বাংলাদেশে গণমাধ্যমের অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে দ্য ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব জার্নালিস্টস (আইএফজে)। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং গণমাধ্যমকর্মীদের সুরক্ষার জন্য অর্থবহ পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তারা।

আইএফজি সাংবাদিকদের ব্রাসেলসভিত্তিক বৈশ্বিক সংগঠন। আজ মঙ্গলবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সহযোগী সংগঠন বাংলাদেশ হিউম্যান রাইটস জার্নালিস্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচআরজেএ) সঙ্গে যৌথভাবে এ নিন্দা জানিয়েছে তারা। বিজ্ঞপ্তিটি আইএফজের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বিগত ১৫ দিনে সাংবাদিকদের ওপর অন্তত চারটি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত এক সপ্তাহে হামলায় ছয়জনের বেশি সাংবাদিক আহত হয়েছেন। তবে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আনা হয়নি।

আইএফজের তথ্যমতে, ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশন চ্যানেল বাংলাভিশনের কুয়াকাটা প্রতিনিধি জহিরুল ইসলাম মিরনের ওপর অজ্ঞাতনামা একদল ব্যক্তি হামলা চালায়। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। একই দিনে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে বেশ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপর বিএনপির সদস্যরা হামলা করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এতে টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাবেদ আখতার গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় আরও কয়েকজন সাংবাদিক আহত হয়েছেন।

এর আগে ৩ ফেব্রুয়ারি শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে একদল অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি সমকালের সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন, নিউজ ২৪-এর বিধান মজুমদার অনি, বাংলা টিভির নয়ন দাস ও দেশ টিভির সাইফুল ইসলাম আকাশের ওপর হামলা চালায়। শরীয়তপুরের পালং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দীন জানান, হামলার ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। এই প্রতিবেদন তৈরি করা পর্যন্ত ওই ঘটনায় কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

বিজ্ঞপ্তিতে আইএফজে বলেছে, জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রতিবেদন তৈরির ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের অবশ্যই স্বাধীনতা দিতে হবে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে শুধু গণমাধ্যমকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করলেই হবে না, পাশাপাশি এসব হামলার ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর ঘটন য় র ঘটন গণম ধ

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে নদনদীর সংখ্যা ১৪১৫

দেশে নদনদীর নতুন তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো)। সরকারের দুটি মন্ত্রণালয় ও তিনটি সংস্থা এবং নদীকর্মীদের সমন্বয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়েছে। বাপাউবোর ওয়েবসাইটে গতকাল প্রকাশিত তালিকা অনুযায়ী, দেশে নদনদীর সংখ্যা ১ হাজার ৪১৫।

সরকারি উদ্যোগে এর আগেও বিভিন্ন সময়ে নদনদীর সংখ্যা নির্ণয় হয়েছে। তবে এবারের কাজ ব্যতিক্রম বলছেন নদীকর্মীরা। কারণ এবার স্থানীয়দের মতামতকে বেশ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। অনেক নদী তালিকা থেকে বাদ পড়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। খুলনা বিভাগের নদনদীর তালিকা তৈরিতে জড়িত ছিলেন নদীকর্মী মাহবুব সিদ্দিকী। তিনি বলেন, ‘সুন্দরবনের সব নদনদী সরকারের তালিকায় আসেনি। বরেন্দ্র অঞ্চলের অনেক নদী বাদ পড়েছে। তালিকা যদি চলমান প্রক্রিয়া হয়, তাহলে সাধুবাদ দেব। তা না হলে আগের পরিসংখ্যানের মতো এটাও বিতর্কমুক্ত হবে না।’

দেশে নদনদীর সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক চলছে বছরের পর বছর। নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটের গণনার সঙ্গে মেলে না নদী কমিশনের হিসাব, আবার এ দুই সংস্থার সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সংখ্যার ছিল গরমিল। অবশেষে নদনদীর তালিকা তৈরিতে সব সংস্থা একজোট হয়। সবার সমন্বয়ে তালিকা প্রণয়নের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান নদনদীর প্রকৃত সংখ্যা নির্ধারণের উদ্যোগ নেন। 

সার্বিক বিষয়ে সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান  বলেন, সরকারের নথিপত্রে আছে এমন নদীগুলোই আমরা তালিকাভুক্ত করেছি। তবে এটি চূড়ান্ত তালিকা নয়, কাজটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। ভবিষ্যতে আরও নদনদীর সন্ধান পাওয়া গেলে তাও তালিকাভুক্ত করা হবে। এ পর্যন্ত যত 
তালিকা হয়েছে, সবগুলোকে ধরে প্রতিটি বিভাগীয় পর্যায়ে সরকারি সংস্থাগুলোর পাশাপাশি নদীকর্মীদের সম্পৃক্ত করে তালিকাটি করা হয়েছে। মৃত নদী বলে আসলে কিছু নেই। নদী তার গতিপথ পরিবর্তন করলেও পুরোনো গতিপথটি নদী হিসেবেই রেকর্ড থাকে। 

এই তালিকা ধরে দেশব্যাপী একটি মহাপরিকল্পনা হবে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে নদীকে খাল বলা হচ্ছে, কখনও মৃত নদী বলা হচ্ছে– এমনটা যেন আর না হয়। এই তালিকা ধরেই সরকার নদী রক্ষায় সব কিছু করবে। তাই ছোট নদীও আর গুরুত্ব হারাবে না। এ তালিকা হওয়ায় নদীর সংখ্যা ও নাম নিয়ে বিতর্কের অবসান ঘটবে বলে মনে করেন উপদেষ্টা।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ