চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে সড়ক সংস্কারের কাজ নিয়ে বিরোধের জেরে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে বিএনপির দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় উপজেলার করেরহাট ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সোনাই গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হলেন– নুরন্নবী, আব্দুল হাই, মোমিন, আহসান উল্যাহ, সোহাগ, ইমাম, হোসেন হাসান। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

জানা গেছে, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শহীদ জাকির হোসেন সড়কের সংস্কারকাজ নিয়ে গত সোমবার স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে ওয়ার্ড বিএনপির সদস্য আহসান উল্যাহর বাগ্বিতণ্ডা ঘটে। ওই দিন সন্ধ্যার পর  আনোয়ার হোসেনের অনুসারীরা লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পশ্চিম সোনাই গ্রামে আহসান উল্যাহর বাড়িতে হামলার উদ্দেশ্যে রওনা হয়। খবর পেয়ে পশ্চিম সোনাই গ্রামের মসজিদ থেকে মাইকে ঘোষণা দিয়ে গ্রামবাসীকে হামলা প্রতিহতের আহ্বান জানানো হয়। এতে গ্রামবাসী সংগঠিত হয়ে আনোয়ার সমর্থকদের পাল্টা ধাওয়া দেয়। এ সময় দুই গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে আটজন আহত হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন চৌধুরীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শহীদ জাকির হোসেন সড়কের এক কিলোমিটার সড়কের সংস্কারকাজ পায়। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর জাহাঙ্গীর হোসেন পালিয়ে গেলে সড়কের কার্পেটিংয়ের কাজের জন্য এলজিইডি থেকে প্রকল্পটি নতুন করে সমন্বয় করে কাজের অনুমতি দেওয়া হয়। ওই কাজের জন্য পাথরকুচি সরবরাহ করছেন ওয়ার্ড বিএনপির সমন্বয়ক আনোয়ার হোসেন। কিন্তু সড়ক সংস্কারে নিম্নমানের পাথরকুচি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন বিএনপি নেতা আহসান উল্যাহ। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয়। 

মিরসরাই উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো.

গাজী নিজাম উদ্দিন জানান, গত ৫ আগস্টের পর ওই সড়কের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। পরে স্থানীয়দের অনুরোধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও এলজিইডি প্রকৌশলী সমন্বয় করে প্রকল্পের কাজ শুরু করেন। কাজ নিয়ে আনোয়ার ও আহসান উল্যাহর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির এক পর্যায়ে বাগ্বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি সমাধানের জন্য তিনি উভর পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসবেন।

জোরারগঞ্জ থানার ওসি শিফাতুল মাজদার জানান, সংঘর্ষের বিষয়টি জেনেছেন। এ ঘটনায় এখনও কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ স ঘর ষ ব এনপ র স ঘর ষ সড়ক র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, থানায় মামলা

গাজীপুরের কালীগঞ্জে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ইফতার মাহফিলে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

এদিকে, ওই ঘটনায় উপজেলার বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে ইউনিয়নের খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। 

আরো পড়ুন:

হবিগঞ্জের সাবেক এমপি আবু জাহিরসহ ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা

বাহুবলে গাছে বেঁধে আগুন, ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আহতদের মধ্যে জামায়াতের দুই কর্মীকে গাজীপুর পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- ঈশ্বরপুর এলাকার মফিজ উদ্দিনের ছেলে আসলাম (২৬) এবং খলাপাড়া এলাকার ইসলাম সরকারের ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৩৫)। 

বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর যুব বিভাগের সমাজকল্যাণ সম্পাদক মো. সুমন মিয়া বলেন, “উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নিয়মিত ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার খলাপাড়া খাজা মার্কেট এলাকায় ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছিল। ইফতারের আগ মুহূর্তে স্থানীয় বিএনপির কর্মী আপেল, নুর ইসলাম ও আকরামসহ ১০-১৫ জন এসে বলেন, এই এলাকায় ইফতার মাহফিল করা যাবে না। এরপর কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে তারা ইফতারের খাবার ফেলে দেন। পরে জামায়াতের কর্মীরা অন্য স্থানে ইফতার ও নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে বিএনপি কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের প্রায় ১০ জন আহত হন। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।”

বাহাদুরসাদী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জয়নাল আবেদীন বলেন, “কেউ যদি আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়, তাহলে কি তারা রক্ষা করবে না? জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালিয়েছে। এতে আমাদের প্রায় ৭-৮ জন আহত হন।” 

বিএনপির এই নেতা তাৎক্ষণিক আহতদের নাম পরিচয় দিতে পারেনি। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে বলেও জানান তিনি।

গাজীপুর মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমির ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য খায়রুল হাসান বলেন, “আমাদের নেতাকর্মীদের ইফতার মাহফিলে বিএনপির নেতাকর্মীরা বাধা দিয়েছে। তাদের হামলায় আমাদের প্রায় ১০ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় গাজীপুর পাঠানো হয়েছে।” 

কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক তারিকুল ইসলাম বলেন, “রাত ৯টার দিকে জামায়াতের পাঁচজন কর্মীকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। দুইজনকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।”

কালীগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন বলেন, “জামায়াত নেতা মো. সোহরাব হোসেন বাদী হয়ে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/রেজাউল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ