ফরিদপুরের সালথা উপজেলার গট্টি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান লাভলুকে (৫৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) দুপুর ১টার দিকে গট্টি ইউনিয়ন পরিষদ এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সালথা থানার ওসি মো. আতাউর রহমান। 

গ্রেপ্তার ইউপি চেয়ারম্যান হামিদুর রহমান লাভলু লক্ষনদিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

আরো পড়ুন:

অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’, ঝিনাইদহে গ্রেপ্তার ৫

নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার ৪০

ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‍“দ্রুত বিচার আইনের মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি হামিদুর রহমান লাভলু চেয়ারম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে ফরিদপুর আদালতে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/তামিম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

ঠিকাদার-এলজিইডির কীর্তিতে আটকা কীর্তিনাশা সেতু

শরীয়তপুরের নড়িয়া-জাজিরা সংযোগ সড়কের কীর্তিনাশা নদীর ওপর সেতুর নির্মাণকাজ আট বছরেও শেষ হয়নি। একাধিক ঠিকাদার পরিবর্তন হলেও সেতুটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি।
জানা যায়, বারবার সময় বাড়ানো, নকশার পরিবর্তন ও জমি অধিগ্রহণের জটিলতার কারণে সেতুর কাজ ধীরগতিতে চলছে। ফলে স্থানীয় জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সেতুর নির্মাণকাজ শেষ না হওয়ায় এলাকার মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে ট্রলার ও নৌকায় নদী পার হচ্ছেন।
নড়িয়া উপজেলা সদর ও জাজিরা উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য ১৯৯৭ সালে কীর্তিনাশা নদীর ওপর ১০৫ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল। অবৈধ বালু উত্তোলন ও নদীভাঙনের কারণে সেতুটি দুর্বল হয়ে পড়ে। ২০১০ সাল থেকেই সেতুর আশপাশের এলাকার পরিবেশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছিল এবং ২০১৫ সালে সেতুটি ব্যবহারের অনুপযোগী ঘোষণা করা হয়। তখন থেকে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চলাচলেও সমস্যা সৃষ্টি হয়। সেতু বন্ধ হওয়ায় স্থানীয়দের চলাচল ব্যাহত হয়। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, রোগী এবং ব্যবসায়ীদের জন্য এটি সমস্যা হয়ে দাঁড়ায়।
২০১৭ সালে নতুন সেতু নির্মাণের জন্য ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়ে নাভানা কনস্ট্রাকশন নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরুর পর দ্রুতই কাজ বন্ধ করে দেয়। ২০১৯ সালে সেতুর নির্মাণকাজ থেকে তারা পুরোপুরি সরে যায়। তখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি মাত্র ৩০ শতাংশ কাজ শেষ করে এবং ৩ কোটি ৪২ লাখ টাকা বিল উত্তোলন করে।
২০২১ সালে এই সেতুর জন্য নতুন করে দরপত্র আহ্বান করা হয় এবং সেতুর দৈর্ঘ্য ১৪৫ মিটার থেকে বাড়িয়ে ৩২২ মিটার করা হয়। সেতুর সঙ্গে একটি ভায়াডাক্টও সংযুক্ত করা হয়। এবার মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ নামের একটি নতুন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ২৮ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটি পায়। ২০২১ সালের ১৫ ডিসেম্বর কার্যাদেশ পাওয়ার পরও প্রতিষ্ঠানটি সেতুর নির্মাণকাজ সঠিক সময়ে শেষ করতে পারেনি। ২০২৩ সালের জুনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে; কিন্তু তারা মাত্র ৫০ শতাংশ কাজ শেষ করতে পেরেছে। এর পর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী সরকারের পতন হলে বর্তমান ঠিকাদারও পালিয়ে যান। পরে এই ঠিকাদারের কাজও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
সেতুর নির্মাণকাজে দীর্ঘসূত্রতার কারণে নড়িয়া ও জাজিরা উপজেলার প্রায় ২০টি ইউনিয়নের লাখো মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। বিশেষ করে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও রোগীরা ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা ও ইসলামী যুব আন্দোলন শরীয়তপুর জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াছ মাহমুদ জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা এই সেতুর জন্য ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। আগে পুরোনো সেতু দিয়ে অন্তত হেঁটে পারাপার করা যেত; কিন্তু বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না রেখেই সেটি ভেঙে ফেলায় তাদের কষ্ট অসহনীয় হয়ে উঠেছে। এর পর সরকারিভাবে বিনামূল্যে নৌকা পারাপারের ব্যবস্থা করা হলেও সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ফলে মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি ঘাট ইজারা নেওয়ার চেষ্টা করছেন শুনেছেন। যদি তা হয়, তবে তাদের ভোগান্তি বহু গুণ বাড়বে। তিনি শিগগির সেতুর কাজ শেষ করার পাশাপাশি বিনামূল্যে নৌকা পারাপার চালুর দাবি জানান।
স্থানীয় বাসিন্দা দিন ইসলাম খান বলেন, এই পথে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক চলাচল করেন। সেতু না থাকায় স্কুল-কলেজের ছাত্রছাত্রী, স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীরা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। এতে নড়িয়া বাজারের ব্যবসায়ীদের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। তাদের বেচাকেনা কমে গেছে। এলজিইডির গাফিলতির কারণে নড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও শহরের জনসাধারণকে বছরের পর বছর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা মালপত্র পরিবহনেও পড়েছেন দুর্ভোগে।
শরীয়তপুর জেলা এলজিইডির প্রকৌশলী রাফিউল ইসলাম বলেন, প্রথমে বাজারের ভেতর দিয়ে সেতুটির নকশা করা হয়েছিল। সেখানে বাজারের কিছু দোকানপাট ভেঙে ফেলতে হলে স্থানীয় বাজার কর্তৃপক্ষ বাধা দেয়। পরে নকশাটি পরিবর্তন করে অন্যদিকে ঘোরানো হয়; কিন্তু সেখানেও কিছু ঘরবাড়ি পড়ায় নতুন জটিলতা তৈরি হয়। এতে সময় নষ্ট হয়। ঠিকাদার শেষ মুহূর্তে কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফলে তাঁর কাজ বাতিলের নোটিশ দিয়েছেন, যা খুব দ্রুত কার্যকর হবে। এর পর নতুন করে টেন্ডার দেওয়া হবে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ