বাংলাদেশের অনলাইন শপিং এক্সপেরিয়েন্সে নতুন মাত্রা যোগ করতে যাচ্ছে ই-কমার্স সাইট কার্টআপ (cartup.com)। এটি ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি ব্যবসায়িক অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।

সম্পূর্ণ দেশীয় উদ্যোগে দেশের মানুষের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এটি তৈরি করা হয়েছে। এতে অনলাইন শপিংকে আরো সহজ করতে সাশ্রয়ী মূল্য, অথেনটিক পণ্য ও দ্রুততম সময়ে ডেলিভারিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

কার্টআপ অ্যাপ ও ওয়েবসাইট ব্যবহার করে সহজেই দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে পণ্য অর্ডার করা যাবে। নিজস্ব বিস্তৃত লজিস্টিক নেটওয়ার্কের সাহায্যে ডেলিভারি হবে নিরাপদ ও দ্রুততম সময়ে। ইলেকট্রনিক্স, ফ্যাশন, হোম অ্যাপ্লায়েন্স, গ্রোসারি, কসমেটিকসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রায় ১০ লাখেরও বেশি পণ্য থাকছে প্ল্যাটফর্মটিতে। বিশ্বস্ত ব্র্যান্ডসসহ প্রায় ২ হাজারের বেশি ভেরিফায়েড সেলাররা কার্টআপের সঙ্গে এরইমধ্যে যুক্ত হয়েছেন। এছাড়াও, উন্নত কাস্টমার সার্ভিস বজায় রাখতে ৭ দিনের রিটার্ন পলিসি ও প্রফেশনাল কাস্টমার সাপোর্টও থাকছে।

কার্টআপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ফুয়াদ আরেফিন বলেন, কার্টআপ এমন একটি মার্কেটপ্লেস হবে যেটি গ্রাহকের বিশ্বাস, দক্ষতা এবং সন্তুষ্টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাবে।

তিনি আরো যোগ করেন, আমরা বাংলাদেশে ই-কমার্সের জন্য একটি নতুন স্ট্যান্ডার্ড তৈরি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের প্ল্যাটফর্ম গ্রাহক ও বিক্রেতা উভয়ের প্রত্যাশা পূরণের জন্য তৈরি করা হয়েছে, যা একটি উন্নত অনলাইন শপিং অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করবে।

কার্টআপ লিমিটেড ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ ‘কার্টআপ কার্নিভাল’ লঞ্চ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। ক্যাম্পেইন চলাকালীন সময়ে ক্রেতারা বিভিন্ন পণ্যে এক্সাইটিং ডিসকাউন্ট, ফ্ল্যাশ সেল, ফ্রি ডেলিভারি, ম্যাজিক ভাউচার, ক্যাশব্যাক অফার উপভোগ করতে পারবেন। আপডেট পেতে গ্রাহকদের কার্টআপ মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড করতে এবং ব্র্যান্ডটির সোশ্যাল মিডিয়া পেজে চোখ রাখতে বলা হয়েছে।

ঢাকা/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

এনবিআরে দুর্নীতি এখনও বন্ধ হয়নি

প্রাক-বাজেট আলোচনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। চেয়ারম্যানকে দুর্নীতি বন্ধের উদ্যোগ নিতে বলেছেন।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব ভবনে এ আলোচনা হয়। সভায় বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা অভিজ্ঞতা ও বাজেট প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।

বাংলাদেশ টেরি টাওয়েল অ্যান্ড লিলেন ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিটিএলএমইএ) সভাপতি শাহদাত হোসেন সোহেল বলেন, ‘ব্যবসায়ীরা নানাভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। দুর্নীতি বন্ধ করুন, আপনারা যা চান ব্যবসায়ীরা তা দেবে। যাদের বন্ড নাই, তাদের রপ্তানির ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের বিভিন্ন জায়গায় অনেক কিছু ঘটে। এসব অনিয়মের অনেক প্রমাণ আছে। এনবিআর চেয়ারম্যানকে ভয়েস মেসেজ পাঠানো হয়েছে। এসব এখনও বন্ধ হয়নি।’

এনবিআরের চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আবারও অনুরোধ করব, রাজস্ব বোর্ডের এআরও (সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা) অনেক শক্তিশালী। কোনো কোনো সদস্য আপনার থেকেও শক্তিশালী। গত পরশু এক এআরও ফোন করে আমাকে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে বলেন। এটাই হচ্ছে বর্তমান চিত্র।’ উৎসে কর, নগদ প্রণোদনার উৎসে কর এবং ১০ ও ২০ কাউন্ট সুতায় শুল্ক ও কর কমানোর প্রস্তাব দেন তিনি।

বাংলাদেশ প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিজিএমইএ) সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট কে এম ইকবাল বলেন, ‘কয়েক দিন আগে পানগাঁওয়ে আমান প্লাস্টিকের দুটি কনটেইনার আটকে রেখে ৭ কোটি টাকা শুল্ক দাবি করা হয়। এ কারণে আমান প্লাস্টিকের মালিক এক সময় আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন। আমি তাঁকে ফিরিয়ে আনছি। সরকার পরিবর্তনের পর সেই কনটেইনার কোটি টাকা দিয়ে ছাড়াতে হয়েছে।’

এসবের প্রতিক্রিয়ায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবদুর রহমান খান বলেন, ‘আপনি সুবিধা না দিলে সে নেবে কোথা থেকে? আপনি দেন, পরে সেটা আবার বলেনও। প্রমাণ দেন। দুদক আছে, ধরতে পারে। এনবিআরও ধরতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, ‘এসব লেনদেন এখন ক্যামেরা দিয়ে রেকর্ড করে রাখা যায়। মোবাইলে কথোপকথন রেকর্ড করা যায়। এনবিআর শত শত কোটি টাকা খরচ করে অনলাইনে অভিযোগ জানানোর সিস্টেম চালু করেছে। এটা ব্যবসায়ীদের ব্যবহার করতে হবে।’

বিভিন্ন সংগঠনের প্রস্তাব
২০৩০ সাল পর্যন্ত করপোরেট কর হার কমিয়ে ১৫ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএম)। এ নিয়ে বিটিএম নেতাদের সঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যানের বাহাস হয়।

সংগঠনটির পরিচালক মোশাররফ হোসেন বলেন, ভারতীয় সুতা আমদানির কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। ৮-১০ হাজার কোটি টাকার সুতা অবিক্রীত রয়েছে। তাই করহার কমিয়ে আনতে হবে।

এ প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করপোরেট কর নেওয়া হয় আয়ের ওপর। গত ৫-৭ বছরে করপোরেট কর কমাতে কমাতে ২৫ শতাংশে আনা হয়েছে। ১০০ টাকা লাভ হলে ২৫ টাকা সরকারকে দেবেন। লাভ না হলে কর দেবেন না। এ ছাড়া ভারতীয় সুতা এত কম দামে আসে কীভাবে জানতে চান চেয়ারম্যান।

রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকারের নীতি সহায়তা চায় বাংলাদেশ গার্মেন্ট অ্যাক্সেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ)। পাশাপাশি আগামী ৫ বছরের জন্য উৎসে কর ১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ করা, ব্যক্তি পর্যায়ে করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে ৩ লাখ থেকে বাড়িয়ে ৪ লাখ টাকা করা, কোম্পানির ক্ষেত্রে সঞ্চয়ী আমানত, স্থায়ী আমানতের মুনাফার ওপর উৎসে কর ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ চেয়েছে।
বাংলাদেশ গার্মেন্ট বায়িং হাউস অ্যাসোসিয়েশন ১০ শতাংশ থেকে কমিয়ে অগ্রিম আয়কর ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেছে।

বেসিস তথ্যপ্রযুক্তি খাতে কর অব্যাহতি ২০৩১ সাল পর্যন্ত অব্যাহত রাখার দাবি জানিয়েছে। এ ছাড়া ডিজিটাল পেমেন্ট ইকোসিস্টেম গড়ে ওঠার আগে ক্যাশলেস ট্রানজেকশনের শর্ত শিথিল করা, দেশি সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তির ভ্যাট প্রত্যাহার, সফটওয়্যার রপ্তানিতে প্রণোদনা ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে।

রপ্তানি বাড়াতে প্লাস্টিক খেলনা উৎপাদনে ২৪ ধরনের কাঁচামাল আমদানিতে করছাড় চেয়েছে বিপিজিএমইএ। একইভাবে আমদানি করা ১৪টি কাঁচামালের করছাড় চায় বাংলাদেশ ফার্নিচার শিল্প মালিক সমিতি।

এলপিজি অটোগ্যাস সেক্টরে ট্যাক্স হলিডে সুবিধা চায় বাংলাদেশ এলপিজি অটোগ্যাস স্টেশন অ্যান্ড কনভারশন ওয়ার্কশপ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন। এলপিজি কনভারশন কিট, সিলিন্ডার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতি আমদানিতে শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। এ ছাড়া ভোক্তা পর্যায়ে অটোগ্যাসের বিক্রয়মূল্যের সঙ্গে সংযোজিত মূসক প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে তারা।

বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি নগদ সহায়তায় ১০ শতাংশ হারে অগ্রিম আয়কর প্রত্যাহারের প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুডস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএফএফইএ)।

কেক, বিস্কুট ও কনফেকশনারি পণ্যে শুল্ক অব্যাহতি চেয়েছে বাংলাদেশ বিস্কুট, ব্রেড ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারক সমিতি। 

হীরা আমদানির মূসকে ২০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়া ও স্বর্ণের গহনার ক্ষেত্রে তিন বছরের জন্য মূসকে ৫০ শতাংশ ভর্তুকির প্রস্তাব বাংলাদেশ জুয়েলারি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের।

সম্পর্কিত নিবন্ধ