চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার আয়োজন: আনন্দ-উৎসবে মেজবান মিলনমেলা
Published: 11th, February 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজ মাঠে গত শনিবার আনন্দ ও উৎসবে পালিত হয়ে গেল চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী ‘মেজবান ও মিলনমেলা-২০২৫’।
চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। এত মানুষের সমাগমে মুখরিত হয়ে ওঠে কলেজ প্রাঙ্গণ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ১৮ শতকে চালু হওয়া এই মেজবান অনুষ্ঠানের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে চট্টগ্রামের মানুষ।
এই ঐতিহ্য ধরে রাখতে দুই বছর পর পর মেজবান আয়োজন করে থাকে চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকা।হাজার হাজার মানুষের পদচারণায় উৎসবের আমেজে পরিণত হয় এই মেজবান। পরিচিত মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ, নিজেদের আঞ্চলিক ভাষায় আলাপের মধ্য দিয়ে এটি যেন হয়ে ওঠে ঢাকার বুকে একখণ্ড চট্টগ্রাম। ঢাকায় অবস্থানরত চট্টগ্রামবাসী এই ঐতিহ্যকে ধারণ করে প্রতিবারের মতো এই মেজবান ও মিলনমেলা আয়োজন করেছে।
সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ মুসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার উজ্জ্বল মল্লিকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন মেজবান কমিটির আহ্বায়ক নাছির উদ্দিন, সদস্য সচিব মো.
সমিতির অন্য সদস্যদের পাশাপাশি সচিব, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী, প্রকৌশলী, বিচারপতি, আইনজীবী, চিকিৎসকসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এতে অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ঐতিহ্যবাহী ‘চট্টলশিখা’র মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং প্রতিবারের মতো এবারও সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদানের জন্য পাঁচ বিশিষ্টজনকে ‘চট্টগ্রাম সমিতি পদক’ দেওয়া হয়।
ঢাকা/সাজ্জাদ/সাইফ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শাল-গজারি বনে রং ছড়িয়ে বিদায় নিচ্ছে বসন্ত
প্রকৃতি থেকে বসন্ত বিদায় নিচ্ছে। আসছে গ্রীষ্ম। বসন্তের বিদায়বেলায় বিস্তৃত সবুজ শাল-গজারি বনে বাসন্তী রং ছড়াচ্ছে হলদে শাল-গজারি ফুল। গাজীপুরের অধিকাংশ এলাকাজুড়ে এখন বসন্তের এই রং উৎসব চলছে। বিশেষ করে শ্রীপুর, গাজীপুর সদরের একাংশ, কাপাসিয়ার একাংশ ও কালিয়াকৈর উপজেলার বিস্তৃত এলাকাজুড়ে চলছে এই রঙের উৎসব।
শ্রীপুরের কর্ণপুর থেকে বরমী কিংবা হায়াতখার চালা থেকে গোসিংগা আঞ্চলিক সড়কের মতো অনেকগুলো সড়ক ভ্রমণ এখন যে কাউকে এক ব্যতিক্রমী বসন্তের অভিজ্ঞতা দেবে। বিশেষ করে এ সময় মাওনা থেকে কালিয়াকৈর উপজেলায় যাতায়াতের সড়কপথের পুরোটাই ফুলে ছেয়ে থাকে। এসব সড়কে ভ্রমণ করলে দেখা যায়, দুই পাশে শুকনা পাতার ওপর ছড়িয়ে আছে কাঁচা হলুদ রঙের শাল-গজারি ফুল। সঙ্গে আছে মোহনীয় গন্ধ।
শাল-গজারি বনের কোনো একটি গাছের মাথায় উঠে চারদিকে তাকালে মনে হবে, বনের গাছপালার ওপর কেউ যেন হলুদ রঙের মাদুর বিছিয়ে রেখেছে। ফুলে ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমাছিসহ নানা কীটপতঙ্গ। পাখিদের ওড়াউড়িতে বনজুড়ে যেন এক মহোৎসব চলছে। পাখির ডানা ঝাপটানো কিংবা হঠাৎ একটু দমকা বাতাসে গাছ থেকে নিচে ঝরে পড়ে হলুদ শাল-গজারি ফুল। বসন্তে গাছের সব পাতা ঝরে যাওয়ার পর গাছে থাকা হলুদ ফুলগুলো এক অনন্য সৌন্দর্য ছড়ায়।
প্রতিবছর বসন্তের মাঝামাঝি থেকে শাল-গজারিগাছে ফুল ফুটতে শুরু করে। এরপর গাছ থেকে অপরিণত অবস্থায় বেশির ভাগ ফুল নিচে ঝরে পড়ে। থেকে যাওয়া ফুলগুলো বড় হয়। বৈশাখের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে এসব ফুল পরিণত হয়ে যায়। তখন এর রং হয় কিছুটা বাদামি।
পরিণত ফুলের আবার অন্য রকম সৌন্দর্য ও বৈশিষ্ট্য আছে। এসব ফুলের এক পাশে থাকে বীজ। আর অন্য পাশে ফুলের পাপড়ির মতো ছড়ানো বড় বড় পাতলা পাপড়ি। একসময় গাছ থেকে বীজসহ এসব ফুল ঝরে পড়ে। তখন বীজের এক পাশে থাকা পাপড়ির মতো অংশ বাতাসে ঘুরতে ঘুরতে এলোমেলোভাবে দূরদূরান্তে বীজগুলোকে ছড়িয়ে দেয়।
বসন্তের এ সময় শাল-গজারি বনে বিভিন্ন ফুল ফোটে। এগুলোর মধ্যে আছে কনকচাঁপা, জারুল, শিমুল, শেফালি, শিরীষ, মান্দার, কামিনী, অতসী, দাঁতরাঙা, কাঞ্চন, বেলি, শটি, রঙ্গনসহ নানা ফুল।
শাল-গজারি বনের বর্ণিল বিভা বসন্তের সৌন্দর্যে যোগ করে নতুন মাত্রা