রাজশাহীতে পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে নগরের হেলেনাবাদ সরকারি কোয়ার্টার থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘পারিবারিক বিষয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মারা যাওয়া পুলিশ সদস্যের মনোমানিল্য ছিল। এর জেরে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

আরো পড়ুন:

খুলনায় প্রবাস ফেরত যুবকের হাত-পা কাটা ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

গাছে ঝুলছিল প্রতিবন্ধী নারীর বিবস্ত্র মরদেহ 

মারা যাওয়া পুলিশ সদস্যের নাম আমিনুল ইসলাম (৩৫)। তিনি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখায় (ডিবি) কর্মরত ছিলেন। থাকতেন নগরের হেলেনাবাদ সরকারি কোয়ার্টারে। তার গ্রামের বাড়ি নওগাঁর মান্দা উপজেলার শিবনগর। বাবার নাম মৃত আজিম উদ্দিন প্রামানিক। 

পুলিশ জানায়, সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমিনুল ইসলামের স্ত্রী স্বামীর ঝুলন্ত মরদেহ দেখে থানায় ফোন করেন। পুলিশ গিয়ে একটি ঘরে ফ্যানের সঙ্গে আমিনুলের গলায় শাড়ি প্যাঁচানো ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়। 

রাজশাহী নগরের রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল ইসলাম বলেন, “রাত ১১টার দিকে বাইরে থেকে বাসায় যান আমিনুল। এরপর তিনি আলাদা ঘরে শুয়েছিলেন। খবর পেয়ে রাতেই মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।”

ওসি আরো বলেন, “গ্রামের বাড়ি থেকে আমিনুলের পরিবারের লোকজন এসেছেন। এ ব্যাপারে থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এএসআই আমিনুল ইসলাম আত্মহত্যা করেছেন। তবে আমরা কারণ নিশ্চিত হতে পারিনি। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে। পুলিশি তদন্ত এবং ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর মরদ হ ল ইসল ম আম ন ল তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দোষী পুলিশের সাজা দেখার অপেক্ষায় মায়ের ১১ বছর

‘আমার সামনে থেকে ছেলেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে মেরেছে পল্লবী থানা পুলিশ। সেই ঘটনার ১১ বছর পূরণ হলো। এখনও আমি দোষীদের সাজা দেখার অপেক্ষায় আছি। জানি না, বিচার দেখে যেতে পারব কিনা।’

এভাবেই নিজের অসহায়ত্ব তুলে ধরেন পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়া ইশতিয়াক হোসেন জনির মা খুরশিদা বেগম। প্রিয় সন্তানকে হারানোর বেদনা এবং অসুস্থতার কারণে বয়সের চেয়ে বেশি ভেঙে পড়েছে তাঁর শরীর। তিনি বলেন, ‘এর মধ্যেই আমার ছোট ছেলের নানা রকম ক্ষতি করার চেষ্টা চালাচ্ছে আসামিপক্ষ।’

২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি পল্লবী ১১ নম্বর সেকশনের ইরানি ক্যাম্পে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে গাড়িচালক জনি ও তাঁর ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকিকে আটক করে পুলিশ। তাদের পল্লবী থানায় নিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। পরদিন ৯ ফেব্রুয়ারি জনির মৃত্যু হয়। রকি ছাড়া পাওয়ার পর ওই বছরের ৭ আগস্ট এ ঘটনায় মামলা করেন। এটি ছিল নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইনে করা প্রথম মামলা। 

২০২০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক কে এম ইমরুল কায়েস এ মামলার রায় ঘোষণা করেন। এতে তিন পুলিশ কর্মকর্তার যাবজ্জীবন এবং দুই সোর্স সুমন ও রাসেলকে সাত বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে দণ্ডিত প্রত্যেক পুলিশ কর্মকর্তাকে ভুক্তভোগীর পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়। 

সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম রেজাউল করিম সমকালকে বলেন, জনি হত্যায় দণ্ডিতদের মধ্যে পুলিশের এএসআই কামরুজ্জামান মিন্টু এখনও পলাতক। দীর্ঘদিন পলাতক থাকার পর পুলিশের সোর্স মো. রাসেল গ্রেপ্তার হলেও এখন জামিনে রয়েছেন। আর পল্লবী থানার তৎকালীন এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ, এএসআই রাশেদুল হাসান ও পুলিশের সোর্স সুমন কারাগারে। তাদের আপিলের আংশিক শুনানি হয়েছে। এর মধ্যে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারিক অধিক্ষেত্র পরিবর্তন হয়েছে। ফলে এখন নতুন বেঞ্চ নির্ধারণের জন্য আবেদন করা হবে। বেঞ্চ পেলে বাকি শুনানি শুরু হবে। এমনিতে বিচার শেষ হওয়ার পথে আর কোনো বাধা নেই। তবে আপিল শুনানিতে সাধারণত অনেক সময় লেগে যায়।

নিহতের ছোট ভাই ও মামলার বাদী রকি বলেন, অনেক চাপ ও হুমকি-ধমকির মধ্যেও ন্যায়বিচার পাওয়ার আশায় লড়াই করে যাচ্ছি। আসামিপক্ষের লোকজন বিভিন্ন সময়ে ভয় দেখায়, ক্ষতি করার চেষ্টা করে। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর আমার গ্যারেজে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাকে ‘বাড়াবাড়ি’ করতে নিষেধ করা হয়েছে। 

নিহত জনির সন্তানদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের প্রতি দাবি জানান রকি। আইনজীবীরা বলছেন, নির্যাতনের শিকার ব্যক্তি বা তাঁর ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ক্ষতিপূরণ দিতে কল্যাণ তহবিল গঠন করা দরকার। সেই সঙ্গে মামলার দীর্ঘসূত্রতার কারণে ভুক্তভোগীর পরিবার যে ভোগান্তির শিকার হয়, তা থেকে উত্তরণের জন্য রাষ্ট্রের নির্দিষ্ট নীতিমালা ও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির পদক্ষেপ থাকা প্রয়োজন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এএসআইয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
  • এক থানার ১৩ পুলিশ প্রত্যাহার 
  • কোম্পানীগঞ্জ থানা থেকে ১৩ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার
  • দোষী পুলিশের সাজা দেখার অপেক্ষায় মায়ের ১১ বছর
  • ময়মনসিংহে ট্রাকচাপায় পুলিশ নিহত
  • মুক্তাগাছায় ট্রাকচাপায় এএসআই নিহত
  • চাকরি ফিরে পাচ্ছেন ‘চাকরিচ্যুত’ দেড় হাজার পুলিশ সদস্য