পুলিশ সদস্যকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতার বিরুদ্ধে মামলা, পরে কারাগারে
Published: 11th, February 2025 GMT
নরসিংদীর শিবপুরে থানার ভেতর দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্যের গালে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবিদ হাসান ওরফে জজ মিয়ার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে ভুক্তভোগী কনস্টেবল সবুজ মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি করেন। ওই মামলায় তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আবিদ হাসান শিবপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যসচিব ও মাছিমপুর ইউনিয়নের পুবেরগাঁও এলাকার বাসিন্দা। ওই মামলায় তাঁকে একমাত্র আসামি করা হয়েছে।
মামলা দায়েরের পর আজ বেলা তিনটার দিকে আবিদকে জেলা আদালতে তোলা হয়। এ সময় বিচারক পরবর্তী শুনানির তারিখ নির্ধারণ করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আরও পড়ুননরসিংদীতে থানায় পুলিশ সদস্যকে থাপ্পড় দেওয়ার অভিযোগে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আটক৩ ঘণ্টা আগেএর আগে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে শিবপুর থানা কমপ্লেক্সে হাজতখানার সামনে আটক হন আবিদ হাসান। অপারেশন ডেভিল হান্টে গ্রেপ্তার জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) আওয়ামী লীগ–সমর্থিত চেয়ারম্যান নাদিম সরকারকে ছাড়াতে তদবির করার জন্য থানায় গিয়েছিলেন তিনি। ঘটনার পর আবিদকেও আটক করে হাজতখানায় রাখা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত থানার হাজতখানায় সেন্ট্রির দায়িত্ব পালন করছিলেন কনস্টেবল সবুজ মিয়া। এ সময় ‘অপারেশন ডেভিল হান্টে’ আটক ব্যক্তিদের থানায় আনা হচ্ছিল। তাঁদের মধ্যে নাদিম সরকারও ছিলেন। ওই সময় আসামিদের দেখতে অনেক লোক থানায় ভিড় করেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে দলবল নিয়ে আবিদ হাসান থানাহাজতের সামনে অবস্থান নেন। তিনি নাদিম সরকারসহ অন্য আসামিদের দেখার কথা বলে তাঁদের ছবি তুলছিলেন। একপর্যায়ে নিজের মুঠোফোন ব্যবহার করে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির সঙ্গে আসামিদের কথা বলিয়ে দিচ্ছিলেন। ওই সময় কনস্টেবল সবুজ তাঁকে বাইরে যেতে বলেন। কিন্তু নিষেধ অমান্য করে আবিদ আবারও মুঠোফোনে আসামিদের কথা বলিয়ে দিতে যান। এতে বাধা দিলে সবুজের গালে থাপ্পড়ের পাশাপাশি কিল-ঘুষি মারতে শুরু করেন আবিদ। পরে ওই পুলিশ সদস্য ফ্লোরে পড়ে গেলে তাঁর অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘এ থানায় কীভাবে চাকরি করেন, দেখে নেব।’
শিবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেনকে বিষয়টি জানানো হলে তিনি আবিদকে আটকের নির্দেশ দেন। ওসি বলেন, থানায় গিয়ে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে আবিদ হাসানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল হারিস রিকাবদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আবিদ হাসানকে গ্রেপ্তারের খবর শুনেছি। তবে ঘটনার বিস্তারিত এখনো জানি না। কেন আওয়ামী লীগ নেতার জন্য সে থানায় গিয়েছিল, তাদের মধ্যে কোনো সম্পর্ক আছে কি না, তা–ও জানি না।’ পুলিশের সঙ্গে আর্থিক লেনদেনের কোনো ঘটনা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব ঘটনা তো অত্যন্ত গোপনে ঘটে। এখানে এমন কিছু ঘটেছে কি না, তা–ও খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প ল শ সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
কান্নায় ভেঙে পড়ছেন শিশুটির মা, অপরাধীদের ফাঁসি চাইলেন বোন
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যাওয়া শিশুটির পরিবারে চলছে শোকের মাতম। সন্তানের মৃত্যুতে শিশুটির মা আয়েশা অক্তার বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছেন। আহাজারি করে তিনি ধর্ষকদের ফাঁসির দাবি জানাচ্ছেন। শিশুটির বোনও অঝোরে কাঁদছেন। তিনি অভিযুক্ত ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
শিশুটির বাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, তার প্রতিবন্ধী বাবা নির্বাক হয়ে পড়েছেন। পরিবারে অন্য সদস্যরাও কান্নাকাটি করছেন। এ মৃত্যুতে গ্রামবাসীরাও মর্মাহত।
স্থানীয় সব্দালপুর ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, তিনি পরিবারটির পাশে আছেন। তাদের সব ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে।
আট বছরের শিশুটি ৫ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়ে গভীর রাতে ধর্ষণের শিকার হয়। শিশুটিকে প্রথমে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে স্থানান্তর করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তার অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। পরে বৃহস্পতিবার রাতে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি হলে শনিবার (৮ মার্চ) বিকেলে শিশুটিকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) স্থানান্তর করা হয়। সেখানে তার চিকিৎসা চলছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সেখানে তার মৃত্যু হয়। সন্ধ্যা ৭টায় সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টারে করে তাকে মাগুরা আনা হয়। এরপর শহরের নোমানী ময়দানে প্রথম জানাজা, পরে শ্রীপুর উপজেলার শব্দালপুর ইউনিয়নের জারিয়া গ্রামে দ্বিতীয় জানানা শেষে স্থানীয় সোনাইকুন্ডি কবরস্থানে মরদেহ দাফন করা হয়।
সদর থানার ওসি আইয়ুব আলী জানান, মৃত্যুর ঘটনায় তার ভগ্নিপতি হিটু শেখ, হিটু শেখের দুই ছেলে সজীব শেখ ও রাতুল শেখের নামে শিশুটির মা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। আসামিদের মধ্যে হিটু শেখকে সাতদিন ও অন্যদের পাঁচদিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। তাদের জ্ঞিাসাবাদ চলছে।