বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপে দ্বিতীয়বার দখলমুক্ত হলো খুলনা বিভাগীয় অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ। মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. হুসেইন শওকতকে সংগঠনটির প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তাকে ১২০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করে নির্বাচিত কমিটির কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গত ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ ব্যবসায়ীদের বের করে দিয়ে সংগঠনটির দখল করেন বিএনপি সমর্থিত কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা ১১ সদস্যের এডহক কমিটি গঠন করেন, যার নেতৃত্বে ছিলেন আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগীরা। কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাদের পুনর্বাসনের মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকার লেনদেন হয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিষয়টি নিয়ে ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়। যার প্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংগঠনটিতে প্রশাসক নিয়োগ করল।

ব্যবসায়ীরা জানান, গত ১৫ বছর বাণিজ্যিক সংগঠন অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন মালিক গ্রুপ ছিল শেখ পরিবারের নিয়ন্ত্রণে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সাধারণ সদস্যরা শেখ সোহেলের নেতৃত্বাধীন কমিটির সবাইকে পদত্যাগে বাধ্য করান। পরবর্তীতে সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে গঠন করা হয় পাঁচ সদস্যের এডহক কমিটি। প্রবীণ দল নিরপেক্ষ ব্যবসায়ীরাই ছিলেন এডহক কমিটির সদস্য। তারা নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করেন। কিন্তু আদালতের নির্দেশে নির্বাচন স্থগিত হয়ে যায়।

আরো পড়ুন:

‘মোংলা বন্দরকে আঞ্চলিক বাণিজ্যের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে’

নরওয়ের সাথে সরাসরি নৌযোগাযোগ স্থাপনের আহ্বান

গত ২৯ ডিসেম্বর কিছু ছাত্ররা এসে সাধারণ সদস্যদের গঠিত কমিটি ভেঙে দেন। পরে শেখ জহির, কাজী রাহাতসহ বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীরা কার্যালয়টির দখল করে ১১ সদস্যের কমিটি করে দেন। এডহক কমিটির আহ্বায়ক করা হয় শেখ হাসিনার চাচাত ভাই শেখ সোহেলের নেতৃত্বধীন কমিটির ১ নম্বর পরিচালক এস এম আকবর হোসেনকে। ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় আওয়ামী লীগের অন্যতম সুবিধাভোগী ও শেখ হেলালের বন্ধু পরিচয় দেওয়া নজরুল ইসলামের ভাই এসএম রফিকুল ইসলামকে। ৫ নম্বর সদস্য কাজী গোলাম ফারুক এর আগে শেখ সোহেলের নেতৃত্বাধীন পরিষদের যুগ্ম মহাসচিব এবং ৬ নম্বর সদস্য সঞ্জীব দাস ওই কমিটির কোষাধ্যক্ষ ছিলেন। কমিটির সদস্য সচিব এসএম আজহার আলী ছিলেন সংগঠনের বেতনভুক্ত সচিব। ওই সময় সাবেক মহাসচিব অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। 

অভিযোগ রয়েছে, আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী এসব ব্যবসায়ীর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের কমিটিতে পুনর্বাসন করা হয়। এই টাকার একটি অংশ একটি রাজনৈতিক দলের শীর্ষ এক নেতাও পেয়েছেন। সাধারণ ব্যবসায়ীরা এই কমিটির বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে দখলে জড়িতরা জোর করে কার্যক্রম চালাতে থাকেন। কেউ যাতে কার্যালয়ে ঢুকতে না পারেন এজন্য উঠতি মাস্তানদের দিয়ে পাহারা বসানো হয়। ব্যবসায়ীরা মালিক সমিতিতে গেলে তাদের লাঞ্চিত করার ঘটনাও ঘটে। কার্যালয়ের ভেতরে মদ ও মাদক সেবনসহ নানা অসামাজিক কার্যকলাপ হতে থাকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন, গত দুই মাসে নৌপরিবহন ব্যবসায়ীরা যে ধরনের নির্যাতন সহ্য করেছেন, আওয়ামী লীগের গত ১৫ বছরে তা হয়নি। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অনেক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হয়েছে। প্রশাসক নিয়োগের মাধ্যমে এর পরিত্রাণ হবে বলে আশা করছেন তারা। 

খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো.

হুসেইন শওকত জানান, মন্ত্রণালয়ের চিঠি এখনো হাতে পাননি। পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন পথ ব যবস য় র র সদস য কম ট র স গঠন আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে বর্ষবরণে শিশু-কিশোরদের ঘুড়ি উৎসব

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড়ে শিশু-কিশোরদের নিয়ে ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলে সদর উপজেলার জগদল উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই উৎসবের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ষড়ঋতু। 

উৎসবে প্রায় ২০০ শিশু-কিশোর অংশ নেয়। রং-বেরঙের ঘুড়ি ও নাটাই হাতে নিয়ে জগদল উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে আসেন তারা। প্রজাপতি, চিল, ঈগল ও মাছ আকৃতির ঘুড়ি আকাশে উড়ায় তারা। যার ঘুড়ি বেশি সময় আকাশে থেকেছে তাকে দেওয়া হয় পুরষ্কার। উৎসবকে আরো আনন্দময় করে তুলতে আয়োজন করা হয়েছিল লোকজ সঙ্গীতের। 

ঘুড়ি উৎসব ছাড়াও ষড়ঋতু সংগঠনটি বিভিন্ন গ্রামীণ খেলাধুলার আয়োজন করেছিল। এসব খেলা দেখতে ভিড় করেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। 

আরো পড়ুন:

ডিআরইউতে বর্ণিল আয়োজনে বাংলা নববর্ষ উদযাপিত

বৈশাখে চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীদের উচ্ছ্বাস 

ষড়ঋতু সংগঠনটির সভাপতি রহিম আব্দুর রহিম বলেন, “আমাদের শৈশব কেটেছে ঘুড়ি উড়িয়ে। বারো মাস আমরা ঘুড়ি উড়াতাম। এখন শিশু-কিশোররা মোবাইলে আসক্ত। তাদের মধ্যে ঘুড়ি উড়ানোর আনন্দ ছড়িয়ে দিতেই আমাদের এই আয়োজন। শিশু-কিশোররা দারুন উপভোগ করেছে এই ঘুড়ি উৎসব।” 

তিনি আরো বলেন, “ঘুড়ি উৎসব উদযাপন আবহমান গ্রামীণ বাংলার একটি ঐহিত্য। এ উৎসব আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নিজেরাও শৈশবে ফিরে গেছি। ছোট বেলার কথা মনে পড়েছে, যখন এক টাকায় একটি রঙিন ঘুড়ি কিনতাম এবং একজন আরেকজনের ঘুড়ি কেটে দিতাম। এখন এই নীল আকাশে বেগুনি, নীল, সাদা রঙের ঘুড়ি উড়তে দেখে ভালোই লেগেছে।”

এদিকে, বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন লাঠি ও হা-ডু-ডুসহ গ্রামীণ খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

ঢাকা/নাঈম/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আন্তর্জাতিক ই-স্পোর্টস ইভেন্টে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে ভেনম ইস্পোর্টস
  • শিল্পে গ্যাসের নতুন মূল্যহার বৈষম্যমূলক
  • কুয়েট শিক্ষার্থীদের নামে মামলা এবং বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবি গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের
  • শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে জবি উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে ছাত্র অধিকার পরিষদ
  • পঞ্চগড়ে বর্ষবরণে শিশু-কিশোরদের ঘুড়ি উৎসব
  • নানা আয়োজনে উদীচীর চৈত্রসংক্রান্তি উদ্‌যাপন
  • সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত, অপেক্ষা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের
  • সয়াবিন তেলের লিটারে ১৪ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত, অপেক্ষা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের