গারো পাহাড় সীমান্ত এলাকা থেকে সোয়া কোটি টাকার ভারতীয় জিরা, চিনি ও ফেনসিডিল জব্দ
Published: 11th, February 2025 GMT
শেরপুরের নালিতাবাড়ী, ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট ও ধোবাউড়া উপজেলার সীমান্তঘেঁষা গারো পাহাড় এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় জিরা, চিনি ও ফেনসিডিল জব্দ করেছে বিজিবি।
গতকাল সোমবার ও আজ মঙ্গলবার বিজিবি-৩৯ ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের তিনটি টহল দল অভিযান চালিয়ে এগুলো জব্দ করে। জব্দ করা জিরা, চিনি ও ফেনসিডিলের মূল্য ১ কোটি ২৬ লাখ ৭১ হাজার ৩০০ টাকা বলে বিজিবি জানিয়েছে।
মঙ্গলবার বিজিবি-৩৯ ময়মনসিংহ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মাদ সানবীর হাসান মজুমদার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানান।
বিজিবির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আজ ভোরে বিজিবি অধিনায়কের নেতৃত্বে হালুয়াঘাটের আইলাতলী বিওপির রাংরাপাড়া সীমান্ত এলাকা থেকে একটি কাভার্ড ভ্যান ভর্তি ৩ হাজার ৮৪০ কেজি ভারতীয় জিরা, সোমবার বান্দরকাটার বেলতলী থেকে দুটি সাইকেল, ১৮০ কেজি চিনি, ঘোষগাঁও চন্দ্রকোনা থেকে ৯০ কেজি চিনি ও নালিতাবাড়ী উপজেলার রামচন্দ্রকুড়া ইউনিয়নের পানিহাটা এলাকা থেকে ২২ বোতল ফেনসিডিল জব্দ করা হয়। চোরাকারবারিরা অভিনব পন্থায় এসব ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশে পাচারের চেষ্টা করছিল। তবে অভিযানকালে বিজিবির উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা কৌশলে পালিয়ে যায় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গলা কেটে স্বামীকে হত্যা: স্ত্রী ও প্রেমিকের আমৃত্যু কারাদণ্ড
ময়মনসিংহে অনৈতিক সম্পর্কের জেরে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রী হাফিজা খাতুন ও আব্দুল্লাল আল মামুন নামে একজনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল সোমবার অতিরিক্ত দায়রা জজ পঞ্চম আদালতের বিচারক আলী মুনসুর এ রায় ঘোষণা দেন। এ সময় দুই আসামিকে উভয়কে ১ লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, বিয়ের পর স্ত্রীকে দেশে রেখে হেলাল উদ্দিন দুবাই পাড়ি জমান। এ সময়ে অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন স্ত্রী। এক পর্যায়ে হেলাল দেশে ফিরে প্রবাস থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চাইলে তাদের সর্ম্পকের অবনতি হয়। ২০১১ সালের ২৮ জুন মুক্তাগাছার ভাবকী এলাকার এ প্রবাসীকে হত্যা করে স্ত্রী হাফিজা ও আব্দুল্লাহ আল মামুন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৪ বছর আগে হেলালের সঙ্গে বিয়ে হয় একই উপজেলার নন্দিবাড়ি গ্রামের হাফিজার। ছয় মাসের মাথায় তাদের সর্ম্পকের অবনতি হলে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে সালিশের মাধ্যমে ফের তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। দ্বিতীয়বার বিয়ের পর তারা হাফিজার বাবার বাড়ি নন্দিবাড়িতে বসবাস করতেন। তাদের সংসারে দুই মেয়ে সন্তান রয়েছে। হেলাল দুবাই চলে যাওয়ার পর বিদেশ থেকে স্বামীর পাঠানো টাকা বেহিসাবি খরচ করতে শুরু করে হাফিজা। তার পরিবার বাধা দিলে একটি এনজিওতে চাকরি নেয়। একসঙ্গে চাকরির সুবাদে আব্দুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পকেও জড়িয়ে পড়ে। বিদেশ থেকে ফিরে তার স্বামী টাকার হিসাবে চাওয়ায় তাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এক পর্যায়ে তারা হেলালকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে গলা কেটে খুনের পর ডাকাতি বলে প্রচার করে।
নন্দিবাড়ি গ্রামে বসতবাড়ি থেকে হেলালের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এতে তাঁর বোন সাফিয়া আক্তারের সন্দেহ হয়, স্ত্রী এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন মিলে তাঁর ভাইয়ের টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করার জন্য ঘুমন্ত অবস্থায় গলা কেটে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় মুক্তাগাছা থানায় মামলা করেন তিনি।
দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালতে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় মুক্তাগাছার ভাবকী এলাকার হাফিজা এবং ময়মনসিংহের চর ঘাঘরা এলাকার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দেন। রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতের এপিপি মো. শামীম উল আজম খান লিসন।
উভয়কে ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ডও দেওয়া হয়েছে। হাফিজা রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিল। তবে আব্দুল্লাহ আল মামুন পলাতক রয়েছে। আরেক আসামি আরমান মারা যাওয়ায় আগেই মামলা থেকে তাকে অব্যহতি দেওয়া হয়।