ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান বলেছেন, “সবার মধ্যে ঐক্য থাকলেই সমাজ পরিবর্তন সম্ভব। দেশকে ঘিরে অনেকবার ষড়যন্ত্র হয়েছে। তারুণ্যের শক্তিকে ব্যবহার করে প্রতিবারই এ দেশের মানুষ ঘুরে দাঁড়িয়েছে।"

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে তিন দিনব্যাপী ‘তারুণ্যের উৎসব’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, “দেশের ডাকে সাড়া দিয়ে তারুণ্যের সর্বজনীন শক্তি জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতিকে নতুন বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আমাদের আর পেছনে ফেরার সুযোগ নেই। দেশের স্বার্থে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এখনই সময়।”

তিনি আরো বলেন, “তারুণ্য শুধু বয়সের বিষয় নয়। এটি একটি মানসিক অবস্থান। সকল বয়সের মানুষকেই তারুণ্য ধারণ করতে হবে। তারুণ্যের একটি সর্বজনীন রূপ আছে। তারুণ্যের শক্তি সবার মধ্যে মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। তরুণ ছাত্র সমাজের সঙ্গে এদেশের তরুণ রিক্সাচালক, কৃষক, সবজি বিক্রেতাসহ সব শ্রেণিপেশার তরুণ ঐক্যবদ্ধভাবে জুলাই আন্দোলনে শামিল হয়। সর্বস্তরের মানুষ তাদের পাশে দাঁড়ায়। ফলে একটি সফল গণঅভ্যুত্থান সম্ভব হয়। তারুণ্যের এ উৎসব জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে সম্মান জানানোর একটি উপলক্ষ হিসেবে আমরা দেখতে পারি।”

উপাচার্য বলেন, “দীর্ঘদিনের দলান্ধ, হিংস্র ও বিভাজনের রাজনীতি এ দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এতে দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সামাজিক বিভেদ দূর করে মানুষের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টিতে এ ধরনের উৎসব সহায়ক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।”

‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ প্রতিপাদ্যে নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ উৎসবের আয়োজন করেছে। যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রধান অতিথি হিসেবে উৎসবের উদ্বোধন করেন।

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান দীর্ঘদিনের ফ্যাসিবাদী শোষণ থেকে এ দেশের মানুষকে মুক্ত করেছে। যে তরুণদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা এ মুক্তি পেয়েছি, তাদের শক্তিকে জাগ্রত রাখতে দেশব্যাপী তারুণ্যের উৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। প্রতিটি জেলা, উপজেলাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয়োজিত এ উৎসবে তরুণ সমাজসহ সর্বস্তরের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিচ্ছে।”

তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এদেশের তরুণ সমাজ মানুষকে নতুন স্বপ্ন দেখানোর একটি প্রেক্ষাপট সৃষ্টি করেছে। সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ ও দেশ পুনর্গঠনে তরুণ সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

রেজাউল মাকছুদ জাহেদী এবং যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. গাজী মো. সাইফুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ঘোষিত তারুণ্যের উৎসব গত ৩০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী উদযাপিত হচ্ছে। এর অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। তারুণ্যের শক্তি, আবেগ ও উদ্যোগী চেতনা ধারণ করে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা, পারস্পরিক সহযোগিতার মানসিকতা গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশের বৈচিত্র্য ও সংস্কৃতির সৌন্দর্যকে তুলে ধরার লক্ষ্যে উদযাপিত হচ্ছে এ উৎসব। উৎসব উপলক্ষ্যে তরুণ উদ্যোক্তাদের স্টল নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে মেলা।

এছাড়া চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, ক্লিন ক্যাম্পেইন, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, কেস কম্পিটিশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড দলের অংশগ্রহণে মেগা কনসার্ট নিয়ে সাজানো হয়েছে এ উৎসব।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ উৎসব র উৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

চারুকলার বকুলতলায় চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব, গানে-নাচে-আবৃত্তিতে বর্ষবিদায়

রোববার ছিল ৩০ চৈত্র। বাংলা ১৪৩১ সনের শেষ দিন। বছরের শেষ দিনকে বিদায় জানাতে এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ‘চৈত্রসংক্রান্তি’ উৎসব। বর্ষবিদায়ে ছিল গান, নাচ, আবৃত্তিসহ নানা আয়োজন।

সোমবার পয়লা বৈশাখ। বাংলা নতুন বছর ১৪৩২ সনের প্রথম দিন। বাংলা পুরোনো বছরের বিদায় এবং নতুন বছরের আগমন উপলক্ষে প্রতিবছরের মতো এবারও চৈত্রসংক্রান্তির মধ্য দিয়ে চারুকলা অনুষদের তিন দিনের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

চৈত্রসংক্রান্তি উপলক্ষে মুখোশ, কাগজের ঘূর্ণি, রঙিন কাগজ, তালপাতা, বাঁশসহ নানা গ্রামীণ উপকরণ দিয়ে বকুলতলা সাজানো হয়। পূর্বনির্ধারিত সময়ের চেয়ে প্রায় আড়াই ঘণ্টা দেরিতে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে বকুলতলায় চৈত্রসংক্রান্তি অনুষ্ঠান শুরু হয়।
চারুকলার শিক্ষার্থী আরিবা, সিন্দিত, শর্মীর সমবেত কণ্ঠে ‘এসো হে বৈশাখ, এসো এসো/ তাপসনিশ্বাসবায়ে মুমূর্ষুরে দাও উড়ায়ে/ বৎসরের আবর্জনা দূর হয়ে যাক’ গান দিয়ে শুরু হয় এ আয়োজন।

এরপর ‘বাজেরে বাজে ঢোল আর ঢাক/ এলো রে পহেলা বৈশাখ’ গানের সঙ্গে নাচ পরিবেশন করেন জয়া, আঁচল ও গল্প। চারুকলার শিক্ষার্থী সুপ্রিয় কুমার ঘোষ আবৃত্তি করেন ‘বন্ধু হও, শত্রু হও, যেখানে যে কেহ রও/ ক্ষমা করো আজিকার মতো/ পুরাতন বরষের সাথে/ পুরাতন অপরাধ যত’। বকুলতলায় এভাবে চলতে থাকে একের পর গান, কবিতা, নাচ। আর এই আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়টির চারুকলা অনুষদের বর্তমান শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি প্রাক্তন শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

অনুষ্ঠানের সূচনা বক্তব্যে চারুকলার বৈশাখ উদ্‌যাপন কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক এ এ এম কাওসার হাসান বলেন, এবারের বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা উদ্‌যাপনের জন্য ব্যাপকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনসুরের ধারার চৈত্রসংক্রান্তি আয়োজন, নাচ-গানে পুরোনো বছরকে বিদায়১ ঘণ্টা আগে

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন চারুকলা অনুষদের খণ্ডকালীন শিক্ষক জাকিয়া আহমেদ ও মেরাজি আশা।

চারুকলা অনুষদের তথ্য অনুযায়ী, তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় দিন সোমবার সকাল ৯টায় শুরু হবে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। তৃতীয় দিন আগামীকাল মঙ্গলবার রাত ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত চারুকলা অনুষদের বকুলতলায় যাত্রাপালার আয়োজন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননানা আয়োজনে উদীচীর চৈত্রসংক্রান্তি উদ্‌যাপন২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘বৈশাখ ঘিরে আমার কোনো স্মৃতি নেই, উন্মাদনাও নেই’
  • পহেলা বৈশাখে ঢাকায় যত আয়োজন
  • বৈশাখে কেনাবেচা ‘মন্দ নয়’
  • বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়াই হোক এবারের নববর্ষের অঙ্গীকার: প্রধান উপদে
  • চারুকলার বকুলতলায় চৈত্রসংক্রান্তি উৎসব, গানে-নাচে-আবৃত্তিতে বর্ষবিদায়
  • রাবিতে বর্ষবরণের শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থীরা, আয়োজন সীমিত
  • আর্থ-সামাজিক আবেদন ছিল চৈত্র সংক্রান্তি আর পহেলা বৈশাখে
  • তরুণরা নতুন রাজনীতির কথা বলে পুরোনো পথেই হাঁটছে: নুরুল হক নুর
  • তরুণরা নতুন রাজনীতির কথা বলে পুরোনো পথেই হাঁটছে: নুরুল হক নূর
  • বৈসাবি উপলক্ষে রাঙামাটিতে ঐতিহ্যবাহী বলী খেলা অনুষ্ঠিত