দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহারের পর এবার তাঁর দপ্তর পরিবর্তন করা হয়েছে। গতকাল সোমবার দুদকের উপপরিচালক আজিজুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল কাজী সায়েমুজ্জামানকে বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিসংক্রান্ত অনুসন্ধান ও মামলার তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে প্রত্যাহার করা হয়। এখন তাঁকে জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা (এনআইএস) ও ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন এগেইনস্ট করাপশনের (ইউএনসিএসি) ফোকাল পয়েন্টের পরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) আক্তার হোসেন দুদক কার্যালয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতি নিয়ে যে অনুসন্ধান চলছে, তদারককারী কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারের কারণে সেটা বিঘ্নিত হবে না।

গতকাল সংবাদ সম্মেলনে আক্তার হোসেন বলেছিলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের দুর্নীতিসংক্রান্ত অনুসন্ধান ও মামলার তদারককারী কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে কাজী সায়েমুজ্জামানকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসন্ধান ও তদন্তাধীন বিষয় নিয়ে লেখালেখির কারণে তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কোনো বিতর্ক যাতে না হয় সে জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনদায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো দুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানকে১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

এর আগে কাজী সায়েমুজ্জামানের বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দুদকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া কাজী সায়েমুজ্জামানের বিভিন্ন মন্তব্যের বিষয়ে আপত্তি জানানো হয়। চিঠিতে বাংলাদেশ ব্যাংক বলেছে, এ ধরনের মন্তব্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারসংক্রান্ত নীতিমালার পরিপন্থী।

আরও পড়ুনদুদকের পরিচালক কাজী সায়েমুজ্জামানের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নালিশ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চবির শাটলে সিনিয়রকে জুনিয়রদের হামলা, বিচার দাবি

তুচ্ছ ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) শাটল ট্রেনে এক সিনিয়রের ওপর জুনিয়রদের হামলার বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে হামলাকারীদের শাস্তি চেয়ে এ বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীর ব্যাচের শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দেন তারা।

ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শুভংকর দে।

আরো পড়ুন:

অপহৃত শিক্ষার্থীদের বাবা-মাকে গোপন স্থানে ডেকেছে অপহরণকারীরা

খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ শিক্ষার্থীকে অপহরণ

অভিযুক্তরা হলেন, আধুনিক ভাষা ইনস্টিটিউটের (আইএমএল) রোহান তাহিন, সোহেল ও মামুনসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন। তারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। 

লিখিত অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আমরা ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ৫৫তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তুচ্ছ ঘটনায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকাল ৪টা ৪০ মিনিটের শাটলে আমাদের শিক্ষাবর্ষের পদার্থবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী শুভংকর দে এর সঙ্গে চবির আইএমলএল বিভাগের ২০২২-২০২৩ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের তর্ক শুরু হয়। এর একপর্যায়ে শুভংকরের ওপর ওই শিক্ষাবর্ষের রোহান তাহিন, সোহেল, মো. মামুনসহ কয়েকজন মিলে বর্বরোচিত হামলা করে এবং শাটল থেকে মারধর করে নামিয়ে দেয়।”

অভিযোগপত্রে আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে সে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) চিকিৎসাধীন আছে। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। বর্তমানে তার চলমান চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করাও অনিশ্চিত। আমরা আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার তদন্ত সাপেক্ষে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আসাদ নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে লেখেন, “শাটলে সিটে বসার পর পায়ের সঙ্গে পা লাগা নিয়ে ঘটনার সূত্রপাত। এটি নিয়ে দুজনের মধ্যে বাকবিতণ্ডা সৃষ্টি হয়। একপর্যায়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ভাইটি কথা কাটাকাটির মাঝে জুনিয়র ছেলেকে তীব্রভাবে বল প্রয়োগ করলে জুনিয়র ছেলেটিও পাল্টা বলপ্রয়োগ করে। এরপর জুনিয়র ছেলেটির কিছু সহপাঠী এসে সিনিয়র ভাইয়ের ওপর চড়াও হয়। এর মধ্যে দুইজন ছেলে খুবই আক্রমণাত্মক ছিল।”

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “আমাদের কাছে আজ অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা নেবেন।”

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ