের পেছনে অপেক্ষায় থাকা গৃহিণী রাজিয়া সুলতানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল খবরে দেখেছি, আজ থেকে ট্রাকে করে টিসিবির পণ্য বিক্রি হবে। তাই সকাল ১০টা থেকে অপেক্ষা করেছি।’
কাজী পাড়াতেই একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন শফিকুল ইসলাম। তিনি অফিসের কাজে বাইরে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার পথে টিসিবির ট্রাক দেখে তার পেছনে দাঁড়িয়ে যান। শফিকুল বলেন, ‘আজ যে পাঁচটি পণ্য দেওয়া হচ্ছে, সবগুলোই জরুরি। বাইরে থেকে কিনতে গেলে অন্তত ৩৫০-৪০০ টাকা বেশি লাগবে। তাই টিসিবির ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে গেছি। অফিসে জানিয়েছি-ফিরতে কিছুক্ষণ দেরি হবে।’
টিসিবির ট্রাক থেকে সবগুলো (পাঁচটি) পণ্য কিনতে একজন ভোক্তার ব্যয় হবে ৫৮৮ টাকা। বাজার থেকে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে ভোক্তাদের প্রায় ১০০০ টাকা ব্যয় হবে।
নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা মহানগরের ৫০টি ও চট্টগ্রাম মহানগরের ২০টি স্থানে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করে টিসিবি। ৩১ ডিসেম্বরের পর এই কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। এরপর স্বল্প বিরতি দিয়ে আজ থেকে পুনরায় এই কার্যক্রম শুরু করছে টিসিবি।
টিসিবির এই ট্রাকে পণ্য বিক্রি নিয়েও সাধারণ মানুষের কিছু অভিযোগ আছে। যেমন, কাজীপাড়ায় টিসিবির পণ্য নিতে আসা রাফায়েত চৌধুরী বলেন, ‘টিসিবির ট্রাকসেল সরকারের লস প্রজেক্ট; এটি পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’
তাঁর এই কথার কারণ জানতে চাইলে রাফায়েত বলেন, স্থানীয় দোকানদার ও আশপাশে থাকা লোকেরা প্রতিদিনই ট্রাকের পেছনে দাঁড়িয়ে পণ্য নেয়। এই পণ্য নেওয়ার জন্য একটা গোষ্ঠী তৈরি হয়ে গেছে। তাঁরা একে অপরকে খবর দিয়ে নিয়ে আসে। কিন্তু আমাদের মতো নিম্ন আয়ের ও ছোট চাকরি করা মানুষেরা লাইনে ঠিকভাবে দাঁড়াতে পারেন না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে জানতেই পারি না, কোথায় ও কবে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। সরকার এনআইডি কার্ড ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে এই পণ্য বিতরণ কার্যক্রম করলে একই লোক বারে বারে পণ্য নেওয়ার সুযোগ পাবেন না।