একই মঞ্চে ওসি-বিএনপি ও আ.লীগের এক ঝাঁক নেতা, সমালোচনার ঝড়
Published: 11th, February 2025 GMT
চাঁপাইনবাবগঞ্জের ভোলাহাট উপজেলায় ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে দেখা গেল থানার ওসি, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাদের। গতকাল সোমবার বিকেলে উপজেলার জে.কে পোল্লাডাঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন মাঠে ‘স্বর্ণ কাপ ফুটবল প্রতিযোগিতা-২০২৫’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ দৃশ্য দেখা যায়।
ফুটবল প্রতিযোগিতার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভোলাহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন যুবদল নেতা সামিরুল ইসলাম গাজী। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘খেলা মানে আনন্দ। দল-মত নির্বিশেষে এ টুর্নামেন্ট সফল করতে সবার প্রতি অনুরোধ রইল সহযোগিতা করার। এখন কোনো দলীয় সরকার ক্ষমতায় নেই, আছে অন্তর্বর্তী সরকার। তাই খেলাটি যাতে সুষ্ঠুভাবে শেষ হয় সে ক্ষেত্রে প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করি।’
সভাপতির বক্তব্যে ওসি মো. শাহিনুর রহমান বলেন, ‘বর্তমান যুব সমাজ মাদক ও মোবাইল ফোনে আসক্ত। তারা মোবাইলে গেমস খেলে। কিন্তু আমাদের এমন খেলা খেলতে হবে যাতে শরীরের ঘাম ঝরবে। এতে দেহ-মন সুস্থ থাকবে।’
এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শুরু হয় সমালোচনা।
স্থানীয় ব্যক্তি মো. মুনসুর আলী লেখেন, ‘ধন্যবাদ তোমাদেরকে টুর্নামেন্ট কমিটিকে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগ মিলে তোমরা খেলাটাকে পরিচালনা করছ।’
শাহ জামাল খান মন্তব্য করেন, ‘ভোলাহাটেও তাহলে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন হলো। কাদের ভোট দিয়ে ক্ষমতায় বসাব সেটাই চিন্তায় পড়ে গেলাম। উনাদের না, পুনর্বাসনকারীদের?’
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে ভোলাহাট থানার ওসির মোবাইল ফোনে কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ প ইনব বগঞ জ ফ টবল ট র ন ম ন ট আওয় ম ল গ ব এনপ র রহম ন উপজ ল আওয় ম ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
সরকারি কর্মচারীকে পিটিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা বললেন, ‘রাগ কন্ট্রোল করতে পারিনি’
দিনাজপুরের বিরামপুরে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলার সময় বিএনপির নেতাদের সামনেই উপজেলা পরিষদের কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল নামের এক নেতার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় তিন কর্মচারী আহত হয়েছেন। তারা বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সোমবার দুপুরে দিকে উপজেলা পরিষদের মুক্ত মঞ্চ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব আরিফুর রহমান রাসেল বলেছেন, ‘আমি রাগ কন্ট্রোল (নিয়ন্ত্রণ) করতে পারিনি। একটা চড় মেরেছি। খাবার বিতরণের অনিয়ম ও সিনিয়র নেতাদের অপমান করায় এমনটি হয়েছে। তবে আমার ভুল হয়েছে।’
আহতরা হলেন, উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক এমদাদুল হক, আবু হোসেন, ইউএনও কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম ওরফে রনি। তাদের মধ্যে এমদাদুল হক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
ঘটনার সময় বিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুজহাত তাসনীম আওন, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মমতাজুল হক, উপজেলা বিএনপির সভাপতি মিঞা মো. শফিকুল আলম মামুন, সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল সেখানে উপস্থিত ছিলেন। ইউএনও এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে হাজার লোকের আয়োজন ছিল। সেখানে এমন ঘটনা ঠিক হয়নি। আহত তিন কর্মচারীকে থানায় অভিযোগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বলেন, এ ঘটনায় ইউএনওর কার্যালয়ের কর্মচারীর একটি অভিযোগ পেয়েছি।
জানা গেছে, বাংলা নববর্ষ ১৪৩২ বর্ষবরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে সোমবার উপজেলা পরিষদের ভেতর মুক্তমঞ্চে চলছিল। অনুষ্ঠানের ফাঁকে উপজেলা পরিষদ ও ইউএনও অফিসের কয়েকজন কর্মচারী আমন্ত্রিত অতিথিদের জন্য পান্তা, মাছ ,ভর্তা ও পানি আপ্যয়নের ব্যবস্থা করছিলেন। এ সময় পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল ও তার সহযোগীরা খাবার নিয়ে বাকবিতণ্ডা শুরু করে। এক পর্যায়ে উপস্থিত নেতাকর্মীদের সামনেই তারা বেধড়ক মারপিট করে তিনজনকে আহত করেন।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইউএনওর কার্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী মমিনুল ইসলাম রনি বলেন, সুন্দর পরিবেশে বর্ষবরণ অনুষ্ঠান চলছিল। এর ফাঁকে অতিথিদের জন্য পান্তা উৎসব শুরু করার জন্য আমরা কয়েকজন নিয়োজিত ছিলাম। আমাদের কাজের ফাঁকে বিএনপির পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আরিফুর রহমান রাসেল নিজেই খাবার নিতে শুরু করে। আমরা বাধা দিলে তারা আমাদের পিটিয়ে আহত করে।
অনুষ্ঠানের সামনের অংশে আমরা ছিলাম। ঘটনা আমাদের থেকে অনেক দূরে উল্লেখ করে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুর এলাহী চৌধুরী রুবেল বলেন, এমন একটি অনুষ্ঠানে এই আচরণ করা মোটেও ঠিক হয়নি। এমন আচরণের পর আমি ঘটনাস্থল থেকে চলে এসেছি।
অভিযুক্ত আরিফুর রহমান রাসেলের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা উপজেলা বিএনপির দায়িত্বে রয়েছি, ওরা পৌর কমিটির। তারপরও নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।