কারখানায় শ্রমিকের ঝুলন্ত লাশ, সহকর্মীর দাবি হত্যা
Published: 11th, February 2025 GMT
সাভারের আশুলিয়ায় পোশাক কারখানার ভেতর থেকে এক শ্রমিকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অন্য শ্রমিকরা এটিকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে কারখানার মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে আশুলিয়ার খেজুরবাগান এলাকার রেডিয়েন্স ফ্যাশন লিমিটেড কারখানার ৮ম তলার পরিদর্শন কক্ষের ভেতর থেকে শ্রমিক গোলাম মোস্তফার (৪০) মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার আরসা গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে। স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে তিনি স্থানীয় একটি বাড়িতে ভাড়া থেকে রেডিয়েন্স কারখানার ফিনিশিং শাখায় কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর পদে কাজ করতেন।
পুলিশ ও কারখানার শ্রমিকরা জানান, মোস্তফা কখন কারখানায় ঢুকেছেন তা নির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। তাই কিভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা তদন্তের দাবি জানিয়েছে কারখানার কর্মরত শ্রমিকরা।
কারখানার শ্রমিকরা জানান, মঙ্গলবার সকালে কারখানার ভেতরে মোস্তফার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান শ্রমিকরা। তাঁর মৃত্যুর বিষয়টি কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে অন্য শ্রমিকরা এটিকে হত্যাকাণ্ড দাবি করে কারখানার কাজ বন্ধ করে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান করে। শ্রমিকদের ধারণা তাকে হত্যার পর মরদেহটি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার ওসি নুর আলম সিদ্দিকী বলেন, কারখানার ভেতরে ৮ম তলায় পরিদর্শন কক্ষে এক শ্রমিকের ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
সহকর্মীর ছেলেকে গুলি করে হত্যায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তা রিমান্ডে
বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের সময় রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে ছাত্র-জনতার মিছিলে নির্বিচার গুলিবর্ষণে পুলিশ কর্মকর্তার ছেলে ইমাম হাসান তাইম হত্যা মামলায় সাবেক সহকারী পুলিশ কমিশনার তানজিল আহমদ, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান এবং এসআই শাহাদাত হোসেনের ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি.এম.ফারহান ইশতিয়াকের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাদের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করে পুলিশ। এদিন শুনানিকালে তাদের আদালতে হাজির করা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর ওমর ফারুক ফারুকী রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। তবে আসামি পক্ষে কোনো আইনজীবী ছিলেন না।
এ সময় আসামি তানজিল আহমদ আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, “আন্দোলনের দুই মাস আগে আমার যাত্রাবাড়ীতে পোস্টিং হয়। আমি ট্রাফিক পুলিশের এসি ছিলাম। একজন ট্রাফিক পুলিশের কাজ কি সবার জানা। আমি এ ঘটনার কিছুই জানি না।”
পরে আদালত তাদের ৫ দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের উপ-পরিদর্শক মো. ময়নাল হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ইমাম হাসান তাইম নিহতের ঘটনায় গত ২০ আগস্ট আদালতে ওই শিক্ষার্থীর মা মোসা. পারভীন আক্তার এ মামলা করেন।
মামলায় ওয়ারী বিভাগের তৎকালীন উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ ইকবাল হোসেন, ওয়ারী বিভাগের এডিসি শাকিল মোহাম্মদ শামীম, এসি তানজিল আহমেদ, যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) জাকির হোসেন ও এসআই শাহাদাৎ আলীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে সরকার গত ২০ জুলাই কারফিউ জারি করে। ওইদিন দুপুর ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল ছিলো। ওই সময় নারায়ণগঞ্জ সরকারি আদমজী নগর এম. ডব্লিউ কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাইম তার দুই বন্ধুর সাথে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় চা খেতে যাই। ওই সময় কিছু উচ্ছৃঙ্খল বৈষম্য কোটা আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করছিলো। তখন ইকবাল হোসেন, শামীম ও তানজিল আহমেদের নির্দেশে জাকির হোসেন ও তার সঙ্গীরা বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ারশেল, সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট ও গুলি চালায়। প্রাণভয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা ছুটাছুটি করতে থাকে। তাইম ও তার দুই বন্ধু লিটন চা স্টোরের ভেতর ঢুকে দোকানের সাটার টেনে দেয়। কিন্তু সাটারের নিচের দিকে আধা হাত খোলা ছিলো। সেখানে অবস্থানকারীদের পুলিশ টেনে বের করে। জাকির হোসেন গুলি থেকে বাঁচতে চাইলে দৌড় দিতে বলে। তখন তাইম সবার আগে দৌড় দেয়। জাকির গুলি করে। বিনা চিকিৎসায় তাইম সেখানেই মারা যায়।
ঢাকা/মামুন/টিপু