পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতি নির্বাচন ঘিরে বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট মো. রুহুল আমিনসহ তিন আইনজীবী আহত হয়েছেন। নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলকে কেন্দ্র করে আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। 

আহত বাকি দুজন হলেন- পৌর জামায়াতের ৬নং ওয়ার্ডের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো.

মহিউদ্দিন ও জামায়াত কর্মী গাজী মোহাম্মদ হুমায়ূন কবির। তাদের মধ্যে গুরুতর আহত রুহুল আমিনকে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

আহত জামায়াতপন্থি আইনজীবী রুহুল আমিন বলেন, ‘আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন। নির্বাচনী তপশিল অনুযায়ী আজ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত ছিল ৯টি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের শেষ দিন। এতে জামায়াত সমর্থিত জেলা ‘ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৯টি পদে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নেয়। সে মোতাবেক মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে গেলে ৬টি পদে মনোনয়নপত্র বিক্রি করে নির্বাচন কমিশন। তবে বাকি তিনটি পদ সভাপতি, সহ-সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র চাইলে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা বাধা দেন। একপর্যায়ে আমাদের ওপর হামলা করে বিএনপিপন্থি আইনজীবীদের একাংশ।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পটুয়াখালী আইনজীবী সমিতি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করা হয়নি। তাই জামায়াত আলাদাভাবে ৯টি পদেই প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় এবং জেলা জামায়াতের আমির অ্যাডভোকেট নাজমুল আহসান সভাপতি ও অ্যাডভোকেট মো. মহিউদ্দিন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীসহ ৯টি পদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও ও দাখিলের জন্য গেলে তারা এ হামলা চালান।’

জামায়াতপন্থি এ আইনজীবী আরও অভিযোগ করেন, ‘নির্বাচন কমিশনের প্রধান অ্যাডভোকেট মোহসীন উদ্দিন। তিনি জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি এবং অন্য দুই নির্বাচন কমিশনও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী। নির্বাচন কমিশনাররা এ সময় নীরব ভূমিকা পালন করেন।’ 

এ প্রসঙ্গে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শরীফ মো. সালাহউদ্দিন বলেন, ‘এ অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। এ ধরণের কোনো ঘটনা ঘটেনি আইনজীবী সমিতি চত্বরে। বিএনপির ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য তারা এসব রটাচ্ছেন।’ 

এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এটিএম মোজাম্মেল হক তপন বলেন, ‘এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। জামায়াতের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগের ছিলেন। এখন জামায়াতের কাঁধে ভর করেছেন। তাই তাকে দেখে আইনজীবীদের মধ্যে কিছুটা উত্তেজনা দেখা দেয়। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং জামায়াতের প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।’

জেলা আইনজীবী সমিতি নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অ্যাডভোকেট মো. মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘জেলা জামায়াতের আমির নিজে উপস্থিত থেকে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। এ ঘটনায় আমার কাছে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ দেননি তারা। তিনটি পদে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেনি এমন অভিযোগও সত্য নয়।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আইনজ ব ব এনপ আইনজ ব ন বল ন ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট

মডেল মেঘনা আলমকে পরোয়ানা ছাড়া গ্রেপ্তার, কারণ উল্লেখ না করে গ্রেপ্তার, ২৪ ঘন্টার বেশি গোয়েন্দা কার্যালয়ে হেফজতে রাখা প্রশ্নে রুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে মেঘনা আলমকে দেওয়া আটাকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা রুলে জানতে চাওয়া হয়েছে।

একটি রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি রাজিক আল জলিল ও বিচারপতি তামান্না রহমান খালিদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন। মেঘনা আলমকে আটকের প্রক্রিয়া ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে তার বাবা বদরুল আলম রিট আবেদন দায়ের করেন।

গত ৯ এপ্রিল রাতে মডেল মেঘনা আলমকে রাজধানীর বসুন্ধরার বাসা থেকে আটক করে হেফাজতে নেয় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আদেশ অনুযায়ী, পর দিন ১০ এপ্রিল রাতে আদালত তাঁকে বিশেষ ক্ষমতা আইনে ৩০ দিন আটক রাখার আদেশ দেন। তিনি কারাগারে আছেন।

সুনির্দিষ্ট কারণ না জানিয়ে মেঘনা আলমের আটকের ঘটনা নানা আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অপরাধে জড়ালে মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার না করে তাঁকে কেন বিশেষ ক্ষমতা আইনের বিতর্কিত ‘প্রিভেন্টিভ ডিটেনশন’ বা প্রতিরোধমূলক আটক করা হলো, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এমন প্রেক্ষাপটে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) পদ থেকে রেজাউল করিম মল্লিককে গতকাল শনিবার সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

এ দিকে মেঘনা আলমকে যে প্রক্রিয়ায় আটক করা হয়েছে, তা সঠিক হয়নি বলে আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে মন্তব্য করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এর আগে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার ও আটকাদেশের বৈধতা নিয়ে মেঘনার বাবা আজ রিটটি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সারা হোসেন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী কাজী জাহেদ ইকবাল ও প্রিয়া আহসান চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ ও জামিলা মমতাজ।

রুলে পরোয়ানা ছাড়া বাসা থেকে মেঘনা আলমকে গ্রেপ্তার, কারণ না জানিয়ে গ্রেপ্তার, ডিবি কার্যালয়ে ২৪ ঘণ্টার বেশি হেফাজতে রাখা ও আইনজীবীর সুযোগ না দেওয়া কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বিশেষ ক্ষমতা আইনে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে দেওয়া আটকাদেশ কেন আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।

স্বরাষ্ট্রসচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার, ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) প্রধান,ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ও ভাটারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে দুই সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গ’ ইউনিটে ভর্তিতে নতুন করে এমসিকিউ পরীক্ষা হবে
  • আদালতপাড়ায় এক হয়ে যুবককে পেটালেন সাবেক দুই স্ত্রী
  • ঢাবির ব্যবসায় শিক্ষা ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা আবার হবে
  • মডেল মেঘনা আলমের আটকাদেশ কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট
  • প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, সব পদে জয়ী বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা
  • পয়লা বৈশাখের আয়োজন বাধাগ্রস্ত করার কোনো অধিকার নেই
  • চট্টগ্রাম আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিনা ভোটে জয়ী হচ্ছেন সবাই
  • ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ: যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের মুখে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
  • ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কারের মুখে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী
  • ভোট হচ্ছে না, সভাপতি-সম্পাদকসহ ২১ পদে বিএনপি-জামায়াত ‘ভাগাভাগি’