বাংলাদেশের চাওয়ায় সাড়া দিয়ে ভারত শেখ হাসিনাকে ফেরত দেবে কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, এখন ভারতের যে মনোভঙ্গি, এটি দেখে মনে হচ্ছে, তারা নানা অজুহাতে এটিকে (শেখ হাসিনাকে ফেরত) নাকচ করার চেষ্টা করবে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অধ্যাপক আসিফ নজরুল এ কথা বলেন। জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজের অগ্রগতিসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্দী প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ করতে বলা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন আইন উপদেষ্টা। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই আইনে (আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন) পলাতকদের বিচারের বিধান রয়েছে। সাধারণ খুনের ক্ষেত্রেও রয়েছে। আমরা তো আনার সর্বাত্মক চেষ্টা করছি। এখন ভারতের যে মনোভঙ্গি, এটা দেখে মনে হচ্ছে, তারা নানান অজুহাতে এটিকে নাকচ করার চেষ্টা করবে।’

তারা (ভারত) শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিয়ে তাঁকে অবাধে বাংলাদেশ সম্পর্কে কুৎসামূলক, উসকানিমূলক, বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলতে দিয়ে বরং বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ‘তাতে আমাদের মনে হয় না এই আইনটি (চুক্তি) সরল বিশ্বাসে প্রতিপালন করার ইচ্ছা তাদের রয়েছে। আমরা আমাদের দাবি জানাতে থাকব,’ বলেন তিনি।

আরও পড়ুনতিন থেকে চারটি মামলার রায় অক্টোবরের মধ্যে, আশা আইন উপদেষ্টার১ ঘণ্টা আগে

সংবাদ সম্মেলনে জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচারকাজের অগ্রগতি তুলে ধরে আইন উপদেষ্টা বলেন, আগামী অক্টোবরের মধ্যে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল থেকে তিন-চারটি মামলার রায় পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা করছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আইন উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে ইরানের সঙ্গে চীন ও রাশিয়ার বৈঠক

চীন, রাশিয়া ও ইরানের কূটনীতিকদের মধ্যে আজ শুক্রবার বৈঠক হয়েছে। বেইজিংয়ের আশা, এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে স্থবির হয়ে থাকা আলোচনা নতুন করে শুরু করা যাবে। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০১৫ সালে চীন, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক চুক্তিতে সই করেছিল ইরান। এ চুক্তির মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিনিময়ে ইরান তার পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করতে সম্মত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথম মেয়াদে দায়িত্বপালনকালে ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেন। তিনি নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করেন।

ওয়াশিংটনের সরে যাওয়ার পরও এক বছর ধরে তেহরান ওই চুক্তি মেনে চলেছিল। পরে তারাও তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসতে শুরু করে। চুক্তিটি পুনরুজ্জীবিত করার প্রচেষ্টা তখন থেকে ভেস্তে যায়।

বেইজিং বলেছে, তারা আশা করে, কম সময়ের মধ্যে ওই আলোচনা নতুন করে শুরু করতে যে তৎপরতার প্রয়োজন, তা আজকের আলোচনার মধ্য দিয়ে দৃঢ় হবে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিসিটিভিতে এ বৈঠক সম্পর্কে বলা হয়, তিন কূটনীতিক ইরানের পারমাণবিক ইস্যু এবং অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ইস্যুতে পারস্পরিক দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করেছেন। চীনের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী মা ঝাওজু, রুশ উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কাজেম গারিবাবাদি।

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমটিতে এ আলোচনার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।

ট্রাম্প গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন।

ইরানের সঙ্গে নতুন করে আলোচনা শুরুর আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকা অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় অংশ নিতে রাজি নয় তেহরান।

চলতি সপ্তাহে ট্রাম্প ইরানকে পারমাণবিক আলোচনার আহ্বান জানিয়ে একটি চিঠি দিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ইরান প্রত্যাখ্যান করলে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে।

গতকাল বৃহস্পতিবার তেহরান বলেছে, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বরাবর লেখা চিঠিটি তারা এখন পর্যালোচনা করছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি গতকাল দেশটির সরকারের আনুষ্ঠানিক সংবাদপত্রকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের উচিত, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া।’

আরাগচি আরও বলেন, চাপ ও হুমকিমুক্ত থাকলে এবং জনগণের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষার নিশ্চয়তা পেলেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসবেন তাঁরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ