রাজীবকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বিপ্লব-সীমান্তের নেতৃত্বে আনন্দ মিছিল
Published: 11th, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির নবনির্বাচিত যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীবকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এক আনন্দ মিছিল করেছে এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপি।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকাল চারটায় চাষাড়ায় এ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন সাইফুল ইসলাম বিপ্লব ও সীমান্ত প্রধান।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, ফতুল্লা থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাড.
মিছিল শেষে নেতৃবৃন্দ নবনির্বাচিত যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজীবকে অভিনন্দন জানান এবং তার নেতৃত্বে দলকে আরও সুসংগঠিত করার আহ্বান জানান।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: র জন ত ব এনপ ন র য়ণগঞ জ ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
গো + এষণা
গবেষণার সন্ধিবিচ্ছেদ গো + এষণা। অনেকে তাই একে হারিয়ে যাওয়া গরু খোঁজার সঙ্গে তুলনা করেন। অতীতের কৃষিভিত্তিক সমাজে গরু গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ ছিল। তাই গরু হারালে তা তন্ন তন্ন করে খোঁজা হতো। তবে বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট যে গরু খোঁজার কাজটি ঠিকঠাক করতে পারছে না– মঙ্গলবার প্রকাশিত গবেষণার নামে ‘ভোজনবিলাস’ শিরোনামে সমকালের প্রতিবেদনই তার প্রমাণ। এ প্রতিষ্ঠানে প্রাণিসম্পদ নিয়ে যেসব অনিয়মের খবর এসেছে, সেখানে গবেষণার খাতার নম্বর নিয়ে শঙ্কা তৈরি হওয়াই স্বাভাবিক। আফ্রিকা থেকে গবেষণার জন্য আনা ১১ জোড়া উটপাখির মধ্যে এখন আছে মাত্র দুই জোড়া। বাকি উটপাখি নাকি গেছে কর্তাদের পেটে! উটপাখির মাংসের স্বাদ কেমন, আমরা জানি না। তা খাওয়ার চল এ দেশে নেই। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কর্তারা সেই উটপাখিকেও রেহাই দেননি। গবেষণার মোরগও নাই হয়ে গেছে। ৩৮টি মোরগ চুরি হয়ে গেছে বলা হলেও, সেগুলোও নাকি জবাই করে খেয়ে ফেলেছেন সেখানকার কর্মকর্তারা।
সরকারি প্রতিষ্ঠানটি চালু হয়েছে গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়িয়ে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা পূরণ, খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের জন্য। কিন্তু সমকালের অনুসন্ধানে এসেছে, প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্তাদের বেশি মনোযোগ প্রাণী কেনাকাটায়। সরকারি কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে নানা জাত উদ্ভাবন করলেও মাঠ পর্যায়ের খামারে নেই সেই প্রাণী। প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত প্রযুক্তি শতকের কাছে পৌঁছলেও তিন-চারটি ছাড়া বাকি গবেষণা বলা যায় মাঠেই মারা গেছে। প্রতিষ্ঠানটির উদ্ভাবিত পিপিআর ভ্যাকসিন, গোল পক্স ভ্যাকসিন ও নেপিয়ার ঘাসের সুফল পাওয়া গেছে বটে, তবে এর মধ্যে নেপিয়ার ঘাস বিদেশ থেকে আমদানি করা। বাকি প্রায় ৯০টি গবেষণায় সরকারের বিপুল অর্থ ব্যয় হলেও খামারিরা লাভবান হননি।
এমনকি প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা ব্যর্থ হলেও ‘সাফল্য’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। যেমন মুরগির জাত শুভ্রা। ‘লেয়ার স্ট্রেইন-১’ নামে পরিচিত এ জাত উদ্ভাবনে ১১ বছর সময় ব্যয় হলেও উদ্ভাবন ত্রুটির কারণে শুভ্রার যে সংখ্যক ডিম দেওয়ার কথা ছিল, তা দিতে পারেনি। শুভ্রা কম ডিম দিয়ে বেশি খায় বলে খামারিরা তাতে আগ্রহ পাননি। প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রচারণায় একসময় টার্কি মুরগি জনপ্রিয় হলেও শেষ পর্যন্ত এটি ব্যবসাসফল হয়নি। প্রাণীর ‘ল্যাম্পি স্কিন ডিজিজ’-এর দেশীয় ভ্যাকসিন তৈরির কাজ প্রতিষ্ঠানটি করলেও এর গুণগত মান নিয়ে ইতোমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে।
সম্প্রতি এ প্রতিষ্ঠানে গবেষণার প্রাণীগুলো একে একে মারা পড়ছে। সমকালের প্রতিবেদক বের করেছেন, এ ঘটনার প্রায় তিন সপ্তাহ পার হলেও বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে না জানিয়ে সেখানে মারা যাওয়া কোয়েল পাখি সেপটিক ট্যাঙ্কের ভেতরে চাপা দেওয়া হয়। মারা গেছে গবেষণার দেড়শ জাপানি জাতের শুভ্রা-স্বর্ণার অধিকাংশই। ৪০ থেকে ৪৫টি টার্কিও মারা গেছে। কিন্তু বার্ড ফ্লু, নাকি অন্য কোনো কারণে প্রাণীগুলো মারা গেল, তা জানে না এ গবেষণা ইনস্টিটিউট।
প্রাণিসম্পদের এমন গবেষণা ইনস্টিটিউট দিয়ে জাতি কী করবে? অথচ এমন প্রতিষ্ঠান দেশের স্বার্থে কী না করতে পারত! প্রাণিসম্পদ ব্যবস্থাপনা উন্নয়ন অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা পালন করতে পারে। গ্রামে ব্যক্তিগত পর্যায়ে মানুষ বিভিন্ন প্রাণী লালনপালন করে যেমন অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছে, তেমনি খামারিরাও ব্যবসা করছেন। গরুতে বাংলাদেশ যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছে, সেখানেও বলা যায়, এই দুই গোষ্ঠীর ভূমিকাই প্রধান। অথচ এ ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট পথ দেখাতে পারত এবং এতে প্রাণিসম্পদে বাংলাদেশ আরও সমৃদ্ধ হতো। এখনও অবশ্য সময় শেষ হয়ে যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির মধ্যকার অনিয়ম দূর এবং নতুন করে সত্যিকার প্রাণিসম্পদ গবেষণা হলে এতে দেশ লাভবান হবে নিঃসন্দেহে।
মাহফুজুর রহমান মানিক: জ্যেষ্ঠ সহসম্পাদক, সমকাল
mahfuz.manik@gmail.com