বৈষম্য শুধু প্রাণের বিনিময়ে দূর হবে না: আলী রিয়াজ
Published: 11th, February 2025 GMT
সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান ও যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয়েস স্টেট ইউনিভার্সিটির ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রিয়াজ বলেছেন, বছরের পর বছর এবং যুগ যুগ ধরে যে বৈষম্য চলে আসছে তা শুধু প্রাণের বিনিময়ে এত দ্রুত দূর হবে না।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের ওরিয়েন্টশন প্রোগ্রামে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। আলী রিয়াজ ওই অনুষ্ঠানে ওরিয়েন্টেশন স্পিকার ছিলেন।
তিনি বলেন, আজকে আমরা যে বৈষম্যের কথা বলছি- যেই আন্দোলনের জন্য মানুষ জীবন দিল, যে দাবিতে যে তাগিদে মানুষ প্রাণ দিয়েছেন সেটা আগামীকাল অর্জিত হবে- এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। অনেকেই আশাহত হচ্ছেন- এত প্রাণ গেল, এতকিছু হলো কই বৈষম্য তো কমছে না। যে বৈষম্য বছরের পর বছর, যুগের পর যুগ কাঠামোগতভাবে তৈরি করা হয়েছে, প্রতিষ্ঠান দিয়ে যাকে স্থায়ীকরণ করা হয়েছে, তা কেবলমাত্র প্রাণের বিনিময়ে সব অবিলম্বে অর্জন করতে পারব- এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেন, আমরা প্রত্যেকে দায়িত্ববোধের দিক থেকে আচরণ দিয়ে, জ্ঞান দিয়ে চর্চা দিয়ে একটু একটু করে গ্রাস করতে পারব। সহমর্মিতার বোধ তৈরি করতে পারি এবং ভিন্নমতের সত্ত্বেও যদি এক টেবিলে বসতে পারি তাহলেই আমরা পারব।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টায় কুরআন তেলাওয়াত ও জাতীয় সঙ্গীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের শহিদদের জন্য ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে শহিদ ও আহতদের জন্য দোয়া করা হয়।
অনুষ্ঠানে পাবিপ্রবির রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রহ্ম, পাবনা প্রেস ক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, সাধারণ সম্পাদক জহুরুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও পাবনায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এম জি
উৎস: SunBD 24
এছাড়াও পড়ুন:
সাদা কাপড় বাটিকে রঙিন হয় যে গ্রামে
কমলপুর কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের ছোট্ট একটি গ্রাম। আয়তনে ছোট হলেও দেশজুড়ে কমলপুর গ্রামের বেশ পরিচিতি। কারণ, বাটিক পোশাকের গ্রাম বা বাটিকপল্লি হিসেবে নাম কুড়িয়েছে এটি। এখানকার বাসিন্দারা সারা বছরই বাহারি বাটিকের পোশাক তৈরি করেন। তবে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে এই বাটিকপল্লিতে কর্মব্যস্ততা বেড়ে যায় বহুগুণে।
কমলপুর গ্রামে ঢুকতেই চোখে পড়ল বাটিকপল্লির কর্মব্যস্ততা। তৈরি হচ্ছে রংবেরঙের বাটিকের পোশাক। ঐতিহ্য ও আধুনিকতার মিশেলে এ বছর নানা ধরনের নকশায় তৈরি করা হচ্ছে বাটিক শাড়ি ও থ্রি-পিস। সাদা কাপড়ের মধ্যে ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতা আর ক্রেতার চাহিদার কথা ভেবে নিত্যনতুন নকশা ফুটিয়ে তুলছেন কারিগরেরা।
কমলপুর বাটিকপল্লির তিনটি কারখানা ঘুরে দেখা গেছে, প্রথমে প্রিন্ট করার জন্য কাপড় কেটে প্রস্তুত করা হয়। এরপর মোম দিয়ে সেই কাপড়ে নানা ধরনের নকশা করেন কারিগরেরা। রঙের স্থায়িত্ব বাড়াতে রং করার পর কাপড় সেদ্ধ করে একটি দল। সেখান থেকে তুলে কাপড়ে মাড় দিচ্ছে আরেক দল। এরপর সেই কাপড় কয়েক দফা পানিতে ধুয়ে মাঠে রোদে শুকাতে দেওয়া হয়। শুকানোর পর কাপড় ইস্তিরি করে বাজারজাত করার জন্য তৈরি করা হয়।
বাটিকের সিল্ক ও সুতি শাড়ি, থ্রি-পিস, শার্ট, লুঙ্গি, বেডশিট, গজ কাপড়সহ বিভিন্ন পণ্য তৈরির জন্য এই গ্রামে অন্তত ১০টি কারখানা আছে। শুরুটা কমলপুর থেকে হলেও এখন আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও বাটিকের পোশাক তৈরি হচ্ছে। তবে গুণে ও মানে এখনো সেরা বলে ক্রেতার পছন্দের শীর্ষে কমলপুরের বাটিকের পণ্য।
কমলপুর বাটিকপল্লির একটি কারখানার মালিক মো. রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৯৭৫ সালের দিকে আমার চাচা লাল মিয়া মেম্বার এই গ্রামে বাটিক শিল্পের যাত্রা শুরু করেন। তাঁর হাত ধরেই বাটিক কুমিল্লার ঐতিহ্যে পরিণত হয়েছে। চাচা ভারতের কলকাতা ও ত্রিপুরা রাজ্যে কাপড়ে মোম ও রং দিয়ে ব্লক তৈরির কাজ শেখেন। এরপর গ্রামে এসে তিনি বাটিক তৈরির কাজ ছোট আকারে শুরু করেন। কালের পরিক্রমায় বাটিকের চাহিদা বাড়তেই থাকে। বিশ্বের অনেক দেশে যাচ্ছে আমাদের গ্রামের বাটিকের পোশাক। আমাদের তৈরি এই বাটিকের পোশাক গুণে ও মানে অনন্য এবং পরতেও আরামদায়ক।’
বাটিক করার জন্য প্রথমে সাদা কাপড় সংগ্রহ করা হয়