২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন দেবে ঢাবির সত্যানুসন্ধান কমিটি
Published: 11th, February 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থান চলাকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের চিহ্নিত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়ার লক্ষ্যে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটি আগামী ২০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেবে ।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে এমন তথ্য জানিয়েছে সত্যানুসন্ধান কমিটির আহ্বায়ক ও স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কাজী মাহফুজুল হক সুপন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত বছর ১৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনার সত্যানুসন্ধান করে জড়িতদের চিহ্নিত করে প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নিয়ে আসতে উপাচার্য একটি সত্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছেন।
বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, সত্যানুসন্ধান কমিটির নিকট বিশ্ববিদ্যালয়ের সহিংসতায় আক্রান্ত, আহত এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা অনেক অভিযোগ প্রেরণ করেছেন। সেসব অভিযোগের সমর্থনে ভিডিও, ছবি এবং প্রিন্ট ও সোশাল মিডিয়ার কন্টেন্ট প্রেরণ করেছেন, যা ছিল অত্যন্ত আশাব্যঞ্জক। সত্যানুসন্ধান কমিটি নিজ উদ্যোগেও বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া থেকে বিভিন্ন ধরনের তথ্য সংগ্রহ করেছে। এছাড়া সত্যানুসন্ধান কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কয়েকটি এলাকায় ভাগ করে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যও গ্রহণ করেছে।
প্রাপ্ত তথ্যাদির উপর ভিত্তি করে সত্যানুসন্ধান কমিটি সহিংস ঘটনায় জড়িতদের অনেককে চিহ্নিত করতে পেরেছে। বর্তমানে সত্যানুসন্ধান কমিটি চিহ্নিতদের পরিচয় নিশ্চিত করার কাজ সম্পন্ন করে চূড়ান্ত প্রতিবেদন তৈরি করছে।
সত্যানুসন্ধান কমিটির ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সত্যানুন্ধান কমিটি আশা করছে ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ তারিখের মধ্যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট জমা দেবে।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ধ ন কম ট
এছাড়াও পড়ুন:
‘মব’ সংস্কৃতির কারণে শত্রুরা উপকৃত হচ্ছে: মাহফুজ আলম
বাংলাদেশে এখন স্থিতিশীলতা দরকার বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম মব (দলবদ্ধ বিশৃঙ্খলা) বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যবিহীন এ মব সংস্কৃতির কারণে উপকৃত হচ্ছে আমাদের শত্রুরা।’
মঙ্গলবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এসব কথা বলেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘তৌহিদি জনতা নামে আপনারা যারা নিজেদের পরিচয় দেন, তাদের আমি হুমকি দিইনি, সতর্ক করেছি। কেন করেছি? গত পনেরো বছর নিপীড়ন সহ্য করে এবং অভ্যুত্থানে ভূমিকা রেখে সকল নাগরিকদের মতোই আপনারা একটি জাতীয় সম্ভাবনা হাজির করেছেন, কিন্তু মব সংস্কৃতির কারণে তা ভূলুণ্ঠিত হচ্ছে।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমার আপনাদের প্রতি ঘৃণা নেই, বরং বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের মতোই আপনাদের প্রতি দরদ আছে। আলেমদের প্রতি সম্মান আছে। আমি নিজে বিশ্বাসী, মুসলিম হিসাবে তৌহিদবাদী, কিন্তু কেউ তৌহিদের নামে উগ্রতা দেখালে সেটার আসন্ন পরিণতি সম্পর্কে সাবধান করাও সহনাগরিক ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসাবে আমার কর্তব্য মনে করেছি।’
ফেসবুকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে এখন স্থিতিশীলতা দরকার। বিপ্লবী জনতা আর খণ্ড খণ্ড মব আলাদা জিনিস। লক্ষ্যহীন, উদ্দেশ্যবিহীন এ মব সংস্কৃতির কারণে উপকৃত হচ্ছে আমাদের শত্রুরা। রাষ্ট্রের অখণ্ডতা, নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমাদের কঠোর হতে হবে।’
‘এ কঠোরতার হুঁশিয়ারি অপরাধীদের জন্য, যারা তৌহিদের কথা বলে নিপীড়ন করছে, নৈরাজ্য করছে’ বলে উল্লেখ করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, ‘কিন্তু আগে যেভাবে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়ে সাধারণ মুসলিমদের নিপীড়ন করা হতো, যার শিকার আমিও হয়েছি, তা কোনোমতেই আর পুনরাবৃত্তি হবে না।’
মাহফুজ আলম আরও বলেন, ‘আলেম উলেমা, মাদ্রাসার ছাত্ররা গত ১৫ বছর নিপীড়নের শিকার হয়েছেন, এবারের অভ্যুত্থানেও রক্ত দিয়েছেন, কিন্তু যে স্বাধীনতা এত রক্তাক্ত, সে স্বাধীনতা রক্ষায় প্রজ্ঞা না দেখালে যে জুলুম নেমে আসবে—এ সতর্কতা উচ্চারণ যদি ভুল হয়, তাহলে আমার কিছু বলার নেই। আমি জালিম বা মজলুম—দুইটা হওয়া থেকেই আল্লাহর কাছে পানাহ চাই।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘ব্যক্তি আক্রমণ, ব্যক্তিগত বিশ্বাস নিয়ে আক্রমণ বা সন্দেহ তৈরি, পরিবারের সদস্যদের হুমকি বা বেইজ্জতি ইত্যাদি কাজগুলো নবীজির অনুসারী হিসাবে সবার পরিত্যাগ করা উচিত। চলুন, বিভাজন আর ঘৃণা বাদ দিয়ে রাষ্ট্রকে সবার করে গড়ে তুলি। পরস্পর সম্মান ও মর্যাদার সম্পর্কই নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি।’
মাহফুজ আলম আগেও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। গতকাল সোমবার রাতে ফেসবুকে তিনি লেখেন, ‘কথিত আন্দোলন আর মবের মহড়া আমরা এখন থেকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করব। রাষ্ট্রকে অকার্যকর এবং ব্যর্থ প্রমাণের চেষ্টা করা হলে একবিন্দু ছাড় দেওয়া হবে না।’
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ফেসবুক পেজে ৫ ফেব্রুয়ারি ভারতে অবস্থানরত ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ প্রচার করা হয়। ওই ভাষণকে কেন্দ্র করে সেদিন থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়ি এবং বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। গাজীপুরে হামলার শিকার হন শিক্ষার্থীরা।
এসব ঘটনা বন্ধে সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় থাকতে দেখা যায়। এ নিয়ে নানা স্তরের মানুষের মধ্যে নানা রকম প্রশ্নও তৈরি হয়। পরে গত শনিবার থেকে শুরু হয় বিশেষ অভিযান ‘ডেভিল হান্ট’। পুলিশ সদর দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশেষ অভিযান শুরুর পর শনিবার রাত থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ২ হাজার ২৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন‘মবে’র মহড়া এখন থেকে শক্ত হাতে মোকাবিলা করব: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫