মা বকা দেওয়ার এক ঘণ্টা পর ঘরে ঝুলে ছিল কিশোরীর মরদেহ
Published: 11th, February 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে নিজ বসতঘর থেকে এক কিশোরীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে ভৈরব পৌর শহরের তাতারকান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ওই কিশোরীর নাম জিমা বেগম (১৪)। সে একই এলাকার মিঠু মিয়া ও মুক্তা বেগম দম্পতির মেয়ে। তার পরিবারের ধারণা, মায়ের বকুনি সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করেছে জিমা।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জিমার বাবা রাজধানী ঢাকায় একটি ওয়ার্কশপে কাজ করেন। আর মা মুক্তা বেগম স্থানীয় একটি হাসপাতালে চাকরি করেন। তাঁদের চার সন্তানের মধ্যে জিমা দ্বিতীয়। তাঁর দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস আছে। বিষয়টি নিয়ে প্রায়ই জিমার সঙ্গে মায়ের কথা-কাটাকাটি হতো। আজ সকালে একই অবস্থা দেখে মুক্তা বেগম ক্ষুব্ধ হয়ে জিমাকে বকা দেন। এর একপর্যায়ে তাঁদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি হয়। পরে মুক্তা সকাল ৯টার দিকে অফিসে চলে যান। সেখানে সকাল ১০টার দিকে তিনি খবর পান, জিমার নিথর দেহ নিজ বসতঘরের বৈদ্যুতিক পাখার সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে আত্মীয়স্বজন ও প্রতিবেশীরা জিমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
জিমার মা মুক্তা বেগম বলেন, ‘ঘুম থেকে ওঠার জন্য বকা দেওয়া ছাড়া মেয়ের সঙ্গে আর কিছুই হয়নি। বকার কারণে মেয়ে আত্মহত্যা করবে জানলে জীবনেও বকা দিতাম না।’
খবর পেয়ে আজ দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে থেকে জিমার মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার ফুয়াদ রুহানী জানান, ‘মূলত হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাকে ফোন করে তথ্যটি জানিয়েছে। পরে পুলিশ গিয়ে কিশোরীর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিশুটির মা, অপরাধীদের ফাঁসি চাইলেন বোন
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশুটির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তানের মৃত্যুতে শিশুটির মা আয়েশা অক্তার বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। আহাজারি করে তিনি ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছেন। শিশুটির বোনও অঝোরে কাঁদছেন। তিনি অভিযুক্ত ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার প্রতিবন্ধী বাবা নির্বাক হয়ে পড়েছেন। পরিবারে অন্য সদস্যরাও কান্নাকাটি করছেন। এ মৃত্যুতে গ্রামবাসীরাও মর্মাহত।
স্থানীয় সব্দালপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তিনি পরিবারটির পাশে আছেন। তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যা ৭টায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে তাকে মাগুরা আনা হয়। এরপর শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা, পরে শ্রীপুর উপজেলার শব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে দ্বিতীয় জানানা শেষে স্থানীয় সোনাইকুন্ডি কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী জানান, মৃত্যুর ঘটনায় তার ভগ্নিপতি হিটু শেখ, হিটু শেখের দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখের নামে শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিদের মধ্যে হিটু শেখকে সাতদিন ও অন্যদের পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের জ্ঞিাসাবাদ চলছে।