ব্রিটিশ পপ গায়ক এড শিরানকে নিজের স্কুটির পেছনে বসিয়ে বাড়ির দিকে যাচ্ছেন সংগীতশিল্পী অরিজিৎ সিং। অবাক দৃষ্টিতে দৃশ্যটি দেখছেন পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার প্রত্যন্ত জিয়াগঞ্জ গ্রামের মানুষ। পড়ন্ত বিকেলে ভাগীরথী নদীতে অরিজিৎ এবং এড শিরানের নৌকা বিহারের সাক্ষী হলেন যমজ শহর জিয়াগঞ্জ-আজিমগঞ্জের অসংখ্য মানুষ।

কয়েক দিন আগে ভারত সফরে এসেছেন বিখ্যাত গায়ক এড শিরান। ম্যাঙ্গালুরুতে অনুষ্ঠান সেরে বন্ধু অরিজিতের টানে প্রথমে কলকাতা, সেখান থেকে সোজা জিয়াগঞ্জে বন্ধুর বাড়িতে পৌঁছান এই গায়ক। চমকপ্রদ এই দৃশ্য মুর্শিদাবাদের মানুষ দেখলেন অরিজিতের বদৌলতে; তা নিয়ে উচ্ছ্বসিত মুর্শিদাবাদের অরিজিৎ ভক্তরা।

গতকাল সকালে ব্রিটিশ পপস্টার এড শিরান ও তার টিম অরিজিৎ সিংয়ের জিয়াগঞ্জের বাড়িতে পৌঁছান। এসময় বাড়ির গেটের বাইরে দাঁড়িয়েছিলেন অরিজিৎ। এড শিরানকে পেয়ে বুকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। এরপর সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে নিজের অফিস ঘরে নিয়ে যান শিরান ও তার টিমকে। বিকেলে নিজের স্কুটিতে এড শিরানকে বসিয়ে বেরিয়ে পড়েন অরিজিৎ।

পরে ভাগীরথীর পাড়ে শিবতলা ঘাটে দু’জনে কিছুক্ষণ সময় কাটান। জিয়াগঞ্জের এই শিবতলা ঘাটে অরিজিৎ সিংয়ের কৈশোর ও যৌবনের অনেকটা সময় কেটেছে। সেই কারণে জিয়াগঞ্জের বাড়িতে থাকলে সন্ধ্যার পর স্থানীয় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেন অরিজিৎ। এদিন বিকেলে শিবতলা ঘাট থেকে একসঙ্গে ভাগীরথী বক্ষে নৌকা ভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন শিরান ও অরিজিৎ। প্রায় এক ঘণ্টা নৌকা ভ্রমণ করে বাড়িতে ফিরেন।

জিয়াগঞ্জের বাসিন্দা বিপ্লব গোস্বামী বলেন, “শিবতলা ঘাট এলাকায় দাঁড়িয়ে রয়েছি। দেখিলাম স্কুটিতে আসছেন অরিজিৎ। পিছনে বসে রয়েছেন চেনা মুখ পপ গায়ক এড শিরান। দুজন একসুরে গাউছেন। বহু ভাগ্যে এই দৃশ্যের সাক্ষী থাকলাম।”

স্থানীয় বাসিন্দা সৌকত সিং বলেন, “দাদাকে জিয়াগঞ্জে বহুবার স্কুটি চালাতে দেখেছি। কিন্তু এড শিরানকে সঙ্গে নিয়ে স্কুটিতে আর দেখার সৌভাগ্য হবে না।”

ঢাকা/সুচরিতা/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে আমার বিরুদ্ধে: টিউলিপ

বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার’ চালানো হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনের হ্যাম্পস্টিড অ্যান্ড হাইগেট আসনের এমপি ও ও সাবেক ‘সিটি মিনিস্টার’ বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, আপনারা বুঝবেন যে, এই রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচারকে কোনো প্রসঙ্গ বা মন্তব্যের মাধ্যমে আমি বিশেষ গুরুত্ব দিতে পারি না। এটা পুরোপুরি আমাকে হয়রানি করার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার। এমন কোনো প্রমাণ নেই যে আমি ভুল কিছু করেছি।’ খবর-বিবিসি

বাংলাদেশে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির বিষয়ে সোমবার লন্ডনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি বলেন, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষগুলোর কেউ আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। পুরোটা সময় তারা মিডিয়া ট্রায়াল চালিয়েছে। আমার আইনজীবীরা উদ্যোগী হয়ে বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখেছিলেন। তবে তারা কখনও এর জবাব দেয়নি।’

প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা তিনটি মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা পৃথক তিন মামলার অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে রোববার এ আদেশ দেন ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ জাকির হোসেন গালিব। আদালতে দুদকের প্রসিকিউশন বিভাগের সহকারী পরিচালক আমিনুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আসামিদের গ্রেপ্তার করা গেল কিনা, সে-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য ২৭ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আদালত। ১০ কাঠা প্লট নেওয়ার অন্য অভিযোগে শেখ রেহানার মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের একজন সহকারী পরিচালক। মামলায় শেখ হাসিনা, টিউলিপসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। 

এর আগে জানুয়ারির মাঝামাঝিতে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক। তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ছিলেন। দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।

গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, টিউলিপের খালা বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্কের বিষয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠায় টিউলিপ সিদ্দিক মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

সম্প্রতি টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অর্থনৈতিক অসঙ্গতির অভিযোগ উঠে। এরপর নিজের বিরুদ্ধে ব্রিটিশ মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগকে তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। পরবর্তীতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেন মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস।

টিউলিপ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের কাছে তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। তবে এতে তিনি উল্লেখ করেছেন, তার বিরুদ্ধে যে তদন্ত হয়েছে সেখানে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস তার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি। কেয়ার স্টারমার অফিসিয়াল চিঠিতে টিউলিপ সিদ্দিককে বলেন, ‘আপনার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার সময় এটা পরিষ্কার করতে চাই যে, মিনিস্ট্রিয়াল ওয়াচডগের উপদেষ্টা লরি ম্যাগনাস আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- তিনি আপনার বিরুদ্ধে মন্ত্রিত্বের নীতি ভঙ্গের কোনো প্রমাণ পাননি এবং আর্থিক অসঙ্গতির কোনো প্রমাণ খুঁজে পাননি।’ 

সম্পর্কিত নিবন্ধ