বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ বহাল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। নাম পরিবর্তনের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা। দাবির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও।

নাম পুনর্বহাল চাওয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় করে। রংপুর শহরে বেগম রোকেয়ার নামে একটি সরকারি মহিলা কলেজ আছে। একই নামে পাশাপাশি দুটি সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিচয় দিতে অস্বস্তিতে ভোগেন।

তবে নারী জাগরণের অন্যতম অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয় রাখার পক্ষে থাকা শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বলছেন, বেগম রোকেয়ার লেখা ও কর্ম সারা বিশ্বে স্বীকৃত। বেগম রোকেয়ার বাড়ি রংপুরে হওয়ায় তাঁর নামের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় একটি আলাদা মর্যাদা পেয়েছে। নাম পরিবর্তনের দাবির পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল অনেক পুরোনো। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালে ‘রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটির আর শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রংপুরের মানুষের দাবির মুখে ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নামকরণ হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া একাধারে চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর তাঁর জন্ম। ভারতের কলকাতায় ১৯৩২ সালের একই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

যে যুক্তিতে নাম পরিবর্তন চান তাঁরা

নাম পরিবর্তনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব রহমত আলী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শামসুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় শহরে হওয়ায় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বেগম রোকেয়ার নামে বিশেষায়িত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেত। কেননা রংপুর শহরে (পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে) বেগম রোকেয়া সরকারি মহিলা কলেজ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান আছে। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নারীদের উচ্চশিক্ষায় অবদান রেখে চলেছে। একই নামে পাশাপাশি দুটি সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিচয় দিতে অস্বস্তিতে ভোগেন।

সংবাদ সম্মেলনে নামকরণ পুনর্বহালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন২২ ঘণ্টা আগে

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার রহমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই আন্দোলন হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীর চাওয়া নামকরণ পুনর্বহালের। সেই জায়গা থেকে আমরা কোনো ব্যানার গ্রহণ করিনি। দলমত–নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে।’

আরেক শিক্ষার্থী শামসুর রহমানের দাবি, এই আন্দোলন হঠাৎ করে নয়। ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাম পুনর্বহালের আন্দোলন করে আসছেন। কয়েক মাস ধরে স্মারকলিপি, গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, ইউজিসি ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

শামসুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কবর রচনা করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ রংপুরের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মোড়কে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধু একটি নামের মধ্য দিয়ে। আমরা এটার প্রতিবাদ করছি। এখানে ব্যক্তি বেগম রোকেয়াকে কোনোভাবে আনছি না।’

নাম পরিবর্তনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বেগম রোকয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিনা আক্তার মনে করেন, বেগম রোকেয়া সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী বেগম রোকেয়ার নাম বহাল রাখার পক্ষে উল্লেখ করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা  অধ্যাপক ‍মুহাম্মদ ইউনূস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাঁরা বেগম রোকেয়ার লেখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত এবং তাঁকে নিয়ে গবেষণার জন্য দাবি জানান। অথচ উল্টো এখন বেগম রোকেয়াকে নিয়ে আপত্তি তোলা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোয়েব শাহিন গতকালের সংবাদ সম্মেলনের একটি ছবি তাঁর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘আচ্ছা এইগুলো কি ফাজলামি মনে হয় না? কমপ্লিট শাটডাউন দেওয়ার পক্ষে ক’জন, নাম পরিবর্তনের পক্ষ-বিপক্ষ উভয়েই আছে। আর আপনারা দেখি মাঝেমধ্যেই বলেন, কাল থেকেই নাম রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়, আপনাদের হাতে কি বিশ্ববিদ্যালয় তুলে দেওয়া হইছে?’

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব গম র ক য় র ন ম সরক র র ন মকরণ হওয় য়

এছাড়াও পড়ুন:

রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবি নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন নাম ‘রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়’ বহাল চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। নাম পরিবর্তনের এই দাবি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্রসংগঠনের প্রতিনিধিরা। দাবির পক্ষে-বিপক্ষে পাল্টাপাল্টি যুক্তি চলছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও।

নাম পুনর্বহাল চাওয়া শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় করে। রংপুর শহরে বেগম রোকেয়ার নামে একটি সরকারি মহিলা কলেজ আছে। একই নামে পাশাপাশি দুটি সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিচয় দিতে অস্বস্তিতে ভোগেন।

তবে নারী জাগরণের অন্যতম অগ্রদূত বেগম রোকেয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয় রাখার পক্ষে থাকা শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বলছেন, বেগম রোকেয়ার লেখা ও কর্ম সারা বিশ্বে স্বীকৃত। বেগম রোকেয়ার বাড়ি রংপুরে হওয়ায় তাঁর নামের কারণে বিশ্ববিদ্যালয় একটি আলাদা মর্যাদা পেয়েছে। নাম পরিবর্তনের দাবির পেছনে অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন কেউ কেউ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রংপুরে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি ছিল অনেক পুরোনো। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০১ সালে ‘রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেটির আর শিক্ষাকার্যক্রম চালু হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রংপুরের মানুষের দাবির মুখে ২০০৮ সালের ১২ অক্টোবর রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট সরকার ক্ষমতায় এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন নামকরণ হয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর।

নারী জাগরণ ও নারীর অধিকার আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া একাধারে চিন্তাবিদ, প্রাবন্ধিক, ঔপন্যাসিক, সাহিত্যিক ও সমাজসংস্কারক। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দে ১৮৮০ সালের ৯ ডিসেম্বর তাঁর জন্ম। ভারতের কলকাতায় ১৯৩২ সালের একই দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

যে যুক্তিতে নাম পরিবর্তন চান তাঁরা

নাম পরিবর্তনের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে গতকাল সোমবার সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য তুলে ধরেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রংপুর মহানগর কমিটির সদস্যসচিব রহমত আলী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক শামসুর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, ২০০৮ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিভাগীয় শহরে হওয়ায় রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় নামটি পরিবর্তন করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় নামকরণ করে।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, বেগম রোকেয়ার নামে বিশেষায়িত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা যেত। কেননা রংপুর শহরে (পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে) বেগম রোকেয়া সরকারি মহিলা কলেজ নামে আরেকটি প্রতিষ্ঠান আছে। ১৯৬৩ সালে প্রতিষ্ঠিত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে নারীদের উচ্চশিক্ষায় অবদান রেখে চলেছে। একই নামে পাশাপাশি দুটি সমমানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরিচয় দিতে অস্বস্তিতে ভোগেন।

সংবাদ সম্মেলনে নামকরণ পুনর্বহালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে সাত দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। এর মধ্যে দাবি মানা না হলে ‘বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয়।

আরও পড়ুনবেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন২২ ঘণ্টা আগে

এ বিষয়ে আজ মঙ্গলবার রহমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই আন্দোলন হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থীর চাওয়া নামকরণ পুনর্বহালের। সেই জায়গা থেকে আমরা কোনো ব্যানার গ্রহণ করিনি। দলমত–নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে।’

আরেক শিক্ষার্থী শামসুর রহমানের দাবি, এই আন্দোলন হঠাৎ করে নয়। ২০১৭ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাম পুনর্বহালের আন্দোলন করে আসছেন। কয়েক মাস ধরে স্মারকলিপি, গণস্বাক্ষর, বিক্ষোভ, মানববন্ধনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন, ইউজিসি ও শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।

শামসুর রহমান বলেন, ‘শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে রংপুর বিশ্ববিদ্যালয় এবং রংপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কবর রচনা করে দিয়েছেন। আওয়ামী লীগ রংপুরের মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। দুটি বিশ্ববিদ্যালয়কে একটি মোড়কে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে, শুধু একটি নামের মধ্য দিয়ে। আমরা এটার প্রতিবাদ করছি। এখানে ব্যক্তি বেগম রোকেয়াকে কোনোভাবে আনছি না।’

নাম পরিবর্তনের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ও বেগম রোকয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাবিনা আক্তার মনে করেন, বেগম রোকেয়া সব বিতর্কের ঊর্ধ্বে। অধিকাংশ শিক্ষার্থী বেগম রোকেয়ার নাম বহাল রাখার পক্ষে উল্লেখ করে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টা  অধ্যাপক ‍মুহাম্মদ ইউনূস বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। তাঁরা বেগম রোকেয়ার লেখা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত এবং তাঁকে নিয়ে গবেষণার জন্য দাবি জানান। অথচ উল্টো এখন বেগম রোকেয়াকে নিয়ে আপত্তি তোলা হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সোয়েব শাহিন গতকালের সংবাদ সম্মেলনের একটি ছবি তাঁর ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে লিখেছেন, ‘আচ্ছা এইগুলো কি ফাজলামি মনে হয় না? কমপ্লিট শাটডাউন দেওয়ার পক্ষে ক’জন, নাম পরিবর্তনের পক্ষ-বিপক্ষ উভয়েই আছে। আর আপনারা দেখি মাঝেমধ্যেই বলেন, কাল থেকেই নাম রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়, আপনাদের হাতে কি বিশ্ববিদ্যালয় তুলে দেওয়া হইছে?’

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

সম্পর্কিত নিবন্ধ