নড়াইলে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার ২৪ ঘণ্টা পার হতে না হতেই স্থগিত করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কৃষক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল হাসান বাবুলের সই করা বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। জেলা কৃষক দলের নতুন আহ্বায়ক হিমায়েত হুসাইন ফারুকের বিরুদ্ধে কৃষক লীগের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে কমিটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার নড়াইল জেলা কৃষক দলের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এতে নড়াইল সদর উপজেলার বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান হিমায়েত হুসাইন ফারুককে আহ্বায়ক, শোয়েব মিনাকে সদস্য সচিব ও ইঞ্জিনিয়ার রবিউল ইসলাম রুবেলকে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। কমিটি ঘোষণার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কয়েকটি ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। যেখানে দেখা যায়, গত পবিত্র ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে ঈদ শুভেচ্ছা জানান ঘোষিত কমিটির আহ্বায়ক ফারুক। সেই ছবিতে উপরের দিকে শেখ মুজিবুর রহমান ও সজীব ওয়াজেদ জয়, ডানে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ও নড়াইল-১ আসনের সাবেক এমপি বিএম কবিরুল হক মুক্তির ছবি রয়েছে। ভাইরাল হওয়া আর একটি ছবিতে কৃষক লীগের ব্যানারে মিটিং করতে দেখা যায় হিমায়েত হুসাইন ফারুকে। সেই মিটিংয়ে বেশ কয়েক জন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতা উপস্থিত ছিলেন।
  
জেলা কৃষক দলের সাবেক সদস্য সচিব এনামুল কবীর চন্দন বলেন, বাতিল হওয়া কমিটির আহ্বায়ক হিমায়েত হুসাইন ফারুক ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর। বিষয়টি জানতে পেরে কমিটি বাতিল হয়েছে। তিনি অভিযোগ করেন, নড়াইল-১ আসনের সাবেক এমপি কবিরুল হক মুক্তির আর্শীবাদে ফারুক বিছালী ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তাকে জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক করায় আমরা হতাশ হয়েছিলাম। আগামীতে কমিটি করার সময় ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

এ বিষয়ে জানতে হিমায়েত হুসাইন ফারুকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যাওয়া যায়।

জেলা বিএনপির সভাপতি বিশ্বাস জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হিমায়েত হুসাইন ফারুক আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তা প্রমাণিত হওয়ায় কমিটি স্থগিত হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কম ট হ ম য় ত হ স ইন ফ র ক আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নি‌য়োগ দুর্নীতি-অর্থ আত্মসাৎ: সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে দুদ‌কের হানা

অনিয়ম-দুর্নী‌তির অ‌ভি‌যোগ পে‌য়ে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে অভিযান চা‌লি‌য়ে‌ছে দুর্নী‌তি দমন ক‌মিশন-দুদক।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) অভিযানে হাসপাতা‌লে নি‌য়োগ ও বদ‌লি বা‌ণিজ‌্য এবং অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পে‌য়ে‌ছে দুদক টিম।

হাসপাতালের পরিচালক ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসির (প্রশাসন) সঙ্গে দেখা ক‌রে দুদক টিম। 

আরো পড়ুন:

২০ কোটি টাকা আত্মসাতে সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও তার স্ত্রীর নামে মামলা

সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ের নৈশপ্রহরীর পকেটে মিলল ৪০ হাজার টাকা

সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের জনবল নিয়োগ দুর্নীতিসংক্রান্ত অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন সংগ্রহ করেন তারা। 

সেখানে এক‌টি প্রক‌ল্পের আওতায় বি‌দে‌শে প্রশিক্ষণ কর‌তে গি‌য়ে ৮৫  কর্মকর্তা আর ফি‌রে না আসার তথ্য পেয়েছে দুদক টিম।

অভিযানে হাসপাতালের অভ্যন্তরে বিদ্যমান একটি ব্যাংক, একটি ফার্মেসি ও দুটি ক্যান্টিন পরিচালনায় অনিয়মের প্রাথমিক প্রমাণ পায় দুদক টিম।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা ক‌রে।

অভিযান শে‌ষে দুদক টিম জানায়, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান চালা‌নো হ‌য়ে‌ছে।

তি‌নি জানান, প্রকল্পের অর্থায়নে ১৫৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে প্রশিক্ষণ শেষে এই প্রতিষ্ঠানে অন্তত পাঁচ বছর চাকরি করবেন- এমন শর্তে দক্ষিণ কোরিয়ায় পাঠানো হয়। তবে প্রশিক্ষণ শেষে ৮৫ জন কর্মকর্তা হাসপাতালে যোগ দেননি।

অত্যন্ত অপরিকল্পিতভাবে এবং স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে, কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নন- এমন বিষয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও প্রশিক্ষণের জন্য বিদেশে পাঠানোর তথ্য পেয়েছে অভিযানে যাওয়া দুদক কর্মকর্তারা। অপ্রয়োজনী প্রশিক্ষণে পাঠিয়ে রাষ্ট্রের বিপুল পরিমাণ অর্থের অপচয় করা হয়েছে বলে মনে করছেন তারা।

সুপার স্পেপেশালাইজড হাসাপাতাল প্রকল্প-সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করে কমিশন কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করবে এনফোর্সমেন্ট টিম।

২০২৩ সালের ৩ জুলাই সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের শূন্য পদে জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়; সেখানে ৫২টি পদে ৫৪৪ জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়।

পদগুলোর জন্য নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, কনসালট্যান্ট পদে ৯৬ জন, মেডিকেল অফিসার (মেডিসিন, সার্জারি, গাইনি, অর্থোপেডিকস) পদে ৬০ জন, সিনিয়র স্টাফ নার্স পদে ২২৫ জনবল নেওয়া হবে। বাকি পদগুলোতে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, অতিরিক্ত পরিচালক (অর্থ), পরিচালক (আইটি), টেকনিশিয়ান, টেকনোলজিস্ট নিয়োগের কথা বলা হয়েছিল।

এসব প‌দে নি‌য়োগ নি‌য়েও দুর্নী‌তি হ‌য়ে‌ছে ব‌লে তথ‌্য পে‌য়ে‌ছে দুদক টিম।

স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার সম্পত্তি আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ 
স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানার সম্পত্তি আত্মসাৎসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান‌টি‌তে অ‌ভিযান চা‌লি‌য়ে‌ছে দুদক।

বৃহস্প‌তিবার দুদ‌কের পৃথক একটি এনফোর্সমেন্ট টিম এই অভিযান পরিচালনা ক‌রে।

বৃহস্প‌তিবার দুদ‌কের পৃথক একটি এনফোর্সমেন্ট টিম স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম এতিমখানায় অভিযান পরিচালনা ক‌রে।

অভিযান শে‌ষে দুদক টিম জানায়,  প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গে‌ছে, প্রতিষ্ঠানটি একটি নিবন্ধিত, অলাভজনক স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান, যা সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিবন্ধন নং-২১৯/১৯৬২ অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। 

দুদক জানতে পেরেছে, এতিমখানাটি পরিচালনা করে কার্যকরী পরিষদ, যার সভাপতির পদে নবাব পরিবারের একজন বংশধর থাকেন। বর্তমানে কার্যনির্বাহী পরিষদ না থাকায় ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর একজন প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়, যিনি পরে পদত্যাগ করেন। গত মাসে সেখানে একজন প্রশাসক নিয়োগ করা হয়।

নবাব বংশের দাবিদার খাজা আলী মাদানীর নেতৃত্বে সাত সদস্যের একটি কমিটি নতুনভাবে স্যার সলিমুল্লাহ মুসলিম অরফানেজ সোসাইটি নামে নিবন্ধনের জন্য আবেদন করে। গত ৪ ফেব্রুয়ারি তারা নিবন্ধন পান। 

একই প্রতিষ্ঠান সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে নিবন্ধিত ও প্রশাসক নিযুক্ত থাকার পরও নতুন নিবন্ধন দেওয়ার বিষয়ে যৌথ মূলধনী কোম্পানি ও ফার্মসমূহের পরিদপ্তর থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছে দুদকের আভিযানিক টিম।

অভিযানের সময় অভিযোগ-সংশ্লিষ্ট তথ্য সংগ্রহ করে দুদক টিম। তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে কমিশনে একটি পূর্ণাঙ্গ এনফোর্সমেন্ট প্রতিবেদন দাখিল করবে তারা।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ