বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ডেভিল হান্ট অপারেশন করেছেন ঠিক আছে, কিন্তু বনে-জঙ্গলে ডেভিল না খুঁজে সরকারি দপ্তরে ঘাপটি মেরে থাকাদের খুঁজে বের করুন। সরকারের সব প্রতিষ্ঠানে এখনও আওয়ামী প্রেতাত্মারা বসে আছে। এরাই এই সরকারকে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম সংলগ্ন এলাকায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণের মুগদা থানা বিএনপি আয়োজিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারে তারেক রহমানের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে এ কর্মশালা সঞ্চালক ছিলেন সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন। 

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করেছি সংসদ নির্বাচনের জন্য। আর কেউ কেউ চাচ্ছেন স্থানীয় নির্বাচন। তারা জানেন না, গর্তে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিস্টরা স্থানীয় নির্বাচনে ফাঁক-ফোকর দিয়ে মাথা বের করবে। এটা অশুভ চক্রান্ত। সতর্ক থাকতে হবে যেন কোনো ষড়যন্ত্র জাতীয় নির্বাচন পিছিয়ে দিতে না পারে।

সমাবেশে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচির উপস্থাপন ও বিশ্লেষণ করেন জাতীয়তাবাদী মহিলা দল সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, নির্বাহী কমিটির সদস্য হাবিবুর রশীদ হাবিব। এ সময় উপস্থিত ছিলেন নগর বিএনপি নেতা শামছুল হুদা, ইউনূস মৃধা, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, লিটন মাহমুদ, হাজী মনির হোসেন প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ আওয় ম ল গ ব এনপ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

সড়ক ভেঙে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন, ভোগান্তি

নালিতাবাড়ী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় গত বন্যায়। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় নন্নী উত্তরবন্দ এলাকায় নন্নী-বারোমারী দুই লেনের সড়ক। সড়কের দুটি স্থানে ভেঙে যায়। সড়কের দুই পাশে অন্তত ৩৫০ মিটার ধসে যায়। যে কারণে যানবাহন চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসী। দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও সড়ক মেরামত না হওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
সরেজমিন জানা গেছে, গত ৪ অক্টোবর পাহাড়ি ঢলে নালিতাবাড়ী উপজেলা শহরের সঙ্গে যোগাযোগের একমাত্র সড়কের নন্নী উত্তরবন্দ এলাকার দুটি স্থানে ভেঙে গভীর খাদ তৈরি হয়। বন্যার পানি নেমে গেলে এলাকাবাসী মিলে সড়কের একটি অংশে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করে। যা কয়েক দিন পরই ভেঙে যায়। এ অবস্থায় নদী পারের কাঁচা সড়ক দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাতায়াত করছেন অটোরিকশা, ভ্যান, মোটরসাইকেল ও সাইকেলচালকরা।
এলাকাবাসী জানান, সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে মধুটিলা ইকোপার্ক, নাকুগাঁও স্থলবন্দর, বারোমারী মিশন, বারোমারী বাজার, নন্নী উচ্চবিদ্যালয়, নন্নী পোড়াগাঁও মৈত্রী কলেজ, নন্নী ইউনিয়ন পরিষদ, নন্নী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হয়। সড়ক ধসের কারণে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে যাতায়াতে ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ কাঁচা সড়ক ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক শিক্ষার্থী নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারছে না। অনেক অভিভাবক সন্তানদের যাতায়াতে অতিরিক্ত খরচ করতে বাধ্য হচ্ছেন। রোগীর জন্য পরিস্থিতি আরও শোচনীয়। বিশেষ করে রাতে জরুরি চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পৌঁছানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যার ফলে অনেক রোগীর জীবনহানির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থী সুমন আহমেদ ও ফার্সি জানান, সড়ক ভেঙে যাওয়ায় তাদের যাতায়াতে খুব সমস্যা হচ্ছে। বারবার অটোরিকশা পরিবর্তন করে চলাচল করায় ভাড়াও লাগছে বেশি। সন্ধ্যা হয়ে গেলে এখন গাড়ি পাওয়া যায় না। এতে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের কষ্ট 
ভোগ করতে হয়।
স্থানীয় কৃষক সোলাইমান হোসেন বলেন, ‘সড়ক ভেঙে যাওয়ায় আমরা কৃষকরাও বিপদে পড়েছি। সড়কটি ধসে যাওয়ায় আমাদের ধান, শাকসবজি ও গবাদি পশু বাজারে নিয়ে যেতে দ্বিগুণ ভাড়া দিতে হচ্ছে। খুব মুসিবতে আছি।’
অটোরিকশাচালক নূর ইসলাম জানান, ভাঙা সড়কের কারণে তাদের আয় অনেক কমে গেছে। বিকল্প পথে যাত্রী পরিবহন ঝুঁকিপূর্ণ এবং সময় বেশি লাগায় যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। সংসার চালানো অনেক কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, গত বন্যায় সড়কটি ভেঙে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন ভাঙা সড়কের দুই পাশে যাত্রীর অপেক্ষায় থাকতে হয়।
বারোমারী এলাকার বাসিন্দা নাজমুল ইসলাম জানান, বন্যার পর তারা বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করেন। তবে তা ঝুঁকিপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা সাঁকো পার হতে ভয় পায় এবং অনেক অভিভাবক দুর্ঘটনার আশঙ্কায় তাদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন।
স্থানীয় পোলট্রি ব্যবসায়ী সুমন মিয়ার ভাষ্য, দিনে শত শত মানুষ এ পথে চলাচল করে। কিন্তু সড়ক ভেঙে যাওয়ায় নিদারুণ কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। সড়কের ভাঙা অংশে কোনো নির্দেশক না থাকায় অপরিচিত অনেকে গাড়ি চালিয়ে গর্তে পড়ে যাচ্ছেন। দ্রুত সড়কটির মেরামত করলে এলাকাবাসীর কষ্ট কমবে।
নন্নী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য মো. আবদুল্লাহ বলেন, প্রতিদিন এই পথে চলাচলকারীরা দুর্ভোগে অতিষ্ঠ। এলাকাবাসীর কথা ভেবে দ্রুত সড়কটি সংস্কারের দাবি জানান তিনি।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় শেরপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলামের সঙ্গে। তাঁর ভাষ্য, সড়কটির জন্য সম্প্রতি বরাদ্দ পাওয়া গেছে। সড়কের ভাঙা অংশে দুটি কালভার্ট নির্মাণসহ নকশা করে বিধ্বস্ত সড়কটি দ্রুত মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ