ফেনীতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৬ জন গ্রেপ্তার
Published: 11th, February 2025 GMT
ফেনীতে অপারেশন ‘ডেভিল হান্ট’ অভিযানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১৬ জন নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে আজ মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত জেলার ছয় উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীরা হলেন দাগনভূঞার জায়লস্কর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ শাহজাহান (৬০), দাগনভূঞা পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু নাসের (৬২), রাজাপুর ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ নেতা খাজা মাঈনুদ্দিন চিশতী (৫৫), সেকান্তরপুরের আলাউদ্দিন (৪৭), সোনাগাজীর বাদুরিয়ার মো.
এর আগে সোমবার দুপুরে দাগনভূঞা উপজেলার মাতুভূঞা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের প্রচার সম্পাদক মাহফুজুর রহমান (২৪), ফেনী সদর উপজেলার বালিগাঁও ইউনিয়নের বেতাগাঁও গ্রামের ছাত্রলীগের কর্মী মো. ইসমাঈল (৩০), ফেনী সদর উপজেলা মোটবী ইউনিয়নের মধ্যম লক্ষ্মীপুর গ্রামের ছাত্রলীগের কর্মী সাজ্জাদ আহাম্মদ সায়েমকে (২৩) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
ফেনী মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন বলেন, গ্রেপ্তার ১৬ জনকে ৫ আগস্ট–পরবর্তী ফেনী মডেল থানায় করা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে আজ মঙ্গলবার বিকেলে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাগর–রুনির বাসার নিরাপত্তারক্ষী এনামুল ও পলাশকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে টাস্কফোর্স
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি পশ্চিম রাজাবাজারের যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, সেই বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল ও পলাশ রুদ্র পালকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে চার সদস্যের টাস্কফোর্স। মামলার তদন্তপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত পিবিআইয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
পিবিআইয়ের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, সাগর-রুনি যে বাসায় ভাড়া থাকতেন, সেই বাসার একজন নারী গৃহকর্মীকেও খুঁজছে পিবিআই। এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে তাঁকেও জিজ্ঞাসাবাদ করবে পুলিশ।
সব মিলিয়ে সাগর-রুনি খুনের মামলায় এখন পর্যন্ত মোট আটজন সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁরা হলেন রফিকুল ইসলাম, বকুল মিয়া, আবু সাঈদ, মিন্টু, কামরুল হাসান ওরফে অরুণ, সাগর-রুনির ভাড়া বাসার নিরাপত্তা প্রহরী এনামুল, পলাশ রুদ্র পাল এবং রুনির কথিত বন্ধু তানভীর রহমান। তাঁদের মধ্যে প্রথম পাঁচজনই মহাখালীর বক্ষব্যাধি হাসপাতালের চিকিৎসক নারায়ণ চন্দ্র হত্যার ঘটনায় র্যাব ও গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। পরে তাঁদের সাগর-রুনি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। বর্তমানে তানভীর, পলাশ রুদ্র জামিনে মুক্ত আছেন। অন্যদিকে মিন্টু এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলেও অন্য মামলায় কারাগারে আছেন।
২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারের ভাড়া বাসায় এই সাংবাদিক দম্পতি নৃশংসভাবে খুন হন। সাগর মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক ছিলেন। রুনি ছিলেন এটিএন বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক।
সাগর-রুনি হত্যার ঘটনায় রুনির ভাই নওশের আলম বাদী হয়ে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন। প্রথমে এ মামলা তদন্ত করছিল শেরেবাংলা নগর থানার পুলিশ। চার দিন পর মামলার তদন্তভার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়।
তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার ৬২ দিনের মাথায় ২০১২ সালের ১৮ এপ্রিল হাইকোর্টে ব্যর্থতা স্বীকার করে ডিবি। এরপর আদালত র্যাবকে মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। তখন থেকে মামলাটির তদন্ত করছিল র্যাব। সর্বশেষ গত বছরের ১৫ অক্টোবর মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমার দিন ধার্য ছিল; কিন্তু প্রতিবেদন জমা দেয়নি র্যাব। র্যাবের তদন্তকালে প্রতিবেদন জমার তারিখ পেছায় ১১২ বার। দীর্ঘ সময় পার হলেও তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি তারা।
গত বছরের ২৩ অক্টোবর এ মামলার তদন্তে চার সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। টাস্কফোর্সকে মামলার তদন্ত ছয় মাসের মধ্যে শেষ করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়। গত ৪ নভেম্বর র্যাবের কাছ থেকে মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছে পিবিআই।
২০১৭ সালের ১৫ মার্চ র্যাবের পক্ষ থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে সর্বশেষ অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ঘটনার একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শী মাহিরের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে আটজনকে।
র্যাব আরও জানিয়েছিল, তখন ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ডিএনএ নমুনা পাঠানো হয় যুক্তরাষ্ট্রের ফরেনসিক ল্যাবে। ডিএনএ প্রতিবেদনে ঘটনাস্থলে অজ্ঞাত দুই পুরুষের উপস্থিতির প্রমাণ পাওয়া যায়। তাঁদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।
টাস্কফোর্সের প্রধান ও পিবিআইয়ের প্রধান মো. মোস্তফা কামাল প্রথম আলোকে বলেন, খুনের রহস্য উদ্ঘাটন হওয়ার মতো এখন পর্যন্ত কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষ করে প্রতিবেদন দিতে টাস্কফোর্স আদালতের নির্দেশমতো কাজ করছে।
আরও পড়ুনসাগর-রুনি হত্যার ১৩ বছর: ৬ বছর মামলার কার্যত কোনো তদন্ত হয়নি ১৫ ঘণ্টা আগে