মেয়র আসেন, মেয়র যান তবে উন্নয়ন হয় না নড়াইল পৌরসভার সড়কগুলোর। বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকা সড়কগুলো দিন দিন আরো খারাপ হচ্ছে। সড়কের পিচের সঙ্গে উঠে গেছে খোয়াও। কোথাও কোথাও ইট-সুরকির জোড়াতালিতে ঢাকা হচ্ছে সড়কের ক্ষত। কিন্তু সে তো স্থায়ী কোনো সমাধান নয়। স্থানীয়রা সড়কের উন্নয়নে স্থায়ী সমাধান চান।

নড়াইল পৌরসভা থেকে জানানো হয়েছে, ১৯৭২ সালে ২৮.

৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয় নড়াইল পৌরসভা। ১৯৯৯ সালে এটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভায় উন্নীত হয়। পৌরসভায় মোট ৩৭১ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এর মধ্যে পাকা সড়ক রয়েছে মাত্র ৫২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার। ঢালাই সড়ক রয়েছে ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার। ইটের সড়ক ৬ দশমিক ৭৫ কিলোমিটার। কাঁচা সড়ক ১৭৭ দশমিক ২৫ কিলোমিটার এবং অন্যান্য সড়ক রয়েছে ১২২ কিলোমিটার।

পৌরসভার অধিকাংশ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সংস্কার না হওয়ায় সড়কজুড়ে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। এতে যানবাহন চলাচলে ব্যাপক সমস্যা তৈরি হয়েছে। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখানে উন্নয়নের ছোঁয়া তেমন একটা পড়েনি।

পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসীন্দা আলমগীর বলেন, “আমাদের এলাকায় যাতায়াতের সড়কটি দীর্ঘ ৮ থেকে ১০ বছর ধরে চলাচলের অনুপযোগী। বিগত মেয়রসহ বিভিন্ন কমিশনারের কাছে আমরা একাধিকবার বিষটি জানিয়েছি। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তারা শুধুই আশ্বাস দিয়েছেন। বর্তমান প্রশাসকের কাছে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানাই।”

ভাদুলিডাঙ্গা এলাকার সাথী বিশ্বাস বলেন, “বিভিন্ন সময়ে কমিশনরা এসেছেন। আশ্বাস দিয়ে গেছেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আগে তো তাও শোনার রোক ছিল। এখন কমিশনরা নেই, আমাদের সমস্যার কথা শোনারও কেউ নেই।”

নড়াইল পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলী হায়দার পৌরসভার সড়কের বেহাল অবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, “সড়ক সংস্কারের জন্য যে বরাদ্দ প্রয়োজন তা না থাকায় সংস্কার সম্ভব হচ্ছে না। অর্থ বরাদ্দ পেলে সড়ক উন্নয়ন ও সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

নড়াইল পৌরসভার প্রশাসক জুলিয়া সুকায়না জানান, নড়াইল ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভা হলেও এখানে নাগরিকদের জন্য তেমন কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই। বরাদ্দ পেলে পর্যায়ক্রমে পৌরসভার বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হবে।

ঢাকা/শরিফুল/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র প রসভ প রসভ র সড়ক র দশম ক র সড়ক

এছাড়াও পড়ুন:

অসমাপ্ত আধা কিলোমিটারে দুর্ভোগ

১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কের সাড়ে ১৫ কিলোমিটারের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি ৫০০ মিটারের কাজ না করেই ঠিকাদার হাওয়া। এই ৫০০ মিটারই দুর্ভোগে ফেলেছে এলাকাবাসীকে। তারা ধুলায় একাকার হচ্ছেন। ঘটছে ছোটখাটো দুর্ঘটনা।
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার টুঙ্গিপাড়া-ঘোনাপাড়া সড়কের চিত্র এটি। স্থানীয়রা দ্রুত এ সড়কের নির্মাণকাজ শেষ করে তাদের দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে সড়ক বিভাগের প্রতি দাবি জানিয়েছেন।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জ নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে,  পিরোজপুর-নাজিরপুর-মাটিভাঙ্গা-পাটগাতী-ঘোনাপাড়া সড়কটি পিরোজপুর, নাজিরপুর, টুঙ্গিপাড়া, জিয়ানগর ভাণ্ডারিয়া উপজেলা থেকে ঢাকা-গোপালগঞ্জ ও ফরিদপুর জেলায় যাতায়াতের সহজ পথ। এ সড়কের মধ্যে  সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জ চক্ষু হাসপাতাল ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, ডেন্টাল কলেজ, আঞ্চলিক ধান গবেষণা কেন্দ্র, কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট, বিআরটিসি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও বাস ডিপো, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, টুঙ্গিপাড়া সরকারি কলেজ উল্লেখযোগ্য। তাই গুরুত্বপূর্ণ সড়কটির টুঙ্গিপাড়া থেকে ঘোনাপাড়া পর্যন্ত ১৬ কিলোমিটার সার্ভিস লেনসহ ৪ লেনে চওড়া করার কাজ শুরু করা হয় ২০২২ সালের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় ধরা হয় ৩৪৭ কোটি টাকা। গত বছরের ৩১ ডিসেম্বর এ প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই সড়কের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা থেকে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ৫০০ মিটার সড়কের কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যায়। তার পরই এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল, পণ্য পরিবহন ও মানুষের যাতায়াতে ভীষণ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে হচ্ছে যানজট। ঘটছে দুর্ঘটনাও।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গিমাডাঙ্গা গ্রামের ফোরকান আলী বলেন, সড়কটির প্রায় সব কাজ শেষ হয়েছে। মাত্র আধা কিলোমিটার কাজ না করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চলে গেছে। এ সড়ক দিয়ে চলাচল করতে গেলে ভোগান্তির শেষ নেই। কখনও কখনও যানজট, ধুলাবালির মধ্যে পড়ে জীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে এখানে ঘটে ছোটখাটো দুর্ঘটনা। তাই তিনি দ্রুত এই আধা কিলোমিটার সড়কের কাজ সম্পন্ন করার দাবি জানান।
পাটগাতী গ্রামের ভ্যানচালক রইচ বিশ্বাস বলেন, সড়কের সব জায়গা ভালো। কিন্তু গিমাডাঙ্গা থেকে পাটগাতী বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত কাজ শেষ হয়নি। এখানে ভ্যান চালাতে গেলে প্রচুর ঝাঁকুনি হয়। এতে বয়স্ক যাত্রীর অসুবিধা হয়। মাঝেমধ্যে ভ্যানের বিভিন্ন অংশ ভেঙে যায়। ঘটে দুর্ঘটনা। এ সড়কের ৫০০ মিটার অংশটুকুর কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে।
বাসচালক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, সড়কটি খুবই সুন্দর হয়েছে। কিন্তু মাত্র আধা কিলোমিটারের কাজ বাকি রয়েছে। এই আধা কিলোমিটার অতিক্রম করার সময় ধুলাবালি ওড়ে। এতে পথচারী ও ছোট যানবাহনের যাত্রীদের কষ্ট হয়। এ ছাড়া বাসের জানালা বন্ধ করতে হয়। কখনও কখনও যানজটে আটকা পড়তে হয়। আধা কিলোমিটার সড়কের কাজ সম্পন্ন করা হলে এলাকাবাসী দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।
টুঙ্গিপাড়ার শ্রীরামকান্দি গ্রামের সাইফুল শেখ বলেন, যাতায়াত ও উৎপাদিত কৃষিপণ্য পাটগাতী হাটে পরিবহনে তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। তাই ওই সড়কের গুরুত্বপূর্ণ ৫০০ মিটার এলাকার কাজ দ্রুত শুরু করে শেষ করার দাবি জানান তিনি। 
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী আজহারুল ইসলাম বলেন, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এর পরও ওই সড়কের ৫০০ মিটারের নির্মাণকাজের সব বাধা অপসারিত হয়েছে। ২-১ দিনের মধ্যে ফান্ড ছাড় করছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। দ্রুত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে। কাজ শুরু হলে শেষ করতে বেশি সময় লাগবে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অসমাপ্ত আধা কিলোমিটারে দুর্ভোগ