গাজীপুরে দুই কারাগারে পৃথক ঘটনায় দুজন কয়েদির মৃত্যু হয়েছে। গত সোমবার রাতে জেলা কারাগারে ও কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ঘটনা দুটি  ঘটে। এর মধ্যে এক কয়েদির মৃত্যুর ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

গাজীপুর জেলা কারাগারে মারা যাওয়া কয়েদির নাম ওমর ফারক (৩৩)। তিনি কাপাসিয়ার টোকা ইউনিয়নের বীর উজ্জলী গ্রামের বাসিন্দা ও দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ছিলেন। অন্যদিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের পার্ট-১–এ মারা যাওয়া কয়েদির নাম দুলাল উদ্দিন (৫২)। তিনিও একই উপজেলার কেন্দুয়াব গ্রামের বাসিন্দা ও একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি ছিলেন।

কারা সূত্রে জানা গেছে, ওমর ফারুক ২০১৯ সালের কাপাসিয়া থানার দায়ের করা এক মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সম্প্রতি কারাগারের ভেতর এক কর্মকর্তাকে মারধরের ঘটনায় করা আরও এক মামলার আসামি ছিলেন তিনি। অন্যদিকে দুলাল কাপাসিয়া থানার একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি হিসেবে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দী ছিলেন।

গাজীপুর জেলা কারাগারের জেল সুপার রফিকুল কাদের জানান, গত সোমবার দিবাগত রাত আড়াইটা থেকে তিনটার মধ্যে একটি সেলের গারদের সঙ্গে কম্বল পেঁচিয়ে ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওমর ফারুক। বিষয়টি কারারক্ষীদের নজরে এলে প্রথমে তাঁকে কারাগারেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরিস্থিতির অবনতি হলে মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। চিকিৎসক তাঁর মৃত্যুর সনদে ‘ব্রট ডেথ বা মৃত আনা হয়েছিল’ বলে উল্লেখ করেছেন।

জেল সুপার আরও বলেন, ওই ঘটনায় ডিআইজি প্রিজন তিন সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে দিয়েছেন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২–এর জেল সুপার আল মামুন। অন্য দুজন সদস্য হলেন কিশোরগঞ্জ কারাগারের জেলার সর্বোত্তম দেওয়ান ও কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ডেপুটি জেলার মো.

ইব্রাহীম।

অন্যদিকে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১–এর জেলার তরিকুল ইসলাম জানান, দুলাল মিয়া ক্যানসারে আক্রান্ত ছিলেন। বেশ কয়েকবার তাঁকে ঢাকায় নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। সর্বশেষ ১৮ ফেব্রুয়ারি তিনি এ কারাগারে আসেন। গতকাল রাত ১১টার দিকে তিনি বুকে ব্যথা অনুভব করলে তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

মামলা থেকে বাঁচতে আইজিপিকে লিখিত আবেদন সংবাদকর্মীর

মামলা থেকে বাঁচতে পুলিশ মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) কাছে লিখিত আবেদন করেছেন সংবাদকর্মী আবু হানিফ। গত ২ ফেব্রুয়ারি আইজিপির কাছে লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। অভিযোগে তিনি বলেন, একটি মামলার মাধ্যমে আসামিরা তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করছেন। টাকা দিলে মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাস দিচ্ছেন। টাকা না দিলে অজ্ঞাত মামলায় আসামি করার হুমকি দিচ্ছেন। 

আবু হানিফ বর্তমানে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের প্রোগ্রাম প্রোডিওসার হিসেবে কর্মরত। গত বছরের ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকার খিলগাঁও থানায় একটি হামলা মামলায় তাকে আসামি করা হয়। ওই মামলায় নাম ৫১ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে। সেই মামলায় সংবাদকর্মী আবু হানিফ ২০ নম্বর আসামি।

সংবাদকর্মী আবু হানিফ বলেন, মামলার বাদী সাব্বির হোসেন রাব্বির সঙ্গে কোনো পরিচয়, শত্রুতা নেই এবং তিনি আমাকে চেনেনও না। আমি কখনও আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না।

তিনি আরও বলেন, মামলায় উল্লেখ করা ঘটনার আগ থেকেই আমি পাবনায় এক আত্মীয়ের বাসায় ছিলাম। এর মধ্যে তৎকালীন সরকার দেশজুড়ে কারফিউ জারি করলে আটকা পড়ি। সেখানে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। পরে পাবনার সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হই। এতে ১৫-১৬ দিন পাবনায় অবস্থান করে তারপর কর্মস্থলে ফিরে আসি।

মামলার আসামি হওয়ার আশঙ্কায় তিনি স্বাভাবিকভাবে অফিস করতে পারছেন না বলেও অভিযোগে জানান। তিনি জান-মালের নিরাপত্তা রক্ষায় মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ