রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার চূড়ান্ত আবেদন শুরু হয়েছে।

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টা থেকে শুরু হওয়া এ আবেদন চলবে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক মো. ছাইফুল ইসলাম তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।

ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এবারের ভর্তি পরীক্ষায় প্রাথমিক আবেদন গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে শেষ হয়েছে। আবেদনকারীদের মধ্য থেকে এইচএসসি বা সমমান পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে কোটায় আবেদনকারী শিক্ষার্থীসহ প্রতিটি ইউনিটে সর্বোচ্চ ৯২ হাজার পরীক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাবে।

প্রাথমিক বাছাই প্রক্রিয়ায় উত্তীর্ণরা মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টা থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চূড়ান্ত আবেদন করতে পারবেন। 

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, প্রথম দফায় ১৫ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১২টা পর্যন্ত আবেদন পূর্ণ না হলে পরবর্তী দুটি ধাপে দ্বিতীয় দফায় ১৮ থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি, তৃতীয় দফায় ২৩ থেকে ২৪ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত আবেদন করতে পারবেন ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা।

গত ২৭ জানুয়ারি থেকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা প্রাথমিক আবেদন শুরু হয়। আবেদন শেষ হয়েছে গত ৫ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টায়। এ বছর তিন ইউনিটে (এ, বি, সি) ৪ লাখ ৪১ হাজার ৯৭২টি আবেদন জমা পড়েছে।

এর মধ্যে মানবিক তথা ‘এ’ ইউনিটে আবেদন সংখ্যা ১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৫৭টি, ‘বি’ ইউনিট তথা বাণিজ্য ইউনিটে ১ লাখ ৩ হাজার ৭৯টি ও বিজ্ঞান তথা ‘সি’ ইউনিটে ১ লাখ ৭০ হাজার ২৩৬টি আবেদন জমা পড়েছে। মোট আবেদনকারীর সংখ্যা ২ লাখ ৪৮ হাজার ৭০৪ জন।

চূড়ান্ত আবেদন ফি ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) জন্য ১ হাজার ১০০ টাকা, এবং ‘এ’ ইউনিট (মানবিক) ও ‘সি’ ইউনিটের চূড়ান্ত আবেদন ফি ১ হাজার ৩২০ টাকা। এবারের ভর্তি পরীক্ষায় বরাবরের ন্যায় ৮০টি বহুনির্বাচনী প্রশ্নের মান হবে ১০০ নম্বর। ১ ঘণ্টা সময়সীমায় অনুষ্ঠিত প্রতিটি বহুনির্বাচনি প্রশ্নের মান হবে ১.

২৫। প্রতিটি ইউনিটে মোট ৯২ হাজার ভর্তিচ্ছু পরীক্ষায় অংশ নিতে পারবে। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২টি অনুষদের ৫৯টি বিভাগ ও দুইটি ইনস্টিটিডটে আসন রয়েছে ৩ হাজার ৯৪৭টি (বিশেষ কোটা বাদে)। এছাড়াও বিশেষ কোটায় আসন রয়েছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ৬১টি, শারীরিক প্রতিবন্ধী কোটায় প্রতি বিভাগ/ইন্সটিটিউটে আসন সংখ্যার ২ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধার পুত্র/কন্যার জন্য প্রতি বিভাগের আসন সংখ্যার ৫ শতাংশ এবং খেলোয়াড় কোটায় প্রতি বিভাগ/ইনস্টিটিউটে মাত্র একজন ভর্তি হতে পারবে।

আগামী ১২ এপ্রিলে ‘বি’ ইউনিটের (বাণিজ্য) পরীক্ষার মধ্য দিয়ে শুরু হবে এবারের ভর্তি পরীক্ষা। ‘এ’ ইউনিটের (মানবিক) পরীক্ষা হবে ১৯ এপ্রিল এবং ‘সি’ ইউনিটের (বিজ্ঞান) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৬ এপ্রিল।

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ক ষ র পর ক ষ য় ইউন ট র

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআরে দুর্নীতি এখনও বন্ধ হয়নি

প্রাক-বাজেট আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। চেয়ারম্যানকে দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে এ আলোচনা হয়। সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা অভিজ্ঞতা ও বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিটিএলএমইএ) সভাপতি শাহদাত হোসেন সোহেল বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। দুর্নীতি বন্ধ করুন, আপনারা যা চান ব্যবসায়ীরা তা দেবে। যাদের বন্ড নাই, তাদের রপ্তানির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক কিছু ঘটে। এসব অনিয়মের অনেক প্রমাণ আছে। এনবিআর চেয়ারম্যানকে ভয়েস মেসেজ পাঠানো হয়েছে। এসব এখনও বন্ধ হয়নি।’

এনবিআরের চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আবারও অনুরোধ করব, রাজস্ব বোর্ডের এআরও (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা) অনেক শক্তিশালী। কোনো কোনো সদস্য আপনার থেকেও শক্তিশালী। গত পরশু এক এআরও ফোন করে আমাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। এটাই হচ্ছে বর্তমান চিত্র।’ উৎসে কর, নগদ প্রণোদনার উৎসে কর এবং ১০ ও ২০ কাউন্ট সুতায় শুল্ক ও কর কমানোর প্রস্তাব দেন তিনি।

বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এম ইকবাল বলেন, ‘কয়েক দিন আগে পানগাঁওয়ে আমান প্লাস্টিকের দুটি কনটেইনার আটকে রেখে ৭ কোটি টাকা শুল্ক দাবি করা হয়। এ কারণে আমান প্লাস্টিকের মালিক এক সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। আমি তাঁকে ফিরিয়ে আনছি। সরকার পরিবর্তনের পর সেই কনটেইনার কোটি টাকা দিয়ে ছাড়াতে হয়েছে।’

এসবের প্রতিক্রিয়ায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আপনি সুবিধা না দিলে সে নেবে কোথা থেকে? আপনি দেন, পরে সেটা আবার বলেনও। প্রমাণ দেন। দুদক আছে, ধরতে পারে। এনবিআরও ধরতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব লেনদেন এখন ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ড করে রাখা যায়। মোবাইলে কথোপকথন রেকর্ড করা যায়। এনবিআর শত শত কোটি টাকা খরচ করে অনলাইনে অভিযোগ জানানোর সিস্টেম চালু করেছে। এটা ব্যবসায়ীদের ব্যবহার করতে হবে।’

বিভিন্ন সংগঠনের প্রস্তাব
২০৩০ সাল পর্যন্ত করপোরেট কর হার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএম)। এ নিয়ে বিটিএম নেতাদের সঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যানের বাহাস হয়।

সংগঠনটির পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ভারতীয় সুতা আমদানির কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ৮-১০ হাজার কোটি টাকার সুতা অবিক্রীত রয়েছে। তাই করহার কমিয়ে আনতে হবে।

এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করপোরেট কর নেওয়া হয় আয়ের ওপর। গত ৫-৭ বছরে করপোরেট কর কমাতে কমাতে ২৫ শতাংশে আনা হয়েছে। ১০০ টাকা লাভ হলে ২৫ টাকা সরকারকে দেবেন। লাভ না হলে কর দেবেন না। এ ছাড়া ভারতীয় সুতা এত কম দামে আসে কীভাবে জানতে চান চেয়ারম্যান।

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারের নীতি সহায়তা চায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। পাশাপাশি আগামী ৫ বছরের জন্য উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা, ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা, কোম্পানির ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী আমানত, স্থায়ী আমানতের মুনাফার ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ চেয়েছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে।

বেসিস তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি ২০৩১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠার আগে ক্যাশলেস ট্রানজেকশনের শর্ত শিথিল করা, দেশি সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তির ভ্যাট প্রত্যাহার, সফটওয়্যার রপ্তানিতে প্রণোদনা ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

রপ্তানি বাড়াতে প্লাস্টিক খেলনা উৎপাদনে ২৪ ধরনের কাঁচামাল আমদানিতে করছাড় চেয়েছে বিপিজিএমইএ। একইভাবে আমদানি করা ১৪টি কাঁচামালের করছাড় চায় বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি।

এলপিজি অটোগ্যাস সেক্টরে ট্যাক্স হলিডে সুবিধা চায় বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এলপিজি কনভারশন কিট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। এ ছাড়া ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সংযোজিত মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি নগদ সহায়তায় ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)।

কেক, বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্যে শুল্ক অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ বিস্কুট, ব্রেড ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি। 

হীরা আমদানির মূসকে ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া ও স্বর্ণের গহনার ক্ষেত্রে তিন বছরের জন্য মূসকে ৫০ শতাংশ ভর্তুকির প্রস্তাব বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ