অন্তঃসত্ত্বা নারীর ব্যথা ও স্নায়ুর সমস্যা
Published: 11th, February 2025 GMT
গর্ভকালীন সেবা নারীর প্রজনন স্বাস্থ্যের অপরিহার্য অংশ। গর্ভাবস্থায় নারীদের প্রায়ই হাড়, মাংসপেশি, অস্থিসন্ধি, স্নায়ুসংক্রান্ত নানা সমস্যা ও জটিলতা পরিলক্ষিত হয়। ফলে একজন মা শারীরিক ও মানসিকভাবে অনেকটাই ভোগেন। তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় ওষুধের ব্যবহারের সুযোগ সীমিত। তাই ব্যথা–বেদনা কমাতে এ অবস্থায় রিহ্যাবিলিটেশন মেডিসিন একটি কার্যকর চিকিৎসাপদ্ধতি।
প্রথম তিন মাস পিঠ, কোমর বা পায়ে ব্যথা হতে পারে। ক্লান্তিবোধ হয়। দ্বিতীয় তিন মাসে হাত ও আঙুলে ঝিঁঝিঁ ধরা, অবশ হয়ে যাওয়া, অস্থিসন্ধিতে ব্যথা অনুভব বেশি দেখা দেয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে প্রথম তিন মাসের সমস্যা, দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় তিন মাসেও অব্যাহত থাকতে পারে।
কারণ
হরমোনের কারণে সন্ধিগুলো শিথিল হয়ে আসা।
জরায়ু বৃদ্ধির জন্য মেরুদণ্ডের বক্রতার পরিবর্তন হওয়া।
ওজন বেড়ে যাওয়া।
নার্ভের ওপর অতিরিক্ত চাপ।
ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি–এর অভাব।
চিকিৎসার উদ্দেশ্য
মায়েদের শারীরিক সক্ষমতা বাড়ানো।
প্রসবের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা।
গর্ভকালীন বিভিন্ন স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানো।
স্বাস্থ্য জটিলতার চিকিৎসা করা।
নিরাপদ মাতৃত্ব।
প্রসবকালীন ও প্রসব–পরবর্তী জটিলতা হ্রাস।
করণীয়
গর্ভাবস্থায় ওষুধের ব্যবহার সীমিত থাকলেও চিকিৎসকের পরামর্শে আয়রন, ফলিক অ্যাসিড, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন ডি ট্যাবলেট খাওয়া যাবে।
নিয়মিত শারীরিক অনুশীলন গুরুত্বপূর্ণ।
স্বাভাবিক কাজকর্মের পাশাপাশি দৈনিক ২০-৩০ মিনিট করে সপ্তাহে ৫ দিন হাঁটার চেষ্টা করুন।
প্রতিবেলায় গর্ভ–পূর্ববর্তী খাবারের চেয়ে একটু বেশি ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে।
ভিটামিন সি–যুক্ত খাবার ও আয়োডিনযুক্ত লবণ খেতে হবে।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম (দুপুরে খাবারের পর ২ ঘণ্টা ও রাতে ৬-৮ ঘণ্টা) নিতে হবে।
শারীরিক ও মানসিক চাপ কমাতে হবে।
ভারী কাজ করা নিষেধ। তবে দৈনন্দিন কাজকর্মে বাধা নেই।
পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে।
সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলতে হবে। এক পাশে ফিরে ঘুমানোর অভ্যাস করুন।
সতর্কতা
চলাফেরায় তাড়াহুড়া করবেন না। তীব্র মাত্রার কোনো শারীরিক অনুশীলন করবেন না। কোনোক্রমেই পেটে ঠান্ডা বা গরম সেঁক অথবা কোনো ম্যাসাজ করবেন না। হাই হিল জুতা পরবেন না।
প্রশান্ত কুমার চক্রবর্তী, ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন, বিশেষজ্ঞ, আলোক মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার, মিরপুর ৬, ঢাকা
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মহাকাশ বিজ্ঞানে শিশু-কিশোরদের সাফল্য
রহস্যময় মহাকাশ বিজ্ঞানের প্রতি শিশু-কিশোরদের আগ্রহী করে তোলার উদ্দেশ্যে স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের উদ্যোগে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কিডস স্পেস ক্যাম্প উদযাপন করে।
রাজধানীতে অবস্থিত আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশে (এআইইউবি) স্পেস ক্যাম্পের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
সারাদেশের ৮৫টি স্কুলের শিশু-কিশোররা এতে অংশ নেয়। মহাকাশ প্রযুক্তি, রোবটিকস, রকেট সায়েন্স ও অ্যাস্ট্রোনট প্রশিক্ষণের মতো ভিন্নধর্মী কার্যক্রমের মাধ্যমে শিশু-কিশোররা শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা গ্রহণ করে। অভিজ্ঞ মিশন কন্ট্রোলারদের সহযোগিতায় শিশু-কিশোররা মডেল রকেট তৈরি ও উৎক্ষেপণ, স্পেস রোবট তৈরি ও প্রোগ্রামিং, টেলিস্কোপ তৈরি ও মহাকাশ পর্যবেক্ষণ, মঙ্গল ও চাঁদের জন্য কলনি ডিজাইন, ভিআর বেইসড অ্যাস্ট্রোনট প্রশিক্ষণ ছিল অন্যতম। শিশু-কিশোরদের টিম মার্স কলোনি তৈরির সঙ্গে নিজের গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছে।
প্রতিষ্ঠাতা সদস্য (এআইইউবি) ও বোর্ড অব ট্রাস্টির ভাইস চেয়ারম্যান ড. হাসানুল এ হাসান বলেন, আমাদের দেশে এমন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, শিশু-কিশোররা আজকের কর্মশালায় যে ধরনের কাযক্রম করেছে, তা তাদের সৃজনশীলতা ও কৌতূহলকে উৎসাহিত করবে। এমন উদ্যোগ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী ও মহাকাশ গবেষক তৈরিতে সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে।
যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের ইকোনমিক অফিসার জেমস গার্ডিনার বলেন, স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্প এমন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে, যেখানে শিশু-কিশোররা মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে ছোট বয়স থেকেই তাদের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের বিজ্ঞানী, গবেষক ও নভোচারী। তারা এখানে নতুন কিছু শেখা, আবিষ্কার ও নিজেদের কল্পনাশক্তিকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার সুযোগ পেয়েছে, যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
স্পেস ইনোভেশন ক্যাম্পের সভাপতি বলেন, আগামী দিনে শিশু-কিশোরদের জন্য আরও নিত্যনতুন উদ্যোগ নিয়ে আসা, যাতে তারা শিখতে পারে, আবিষ্কার করতে পারে ও নিজের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে পারে– এটাই উদ্যোগের লক্ষ্য।