বেড়েছে খেলাপি ঋণ, মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমেছে
Published: 11th, February 2025 GMT
বেড়েছে খেলাপি ঋণ। ২০১১ সালে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ যেখানে ছিল ৬ দশমিক ১২ শতাংশ, সেখানে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ ১৩ বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ১০.৮১ শতাংশ।
এ সময় আর্থিক খাতের অব্যবস্থাপনার কারণে অন্তত ১০টি ব্যাংক তীব্র ঝুঁকির মুখে রয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ প্রধান উপদেষ্টার কাছে দেওয়া ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি: সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ এবং ভবিষ্যৎ করণীয়’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে, কমেছে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মাথাপিছু আয়
স্বর্ণের দাম বাড়ল, বৃহস্পতিবার থেকে কার্যকর
সরবরাহ চেইনের দুর্বলতা ও ক্রুটির কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুদ্রানীতি ও রাজস্ব নীতির আওতায় চাহিদা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হলেও সরবরাহ চেইনের দুর্বলতা ও কাঠামোগত ক্রুটির কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। গত ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে এটি কমে ১০.
খেলাপি ঋণের ভয়াবহতা সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের জুনে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল এক লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকা। এক বছরের ব্যবধানে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।
২০২২ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২২ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার ৪৪১ কোটি, জুনে ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৭ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৩৪ হাজার ৩৯৬ কোটি, ডিসেম্বরে ১ লাখ ২০ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা।
২০২৩ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২১ কোটি, জুনে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি, সেপ্টেম্বরে ১ লাখ ৫৫ হাজার ৩৯৮ কোটি ও ডিসেম্বরে ১ লাখ ৪৫ হাজার ৬৩৩ কোটি টাকা।
২০২৪ সালের মার্চে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার ২৯৫ কোটি, জুনে ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি ও সেপ্টেম্বরে ২ লাখ ৮৪ হাজার ৯৭৭ কোটি টাকা।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের ঝুঁকি ও প্রকৃত অবস্থা সঠিকভাবে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী নিরূপণের লক্ষ্যে অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ সম্পাদনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বিশ্বমানের অ্যাকাউন্টিং ফার্ম এবং কে পি এম জি মোট ছয়টি ব্যাংকের অ্যাসেট কোয়ালিটি রিভিউ সম্পাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যার কোয়ালিটি অ্যাসুরান্স নিশ্চিত করার জন্য একটি ফার্মকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকের সুশাসন নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন ও ব্যবস্থাপনা পরিবর্তন আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ায় ব্যাংকের লুণ্ঠিত সম্পদ উদ্ধারে ব্যাংকের আইন বিভাগ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নীতিমালা জারি করা হয়েছে। সংকট উত্তরণে এবং গ্রাহকদের আস্থা অটুট রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
মূল্যস্ফীতি সম্পর্কে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরবরাহ চেইনের দুর্বলতা ও কাঠামোগত ক্রুটির কারণে খাদ্য মূল্যস্ফীতি উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। গত ডিসেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিল ১২ দশমিক ৯২ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে এটি কমে ১০.৭২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে গত জানুয়ারিতে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ এবং গত জুলাইয়ে ছিল ১১ শতাংশের বেশি।
অন্যদিকে, বর্তমানে গড় মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশের উপরে। গত জানুয়ারি শেষে গড় মূল্যস্ফীতির হার ছিল ১০ দশমিক ৩৪ শতাংশ এবং গত জুনে গড় হার ছিল ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে সরকারের গৃহীত ৯টি পদক্ষেপের উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব পদক্ষেপ সত্ত্বেও গড় মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে রয়েছে। অথচ বাংলাদেশের প্রধান আমদানির উৎস চীন ও ভারতে মূল্যস্ফীতির হার ৪ শতাংশের কম।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে টাকার বিনিময় হার কিছুটা স্থিতিশীল রয়েছে। ফলে আমদানিজনিত কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ার সম্ভাবনা কম। ‘সরবরাহ ব্যবস্থার কাঠামোগত ক্রুটি নিরসনে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন’ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সাময়িক পদক্ষেপ হিসেবে অধিকতর করণীয় চারটি পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে-পণ্য সরবরাহ চেইনের সব স্তরের প্রতিবন্ধকতা কঠোরভাবে প্রতিহত করা, এক্ষেত্রে ডেমন্সস্ট্রেশন ইফেক্ট হিসেবে বিভাগীয় বা জেলা পর্যায়ে আগামী এক মাসে বিশেষ মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা। হিমাগারসহ সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের (চাল, পেঁয়াজ, আলু ও তেল ইত্যাদি) গুদাম নিবিড় পরিবীক্ষণের আওতায় নিয়ে আসা; অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে প্রতিযোগিতা কমিশনকে শক্তিশালী করা এবং প্রয়োজনে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে এর কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় সার, বীজ ও পরামর্শ সেবা নিশ্চিত করা।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে ইতোমধ্যে গৃহীত সরকারের পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে-সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও সহায়ক রাজস্ব নীতি গ্রহণ; নীতি সুদের হার ধাপে ধাপে বাড়িয়ে গত ডিসেম্বরে ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে (গত জুলাইয়ে ছিল ৮ শতাংশ) এবং সুদহারের করিডোরের ঊর্ধ্বসীমা হচ্ছে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ; সব ধরণের টাকা ছাপানো বন্ধ রাখা; কম গুরুত্বপূর্ণ ও অপ্রয়োজনীয় উন্নয়ন প্রকল্প বাতিলসহ সরকারি খরচ কমানোর সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। চাল-আলু-পেঁয়াজ-ভোজ্যতেল ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর শুল্ক অব্যাহতি/কমানো। দেশের ১ কোটি পরিবারকে ফ্যামিলি কার্ডের মাধ্যমে সুলভ মূল্যে পণ্য সরবরাহ করা। ট্রাকের মাধ্যমে বিভাগীয় শহরগুলোতে তেল-চিনি-ডাল বিক্রি এবং রমজানে এর সঙ্গে সরবরাহ করা হবে খেজুর ও ছোলা।
ঢাকা/হাসনাত/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২০২৪ স ল র স প ট ম বর ড স ম বর পদক ষ প পর য য় দশম ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বোতলজাত সয়াবিন উধাওয়ের পথে
চট্টগ্রাম নগরের বড় বাজারগুলোর একটি বহদ্দারহাট। সেই বাজারে পাইকারি ও খুচরা মিলিয়ে অন্তত ৩০টি দোকানে সয়াবিন তেল বিক্রি হয়। গতকাল শনিবার এসব দোকান ঘুরে শুধু একটিতে সয়াবিন তেল পাওয়া গেল। তা–ও দুটি পাঁচ লিটারের বোতল।
ঢাকার চিত্র মোটামুটি একই। স্বাভাবিক সময়ে যেখানে সব মুদিদোকানেই বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়, সেখানে এখন সয়াবিন তেল খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে। বড় দোকান থেকে পাঁচ লিটারের বোতল নিলে সাধারণত সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য (এমআরপি) থেকে কিছুটা ছাড় পাওয়া যেত। এখন দিতে হচ্ছে নির্ধারিত দামের চেয়েও বেশি। অনেক ক্ষেত্রে তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য কিনতে বাধ্য করছেন দোকানদার। অন্যদিকে বাড়তি চাহিদার সুযোগে খোলা তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন বিক্রেতারা।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের মোহাম্মদিয়া হাউজিং কাঁচাবাজার থেকে গতকাল দুপুরে পাঁচ লিটারের এক বোতল সয়াবিন তেল কিনতে যান মাহফুজুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দোকানদার তাঁকে যে ব্র্যান্ডের সয়াবিন তেল দিচ্ছিলেন, সেই ব্র্যান্ডের তিন কেজি সুগন্ধি চালও নিতে হবে বলে শর্ত দেন। তিনি তেল নেননি।
সয়াবিন বীজের আমদানিও বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে সয়াবিন বীজ আমদানি হয়েছে তিন লাখ টন, যা গত এক বছরে এত বেশি সয়াবিন বীজ আমদানির রেকর্ড নেই।সংসারে অতি জরুরি নিত্যপণ্যের একটি ভোজ্যতেল। নগরের বেশির ভাগ মানুষ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের বোতলজাত সয়াবিন তেল কেনেন। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) হিসাবে, দেশে বছরে প্রায় ২২ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে, যার বড় অংশ আমদানি করে মেটানো হয়। দেশীয় বড় বড় শিল্পপ্রতিষ্ঠান অপরিশোধিত ভোজ্যতেল ও বীজ আমদানি করে তা থেকে তেল উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যাচ্ছে, গত নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অপরিশোধিত সয়াবিন তেল খালাস হয়েছে ২ লাখ ৩২ হাজার টন, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬৯ শতাংশ বেশি। সয়াবিন বীজের আমদানিও বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে সয়াবিন বীজ আমদানি হয়েছে তিন লাখ টন, যা গত এক বছরে এত বেশি সয়াবিন বীজ আমদানির রেকর্ড নেই।
তারপরও কেন বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া যাচ্ছে না, জানতে চাইলে ভোজ্যতেল সরবরাহকারী শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা নিয়মিত বাজারে তেল সরবরাহ করছি। প্রতিদিন যা সরবরাহ করছি, তা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও মনিটরিং সেলকে জানাচ্ছি। কিন্তু সরবরাহ সংকট কেন, তা বলতে পারব না।’
ভোজ্যতেলের বাজারের আরেক শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের (এমজিআই) উপমহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার প্রথম আলোকে বলেন, শীতের শেষ দিকে সয়াবিন তেলের চাহিদা কমার কথা। এখন তো সরবরাহে ঘাটতি হওয়ার কথা নয়।
ভোজ্যতেলের বাজারে আটটির মতো আমদানি, পরিশোধন ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সক্রিয়। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সবার সরবরাহ স্বাভাবিক নয়। অনেকেরই ঘাটতি আছে বলে বাজারে সংকট তৈরি হয়েছে। অন্যরা তার সুযোগ দিচ্ছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ট্যারিফ কমিশন কোম্পানিগুলোর কাছে সরবরাহের তথ্য চেয়েছে। শিগগিরই তাদের সঙ্গে বৈঠক হতে পারে। বাণিজ্যসচিবের দায়িত্বে থাকা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, বোতলজাত তেলের সরবরাহ সংকটের বিষয়টি তাঁদের জানা। আজ রোববার একটি বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানে পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হবে।
আমরা নিয়মিত বাজারে তেল সরবরাহ করছি। প্রতিদিন যা সরবরাহ করছি, তা বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও মনিটরিং সেলকে জানাচ্ছি। কিন্তু সরবরাহ সংকট কেন, তা বলতে পারব না।সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহাঅবশ্য বোতলজাত তেলের এই সংকট গত দু-চার দিনের নয়, গত প্রায় চার মাস ধরে চলছে। নভেম্বরে এ সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছিল। এরপর সরকার সয়াবিন তেল আমদানিতে শুল্ক-কর কমায়। তারপরও সংকট না কাটায় গত ৯ ডিসেম্বর সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে আট টাকা বাড়ানোর সুযোগ দেওয়া হয়। তাতে প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম হয় ১৭৫ টাকা।
রাজধানীর কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেট ও হাতিরপুল বাজার এবং চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট ও খাতুনগঞ্জ বাজারে খোঁজ নিয়ে গতকাল জানা যায়, এসব বাজারের বেশির ভাগ দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল নেই।
মোহাম্মদপুর কৃষি মার্কেটের খোকন জেনারেল স্টোরের বিক্রেতা মো. হুমায়ুন কবির বলেন, গতকাল তিনি পাইকারি দোকান থেকে পাঁচ লিটারের পাঁচটি বোতল কিনেছেন। এসব বোতলের গায়ে লেখা সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ৮৫০ টাকা। তিনি কিনেছেন ৮৬০ টাকায় এবং বিক্রি করেছেন ৮৬৫-৮৭০ টাকা করে।
হুমায়ুন বলেন, ‘এখন শুধু পরিচিতদের কাছে বেশি দামে কেনা সয়াবিন তেল বিক্রি করি। না হলে ক্রেতাদের সঙ্গে বাড়তি দাম নিয়ে অযথা তর্ক হয়।’
বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম কমছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, জানুয়ারি মাসে প্রতি টন সয়াবিন তেলের গড় দাম দাঁড়ায় ১ হাজার ৬১ ডলারে, যা গত নভেম্বরের চেয়ে ১০০ ডলারের মতো কম। যদিও বাংলাদেশে দাম বাড়ছে। বোতলজাত তেল না থাকায় খোলা সয়াবিন তেলের দাম এক সপ্তাহে লিটারপ্রতি ৬ থেকে ৭ টাকা বেড়েছে। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এ তথ্য জানিয়ে বলছে, এখন খোলা সয়াবিনের দাম প্রতি লিটার ১৮০-১৮২ টাকা।
ঢাকার মৌলভীবাজারের ভোজ্যতেলের পাইকারি বিক্রেতা আবুল হাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কোম্পানিগুলো আমাদের জানিয়েছে, এক মাসের মধ্যে সরবরাহ ঠিক হবে। তবে রমজান মাস আসার আগে সংকট না কাটলে আমরা পরিস্থিতি কোনোভাবে সামাল দিতে পারব না।’
এখন শুধু পরিচিতদের কাছে বেশি দামে কেনা সয়াবিন তেল বিক্রি করি। না হলে ক্রেতাদের সঙ্গে বাড়তি দাম নিয়ে অযথা তর্ক হয়।বিক্রেতা মো. হুমায়ুন কবির