ইতিহাসের দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকা জাতি আমরা, বড় বেশি দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখি তাৎক্ষণিকতায়, মাতামাতি চলে হালফিল ঘটনা নিয়ে। তদুপরি ইতিহাস বিবেচনায় উপর মহলের রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব ও পালাবদল মনোযোগ কাড়ে বেশি, সমাজের রূপান্তর রয়ে যায় অগোচরে। অথচ ইতিহাস এক মহাগ্রন্থ, বহু অধ্যায়ে তা বিন্যস্ত, বহু বিষয় তার অন্তর্গত। সেই গভীরতা ও বিস্তার বুঝতে চাই বহুকৌনিক আলোক সম্পাত, বিশেষভাবে আলোকিত দিক সমুহে, যেমন রয়েছে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও জনপদ। 


ইতিহাস অনুধাবনে আঞ্চলিক ইতিহাসের গুরুত্ব অপরিসীম। যে-কাজে আমরা বিশেষ পারঙ্গম হইনি। জাতির এ দৈন্য মোচনে একক ভাবে বড় দায়িত্ব সম্পাদন করলেন রফিউর রাব্বি, সংস্কৃতিকর্মী, সংগঠক, শিল্পী, লেখক ও নারায়ণগঞ্জের জনসমাজের প্রতিনিধি। যে-কাজ একদল ঐতিহাসিকের, বড় মাপের প্রকল্প ছাড়া সম্পাদনের কথা ভাবা যায় না, জনকাতারের সদাব্যস্ত এই ব্যক্তিত্ব আপন তাগিদ থেকে সেই গুরু দায়িত্ব পালন করলেন। ঢাকার সমীপবর্তী, শহর হিসেবে মধ্যযুগীয় ঢাকার চাইতেও প্রাচীন এ নারায়ণগঞ্জ। নারায়ণগঞ্জের সমৃদ্ধ অথচ অকীর্তিত ইতিহাস, ঐতিহ্য, শিক্ষা, সংস্কৃতি, সাহিত্য, ললিত-কলা, শিল্প-বাণিজ্য ইত্যাদি প্রোজ¦ল হয়ে ফুটে উঠেছে “নারায়ণগঞ্জের সংস্কৃতি ইতিহাস ঐতিহ্য” গ্রন্থে। বাংলাদেশের ইতিহাস-চর্চায় বিশেষ অবদান রাখবে শ্রমসাধ্য নিষ্ঠাবান ব্যতিক্রমী এই আকড় গ্রন্থ।             


মফিদুল হক: লেখক, গবেষক, ট্রাষ্টি: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর 
 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ র

এছাড়াও পড়ুন:

রূপগঞ্জে কাজী মনিরের সমাবেশে  ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, সমালোচনার ঝড়

রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপির সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান নিয়ে স্থানীয় বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে তোলপাড় চলছে। ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির। গত শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বাকেল উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন উপজেলার কাজী আব্দুল হামিদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এই সমাবেশে আয়োজন করেছিল। সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানের পর থেকে রূপগঞ্জসহ নারায়ণগঞ্জ জেলা জুড়ে আলোচনা সমালোচনার ঝড় বইছে।


সমাবেশে রূপগঞ্জ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব রহমান নিজের বক্তব্যে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়েছেন, যা নিয়ে হচ্ছে আলোচনা-সমালোচনা। পরে সভা মঞ্চ থেকে মাহাবুবকে দলের নেতাকর্মীরা অপমান করে নামিয়ে দেন। বিএনপির স্থানীয় অনেক নেতাকর্মীর দাবি, আওয়ামী লীগের সময় সুযোগ-সুবিধা নিয়েছেন মাহাবুব রহমান। ৫ আগষ্টের পর বিএনপিতে ফিরেন তিনি। 


নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি আবু মোহাম্মদ মাসুমের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামান মনির। সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।


রূপগঞ্জ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব রহমান ‘জয় বাংলা জয় ....’ বলে বক্তব্য শেষ করেন। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক আলোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হচ্ছে সমালোচনা।


এ বিষয়ে বিএনপি নেতা মাহাবুব রহমান বলেন, আমি ভুল করে ‘জয় বাংলা বলে স্লোগান দিয়েছি। তবে জয় বাংলা স্লোগান আমাদের দুশমন, এটা আমাদের খানদানের দুশমন। আবেগের মধ্যেই জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলেছিলাম। বিএনপির এ নেতার দাবি, তার বক্তব্যের শেষের দিকে জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বলা ভুল হয়েছে। 


রূপগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, মাহাবুব রহমান আমাদের একজন প্রবীন নেতা। উনি কিভাবে জয় বাংলা বলে স্লোগান দিয়েছেন তা বুঝতে পারছি না। তাছাড়া শুনেছি, তিনি ৫ আগষ্টের আগে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা কাজী মনিরুজ্জামানের সাথে রাজনীতি করছেন। এটি তিনি হয়তো ইচ্ছাকৃত করেননি।


রূপগঞ্জ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে গত ১৭ বছর আওয়ামী লীগ বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর নিপীড়ন চালিয়েছে। শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর তার কিছু দোষর কিছু নেতার ছত্রছায়ায় তাদের দল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে। মাহাবুব রহমান আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা নিয়েছিলেন। বিএনপির সমাবেশে তার এমন বক্তব্য মেনে নেওয়া যায় না।


এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলহাজ¦ গোলাম ফারুক খোকন বলেন, কোনো বিএনপির নেতাকর্মী নিষিদ্ধ স্লোগান দিতে পারবে না। সংগঠন বহির্ভূত কোনো কর্মকানেড্ কেউ জড়ালে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। 


এদিকে স্থানীয়দের একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামীলীগের গাজী গোলাম দস্তগীর গাজীর বহু কর্মী-সমর্থক পুলিশী ঝামেলা এড়াতে বিএনপিতে ভিড়েছে। দল ভারী করতে রূপগঞ্জের শীর্ষ নেতারা তাদের কাছে নিয়েছে। তারই বহি:প্রকাশ ‘বিএনপির সমাবেশে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান। 

 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নারায়ণগঞ্জে বিএনপির সব পুরনো কমিটি ভেঙ্গে নতুন কমিটি করার নির্দেশ
  • বন্দরে ৪ আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার 
  • ফতুল্লায় যুবদল নেতা হত্যায় আদালতে আসামির জবানবন্দি
  • নারায়ণগঞ্জের ৫টি আসনে জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা কেন্দ্রে
  • নারায়ণগঞ্জে গ্রেপ্তার ৪০
  • শহীদ মিনারে ‘আমাদের স্বজন, আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক পথ নাটক পরিবেশিত
  • রূপায়ণ টাউনে চাঁদার অভিযোগ করতে গিয়ে উল্টো ফেঁসে গেলো আজমেরীর ক্যাডার রাজ
  • শহরের যানজট নিরসনে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান
  • রূপগঞ্জে কাজী মনিরের সমাবেশে  ‘জয় বাংলা’ স্লোগান, সমালোচনার ঝড়