বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফির শেষ ম্যাচে নতুন করে পিঠের চোটে পড়েন যশপ্রীত বুমরা। চোট থেকে সেরে না উঠলেও তাঁকে রেখেই আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াড ঘোষণা করে ভারত।

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) আশা ছিল, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগেই শতভাগ ফিট হয়ে উঠবেন বুমরা। কিন্তু পিঠে স্ক্যান করানোর পর জানা যায়, চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বে একাধিক ম্যাচ মিস করবেন ৩১ বছর বয়সী ফাস্ট বোলার।

আট দলের টুর্নামেন্টে ভারত গ্রুপ পর্বে খেলবে তিন ম্যাচ। এরপর সম্ভাব্য সেমিফাইনাল ও ফাইনাল। এর অর্থ, বুমরা চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ফিরলেও শেষ দিকে এক–দুই বা সর্বোচ্চ তিনটি ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন। কিন্তু নির্বাচকেরা সেই ঝুঁকি নেবেন কি না, সেই সিদ্ধান্ত শিগগিরই জানাবেন। কারণ, স্কোয়াডে পরিবর্তন আনার শেষ দিন আজ।

চোটের কারণে শেষ পর্যন্ত বুমরা যদি স্কোয়াড থেকে ছিটকে পড়েন, তা ভারতের জন্য বিশাল এক ধাক্কা হবে। টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বিবেচনায় চ্যাম্পিয়নস ট্রফিও অনেকটা রং হারাবে। ইংল্যান্ডের সাবেক পেসার স্টিভ হার্মিসনের মতে, ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে বুমরার অনুপস্থিতি রোনালদোবিহীন বিশ্বকাপের মতো হবে।’

২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখা বুমরা কয়েক বছর ধরেই ভারতের বোলিং–আক্রমণের প্রধান শক্তি। এর মধ্যে ২০২৪ সালে ছিলেন সেরা ফর্মে। গত জুনে ভারতের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ে ভূমিকা রাখায় পেয়েছিলেন টুর্নামেন্টসেরার স্বীকৃতি। বোর্ডার–গাভাস্কার ট্রফিতে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ভারত ৩–১ ব্যবধানে হারলেও বুমরাই হয়েছিলেন সিরিজসেরা। ২০২৪ সালে আইসিসির বর্ষসেরার খেতাবও জিতেছেন তিনি। ফর্মের তুঙ্গে থাকা বুমরাকে তাই যেকোনো মূল্যে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে রেখে দেওয়ার পক্ষে হার্মিসন।

ইংল্যান্ডের হয়ে ২০০৪ ও ২০০৬ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি খেলা হার্মিসন টকস্পোর্ট ক্রিকেটকে বলেন, ‘এটা (বুমরার না–থাকা) সেরা স্ট্রাইকার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ছাড়া ফুটবল বিশ্বকাপে যাওয়ার মতো। ১৫ বছর আগে রোনালদোর কোনো বিকল্প ছিল না, যতক্ষণ না তাকে বসিয়ে রাখতেন। বুমরাও ভারতের জন্য তেমন একজন। আমি কল্পনা করছি, বুমরাকে ছাড়া ভারত কী করবে।’

৪৬ বছর বয়সী হার্মিসন আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, আপনি কখনোই যশপ্রীত বুমরার বদলি পাবেন না। এমনকি ওকে দলে পাওয়ার জন্য ফাইনালের সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাই। কারণ, সে যশপ্রীত বুমরা, বিশ্বের সেরা (বোলার)। ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকে এটাই আমার মতামত।’

ভারতীয় নির্বাচকদের একটা পরামর্শও দিয়েছেন হার্মিসন, ‘বুমরাকে শুধু স্কোয়াডে রেখে দিন এবং সেডান চেয়ারে করে নিয়ে আশপাশে ঘুরে বেড়ান। তাতে ভারতের স্কোয়াড ১৪ জনের হবে। গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোর জন্য এটাই যথেষ্ট। ভারত ওকে সেমিফাইনাল থেকে পেতে পারে কিংবা আরও পরে (ফাইনালে)। শেষ পর্যন্ত সে যদি ফিট হয়ে না ওঠে, তাহলে অন্য কেউ চোটে পড়লে তার বদলি নেওয়া যাবে।’

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতি হিসেবে হার্মিসনের ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলছে ভারত। নাগপুর ও কটকে প্রথম দুই ম্যাচ জিতে এরই মধ্যে সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে রোহিত শর্মার দল। আগামীকাল শেষ ম্যাচ বুমরার জন্মশহর আহমেদাবাদে। কিন্তু আহমেদাবাদে না গিয়ে বুমরা গেছেন বেঙ্গালুরুতে পিঠের সর্বশেষ অবস্থার পরীক্ষা করাতে।

ইএসপিএন ক্রিকইনফো জানিয়েছে, বুমরা এখনো পিঠে ব্যথা অনুভব করছেন। পুরোপুরি সেরে উঠতে আরও পাঁচ সপ্তাহ সময় লাগবে। তত দিনে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শেষ হয়ে যাবে। বুমরাকে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দল থেকে বাদ দেওয়া হলে কপাল খুলতে পারে আরেক ফাস্ট বোলার হর্ষিত রানার।

হাইব্রিড মডেলের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু ১৯ ফেব্রুয়ারি। মূল আয়োজক পাকিস্তান হলেও ভারত তাদের ম্যাচগুলো খেলবে দুবাইয়ে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের অভিযান শুরু ২০ ফেব্রুয়ারি, প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকার চেয়ে আজ দেশের ৪ বিভাগীয় শহরে বায়ুদূষণ অনেক বেশি

বায়ুদূষণে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানী ঢাকাকে ছাপিয়ে গেছে দেশের চার বিভাগীয় শহর। দেশের বিভিন্ন এলাকার বায়ুর মানও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আজ যে চার বিভাগীয় শহরের বায়ুর মান রাজধানীর চেয়ে অনেকটাই খারাপ, সেগুলো হলো সিলেট, রাজশাহী, রংপুর ও ময়মনসিংহ।

এর মধ্যে গতকাল বুধবার সকালে ঢাকাসহ দেশের আটটি বিভাগীয় শহরের বায়ুর মানের হিসাবে সিলেট নগরীর বায়ুর মান সবচেয়ে খারাপ ছিল। গতকাল সকাল পৌনে ৯টায় আইকিউএয়ারের মানসূচকে এ নগরীর বায়ুর মান ছিল ২১৮। বায়ুর এ মানকে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে গণ্য করা হয়। ঠিক এ সময়েই বিশ্বের ১২৬ নগরীর মধ্যে বায়ুদূষণে তৃতীয় স্থানে ছিল ঢাকা। আইকিউএয়ারের মানসূচকে ঢাকার গড় বায়ুমান ১৭৯। এ মানকে ‘অস্বাস্থ্যকর’ বলে গণ্য করা হয়।

আজও দেশের আট বিভাগীয় শহরের মধ্যে সিলেটের বায়ুমান সবচেয়ে খারাপ। আজ সকাল পৌনে নয়টার দিকে আইকিউএয়ারের মানসূচকে এ নগরীর বায়ুর মান ছিল ১৮৯। এ মানকে অস্বাস্থ্যকর হিসেবে গণ্য করা হয়। আজ রাজধানীর বায়ুর মানের খানিকটা উন্নতি হয়েছে, আইকিউএয়ারের মানসূচকে এর মান ১২৩। এ মানকে সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর বলে গণ্য করা হয়। এই গোষ্ঠীর মধ্যে আছে শিশু, বৃদ্ধ, গর্ভবতী নারী ও অসুস্থ ব্যক্তি। বাইরে বের হলে তাঁদের অবশ্যই মাস্ক পরার পরামর্শ দিয়েছে আইকিউএয়ার। আর বিশ্বের ১২৪ শহরের মধ্যে আজ রাজধানীর অবস্থান ১৬তম।

দেশের আরও যে তিন বিভাগীয় শহরের মধ্যে রাজশাহীর বায়ুর মান ১৬১, রংপুরে ১৫৭ ও ময়মনসিংহে ১৫৩। প্রতিটি মানই অস্বাস্থ্যকর।

বাকি বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে চট্টগ্রামের মান ১০৪, খুলনার ৮৭ ও বরিশালের ৭৮।
বায়ুদূষণের এ চিত্র তুলে ধরেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার। প্রতিষ্ঠানটি বায়ুদূষণের পরিস্থিতি নিয়মিত তুলে ধরে। বাতাসের মান নিয়ে তৈরি করা এই লাইভ বা তাৎক্ষণিক সূচক একটি নির্দিষ্ট শহরের বাতাস কতটা নির্মল বা দূষিত, সে সম্পর্কে মানুষকে তথ্য দেয় ও সতর্ক করে।

আজ বায়ুদূষণে শীর্ষে আছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। বায়ুর মান ১৯৬।
এরই মধ্যে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) আইকিউএয়ারের ‘বৈশ্বিক বায়ুমান প্রতিবেদন ২০২৪’ তুলে ধরা হয়। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, বায়ুদূষণে ২০২৪ সালে দেশ হিসেবে দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বাংলাদেশ। আর নগর হিসেবে বিশ্বের তৃতীয় শীর্ষ দূষিত নগর ছিল ঢাকা। ২০২৩ সালে বায়ুদূষণে বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল। নগর হিসেবে ঢাকার অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। গত বছর (২০২৪) বায়ুদূষণে শীর্ষ দেশ ছিল আফ্রিকার চাদ। আর নগর হিসেবে শীর্ষে ছিল ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি।

সার্বিকভাবে বায়ুদূষণে আগের বছরের তুলনায় গত বছর বাংলাদেশের অবস্থানের সামান্য পরিবর্তন হয়েছে। তবে এ পরিবর্তনকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন না পরিবেশবাদী ও গবেষকেরা। তাঁরা বলছেন, দূষণ আরও বিস্তৃত হচ্ছে, এবারের প্রতিবেদন সেই বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। কারণ, আগে দেখা গেছে যে রাজধানীর তুলনায় দেশের সার্বিক গড় বায়ুমান কিছুটা ভালো থাকত। কিন্তু এবারের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ ও দেশের সবচেয়ে দূষিত নগরী ঢাকার বায়ুর মান প্রায় একই। উভয়ের মান ৭৮।

গত ডিসেম্বর, জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে এক দিনও নির্মল বায়ু পাননি রাজধানীবাসী। চলতি মাসেরও একই হাল।

রাজধানী ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উৎসগুলোর মধ্যে আছে কলকারখানা ও যানবাহনের দূষিত ধোঁয়া, ইটভাটা, বর্জ্য পোড়ানো। দূষণ রোধে হাঁকডাক ও নানা ধরনের প্রকল্পও কম হয়নি সরকারি স্তরে, কিন্তু দূষণ কমছে না।

দূষণসংক্রান্ত বিষয় নিয়ে গবেষণাপ্রতিষ্ঠান ক্যাপসের এক জরিপে দেখা গেছে, ডিসেম্বরে যত বায়ুদূষণ ছিল, তা গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ। আবার গত জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতেও দূষণের মান ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।

ঢাকার বায়ুদূষণের প্রধান উপাদান হলো বাতাসে অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা বা পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি। ঢাকার বাতাসে এর উপস্থিতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মানমাত্রার চেয়ে ১৭ গুণ বেশি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ৪৪১ কোটি টাকা লভ্যাংশ দেবে লাফার্জহোলসিম
  • ঢাকার বাতাস আজ ছুটির দিনেও অস্বাস্থ্যকর
  • বাজেটে ৫৩ হাজার কোটি টাকার কাটছাঁট
  • দেশে কোটিপতি আমানতকারী বাড়ছে
  • যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে ভারতীয় মার্কিনরা উদ্বিগ্ন
  • ঢাকার চেয়ে আজ দেশের ৪ বিভাগীয় শহরে বায়ুদূষণ অনেক বেশি
  • ইস্টার্ন ব্যাংকের পর্ষদ সভা ২০ মার্চ
  • ঢাকার চেয়েও আজ সকালে সিলেটের বায়ুর মান খারাপ
  • দেশে বায়ুদূষণ আরও বিস্তৃত হচ্ছে
  • ইবিতে আওয়ামীপন্থিদের অংশগ্রহণে ভর্তি কমিটির সভায় বাঁধা