দিল্লিতে হারলেও পাঞ্জাবে ঐক্য অটুট, জানালেন আম আদমির মুখ্যমন্ত্রী মান
Published: 11th, February 2025 GMT
আম আদমি পার্টির (আপ) নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে বৈঠকের পর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত সিং মান জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী বদলের কোনো প্রশ্ন নেই। দলে ভাঙনের আশঙ্কাও নেই। দিল্লিতে বিপর্যয় হলেও পাঞ্জাবে সরকার ও দল অটুট আছে। থাকবেও।
দিল্লি বিধানসভার ভোটের ফল প্রকাশের পরই পাঞ্জাব বিধানসভার পরিষদীয় দলের সদস্যদের বৈঠকে ডেকেছিলেন দিল্লির সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও আপের শীর্ষ নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল। মঙ্গলবার ওই বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের জবাবে মান ওই মন্তব্য করেন।
দিল্লির নির্বাচনী প্রচার চলাকালে পাঞ্জাবে আপ পরিবারে অসন্তোষের খবর শোনা গিয়েছিল। ফল প্রকাশের পর পাঞ্জাব কংগ্রেস নেতা প্রতাপ সিং বাজওয়া দাবি করেছিলেন, আপের ৩০ জন বিধায়ক আগে থেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। আপে ভাঙনের ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রী মানের ওপর কেজরিওয়াল প্রসন্ন নন। তাঁকে বদলানো হতে পারে। বাজওয়ার দাবি ছিল, মানও দল বদল করতে পারেন।
দলীয় বিধায়কদের সঙ্গে কেজরিওয়ালের বৈঠকের পর এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মান বলেন, আপের বিধায়কদের দিকে না তাকিয়ে কংগ্রেস নেতাদের উচিত দিল্লিতে তাঁদের বিধায়কদের সংখ্যার হিসাব কষা। তিনি বলেন, ‘আমি দল ছাড়ব কি না, সেই জল্পনাতেও তাঁদের লাভ নেই। কারণ, সেই প্রশ্নই ওঠে না। এই দল আমরা নিজেদের ঘাম রক্ত দিয়ে গড়ে তুলেছি।’
মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে মানকে সরানোর আশঙ্কার কথাটি তুলেছেন দিল্লির রাজৌরি গার্ডেন কেন্দ্র থেকে জয়ী বিজেপি বিধায়ক মনজিন্দর সিং সিরসা। এক ভিডিও বার্তায় তাঁর দাবি, আপের রাষ্ট্রীয় আহ্বায়ক কেজরিওয়াল পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীকে নাকি সরিয়ে দিতে চাইছেন। কারণ, কেজরিওয়াল মনে করেন, মান তাঁর দায়িত্ব যোগ্যতার সঙ্গে পালন করতে পারছেন না। রাজ্যের নারীদের মাসে ১ হাজার টাকা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি তিনি এখনো রাখতে পারেননি। মাদকের রমরমাও বন্ধ করতে ব্যর্থ। এ অভিযোগের জবাবে মান বলেন, বিরোধীরা যা খুশি বলতে পারেন। নারীদের মাসিক অনুদান শিগগিরই দেওয়া শুরু হবে।
মান বলেন, দিল্লি ভোটে নিরলসভাবে কাজ করার জন্য পাঞ্জাবের বিধায়কদের কেজরিওয়াল আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
পাঞ্জাব বিধানসভার মোট সদস্যসংখ্যা ১১৭। এর মধ্যে আপ বিধায়কদের সংখ্যা ৯৩। দ্বিতীয় প্রধান দল কংগ্রেস। তাদের বিধায়কের সংখ্যা ১৬। অন্য বিরোধী দলের মধ্যে শিরোমনি আকালি দলের সদস্য ৩, বিজেপির ২। কংগ্রেসের দাবি অনুযায়ী ৩০ জন আপ সদস্য দল ত্যাগ করলেও সরকার পতনের আশঙ্কা নেই। সরকার গড়তে ন্যূনতম ৫৯ জনের সমর্থন প্রয়োজন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম খ যমন ত র সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
নাটোরে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষে আহত ৫
নাটোরের গুরুদাসপুরে বিএনপি-জামায়াত নেতাকর্মীদের সংঘর্ষে ৫ জন আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) রাতে উপজেলার নাজিরপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা নাটোর ও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
আহতরা হলেন-নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল (৪০), বিএনপি কর্মী হারুন (৩৬) ও জামাল হোসেন (৪৫) এবং জামায়াত কর্মী সোহাগ আহমেদ (৩০) ও কামাল হোসেন (৩২)।
এ ঘটনায় জামায়াত কর্মী সোহাগের বাবা বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। যুবদল নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তারা হামলার ভয়ে চিকিৎসাও নিতে পারছেন না।
আরো পড়ুন:
জামায়াতের ইফতার মাহফিলে বিএনপির বাধা, মামলা
গাজীপুরে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা বহিষ্কার
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, “এক পক্ষের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাতে খবর পাওয়ার পর পুলিশ পাঠিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে অপরাধীদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে।”
নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির হামিদুর রহমান সবুজ বলেন, “নাজিরপুর ইউনিয়ন জামায়াতের ইফতার মাহফিল উপলক্ষ্যে গণসংযোগ করছিলেন জামায়াতকর্মী চিকিৎসক আব্দুর রহিম, সোহাগ আহমেদ ও কামাল হোসেন। এ সময় নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুলের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি সমাধান করা হলেও কিছু সময় পরে বিপুল তার জনবল নিয়ে সোহাগ ও কামালের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এরপরেই দুপক্ষের সংঘর্ষ শুরু হয়। জামায়াতের দুই কর্মী রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
নাজিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, “নাজিরপুর বাজারে আমার বিপুল খেলাঘর নামের একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আমি রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা করি। জামায়াতের নেতাকর্মীরা যেটা দাবি করেছেন তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।”
সালেহ আহমেদ বিপুল বলেন, “আমার প্রতিবেশী চিকিৎসক আব্দুর রহিম আমার দোকানের কর্মচারীকে প্রায় সময় মারধর করে। আমি সেই বিষয়ে আব্দুর রহিমের সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ করেই আমার শার্টের কলার চেপে ধরে মারধর করতে থাকে। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলে স্থানীয় লোকজন এসে বিষয়টি সমাধান করে দেয়। কিন্তু আব্দুর রহিম তার আক্রোশ মেটানোর জন্য জামায়াতের নেতাকর্মীদের মোবাইল ফোনে ইফতার পার্টির গণসংযোগে বাধা দেওয়ার মিথ্যা কথা বলে ডেকে আনে। তারা প্রায় ২৫০-৩০০ লোক হাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে আমার এবং আমার সঙ্গে থাকা আরও দুই বিএনপি কর্মীর ওপর হামলা চালায়। ঘটনাস্থলেই আমরা ৩ জন রক্তাক্ত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে বিএনপির অন্যান্য নেতাকর্মীরা আমাদের উদ্ধার করে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যায়।”
নাটোর/আরিফুল/এসবি