রাজশাহীতে পিকনিকের খাবার খেয়ে একটি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক মিলিয়ে ৪৫ জন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গতকাল সোমবার দুপুর থেকে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২টা পর্যন্ত চারঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তারা ভর্তি হয়েছেন। 

চিকিৎসকরা বলছেন, ফুড পয়জনিংয়ের কারণে তারা অসুস্থ হয়েছেন। 

আরো পড়ুন:

কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের হাসপাতাল চালুর দাবিতে সড়ক অবরোধ

নিজ গোপনাঙ্গ ‘কাটলেন’ যুবক, যা জানালেন চিকিৎসক  

শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা জানান, জেলার চারঘাট উপজেলা সদরের বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থানাপাড়া সোয়ালোজ প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে গত রবিবার শিক্ষার্থী ও অভিভাবকসহ ১৮০ জন গোদাগাড়ী উপজেলার সাফিনা পার্কে পিকনিকে যান। তাদের মধ্যে ৪৭ জন ছিল ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বাকিরা অভিভাবক এবং তাদের আত্মীয়।

পিকনিকের জন্য বিদ্যালয়েই খাবার রান্না করা হয়। সেখানে প্যাকেট করে খাবার নিয়ে যাওয়া হয়। সাফিনা পার্কে পৌঁছানোর পর দুপুর ২টার দিকে দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হয়। সন্ধ্যায় পিকনিক থেকে বাড়ি ফেরার পর থেকেই অনেকের ডায়রিয়া ও বমি শুরু হয়।

গতকাল সোমবার দুপুরের দিকে আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হওয়া শুরু করেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ৪৫ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। 

স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে আসা রপালী খাতুন বলেন, “পিকনিকের খাবার খাওয়ার পর রাত থেকেই আমার দুই মেয়ের ডায়রিয়া শুরু হয়েছে। গতকাল সোমবার থেকে অবস্থা আরো বেশি খারাপ হয়। এখন দুই মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। স্যালাইন চলছে। ভীষণ দুশ্চিন্তায় আছি।”

থানাপাড়া সোয়ালোজ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমিতাভ নেওয়াজ বলেন, “খাবার রান্না করে সুন্দরভাবে পরিবেশন করা হয়েছে। কি কারণে ফুড পয়জনিং হয়েছে বুঝতে পারছি না। আমার মেয়েও অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.

তৌফিক রেজা বলেন, “ফুড পয়জনিংয়ের কারণে তারা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। শিশু বিশেষজ্ঞসহ অন্য চিকিৎসকরা তাদের সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন। রোগীদের অবস্থা এখন অনেকটাই ভালো। কোনো রোগীর অবস্থা খারাপ হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হবে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

নিবন্ধিত ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা কি ‘ডা.’ ব্যবহার করতে পারবে? 

সম্প্রতি এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য কেউ তাদের নামের আগে ‘ডা.’ পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এ রায়ের ফলে কি নিবন্ধিত ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা নামের আগে ডাক্তার ব্যবহার করতে পারবে না? 

হাইকোর্টের ওই রায়ের ফলে বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় নিবন্ধিত ভেটেরিনারি, হোমিওপ্যাথিক, ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকদের স্বীকৃতি নিয়ে আইনি অসঙ্গতি তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশ ভেটেরিনারি কাউন্সিল আইন, ২০১৯ এবং বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শিক্ষা কাউন্সিল আইন, ২০২৪-এ স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে যে, নিবন্ধিত ভেটেরিনারি ডাক্তার এবং হোমিওপ্যাথিক ডিপ্লোমা ও ব্যাচেলর ডিগ্রিধারী চিকিৎসকরা ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন।

কিন্তু বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) আইন, ২০১০-এর ধারা ২৯(১) অনুযায়ী এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিপ্রাপ্ত চিকিৎসক ব্যতীত অন্য কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না।

ওই ধারায় ‘অন্য কেউ ডাক্তার পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না’ বলার কারণে সাধারণ জনগণ এটাই মনে করে থাকেন যে, বাংলাদেশে কেবল ব্যাচেলর অব মেডিসিন অ্যান্ড ব্যাচেলর অব সার্জারি (এমবিবিএস) এবং ব্যাচেলর অব ডেন্টাল সার্জারি (বিডিএস) ডিগ্রিধারীরাই ডাক্তার। অন্য কেউ ডাক্তার নয়।

২৯(১) ধারায় উদ্ভট লাইনের কারণে অনেকে মনে করে থাকেন যে, ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম), বিএসসি ইন ভেট সায়েন্স অ্যান্ড অ্যানিম্যাল হাজবেন্ড্রি, ডিপ্লোমা ইন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারী ডিএইচএমএস, ব্যাচেলর অব হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন অ্যান্ড সার্জারি বিএইচএমএস ডিগ্রিপ্রাপ্তরা ডাক্তার নন। কিংবা যে কেউ ভাবতে পারেন বিএমডিসি আইন ২০১০ অনুযায়ী ডিভিএম, বিএইচএমএস, ডিএইচএমএস ধারীরা নামের পূর্বে ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। এতে করে জাতির কাছে ভুল বার্তা যাচ্ছে।

একটি আইনে যখন ‘অন্য কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না’ এরূপ বলা হয়, তখন ধরেই নেওয়া হয় বাকী পেশাজীবি চিকিৎসকরা কেউ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন না। আইনে এরূপ উদ্ভট বাক্য চয়ন অন্যান্য পেশাজীবী চিকিৎসকদের মৌলিক অধিকার হরণ করেছে।

২৯(১) ধারার এই সাংঘর্ষিক বিধান নিয়ে চিকিৎসকদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে রাষ্ট্র স্বীকৃত নিবন্ধিত চিকিৎসকদের ডাক্তার পদবি ব্যবহারের অনুমোদন দিচ্ছে। অন্যদিকে বিএমডিসি আইন সেটিকে অস্বীকার করছে। ফলে সাধারণ জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে এবং ভেটেরিনারি, হোমিওপ্যাথিক ও অন্যান্য চিকিৎসকদের অনেক সময় ভুয়া ডাক্তার বলে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।

আইনি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বিএমডিসি আইন সংশোধন করা জরুরি, যাতে সব নিবন্ধিত চিকিৎসক তাদের ন্যায্য স্বীকৃতি পান। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকগণও দাবি জানিয়েছেন, বিএমডিসি আইন সংশোধন করে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে যে, বিএমডিসি নিবন্ধিত চিকিৎসকগণ ডাক্তার পদবি ব্যবহার করতে পারবেন।

এ অসঙ্গতির সমাধান না হলে, নিবন্ধিত ভেটেরিনারি, হোমিওপ্যাথিক, ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসকগণ আদালতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিবেচনা করতে পারেন। তারা মনে করেন, এই বৈষম্যমূলক বিধান সংশোধন হলে জনগণের বিভ্রান্তি দূর হবে এবং চিকিৎসকদের পেশাগত সম্মান নিশ্চিত হবে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুস্পষ্ট সিদ্ধান্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট পেশাজীবী ও আইন বিশেষজ্ঞরা।
(লেখক: শিক্ষার্থী, ডক্টর অব ভেটেরিনারি মেডিসিন (ডিভিএম), ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ)

ঢাকা/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চিকিৎসকদের কর্মবিরিতি প্রত্যাহার
  • নিবন্ধিত ভেটেরিনারি চিকিৎসকরা কি ‘ডা.’ ব্যবহার করতে পারবে? 
  • চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে ঢামেক-সোহরাওয়ার্দীর বর্হিবিভাগ সেবা বন্ধ
  • ইন্টার্নি চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, ঢাকা মেডিকেলসহ বিভিন্ন হাসপাতালে বর্হিবিভাগ বন্ধ
  • রাঙামাটিতে প্রসবকালে বন্য হাতি ও শাবকের মৃত্যু
  • আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসা দিলেন যুক্তরাজ্যের ২ চিকিৎসক
  • রাজশাহীতে চিকিৎসাসেবা কার্যত বন্ধ, রোগীদের ভোগান্তি
  • আহত হৃতিক রোশান
  • প্রসবের সময় শাবকসহ বন্য হাতির মৃত্যু
  • রাজশাহীর চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের ঘোষণা