ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে ওয়াজ মাহফিলের অতিথি করা নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মোশাররফ হোসেন (৪৫) নামে একজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও ১০ জন। 

মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে হরিনাকুন্ডু উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের হাকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি মহিউদ্দিন এবং বিএনপির কর্মী দবির মন্ডলের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। আজ (মঙ্গলবার) সকালে দবিরের ভাই মোশাররফ হোসেন মাঠে কলা কাটতে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন হামলা চালায়। খবর পেয়ে উভয় পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাতে ১০ জন আহত হন। তাদের সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মোশাররফকে মৃত ঘোষণা করেন।

চাঁদপুর ইউনিয়নের মেম্বার আশরাফ উদ্দীন স্বপন জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামের দবির মন্ডল ও তার ভাই মোশাররফ হোসেনের সাথে একই গ্রামের মহিন, বকুল ও সাঈদের সমর্থকদের বিরোধ চলে আসছিলো। সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামে ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন নিয়ে মিটিংয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ-বিতণ্ডা হয়। এরই জেরে সকালে দবির ও মোশাররফ হোসেন গ্রামের মাঠে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়। এঘটনার পর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধে যায়। এতে দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মোশাররফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা.

মাহবুবুল আলম বলেন, “সকালে হরিণাকুন্ডু থেকে কয়েকজন রোগী এসেছিল। এদের মধ্যে আমরা মোশাররফকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”

হরিণাকুন্ডু থানার ওসি এম এ রউফ খান জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে বিরোধে মোশাররফ হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করা হলে হাসপাতালে তিনি মারা যান। এ ঘটনায় মহিন নামের একজনকে আমরা আটক করে হেফাজতে নিয়েছি। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ঢাকা/শাহরিয়ার/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম শ ররফ হ স ন ঝ ন ইদহ স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল, বিক্ষুব্ধ জনতার থানা ঘেরাও

মেহেরপুরে ধর্ষণ মামলার আসামি জামিনে ছাড়া পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেইল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে আসামিদের গ্রেপ্তার ও তদন্ত অফিসারের শাস্তির দাবিতে মেহেরপুর সদর থানা ঘেরাও করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী কয়েকশ ছাত্র ছাত্রী সদর থানা ঘেরাও করে রাখে। পরে পুলিশ সুপার মাকসুদা আক্তার খানম তদন্ত কর্মকর্তা সুজয় কুমারকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এছাড়া মেহেরপুর সেনাবাহিনীর মেজর ফারহানের নেতৃত্বে একটি টিম থানায় গিয়ে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে কথা বলে ধর্ষকের বিচার হবে বলে আশ্বাস দেন।

জানা যায়, গেল বছরের ৯ সেপ্টেম্বর চকলেট দেওয়ার নাম করে মেহেরপুরে ৯ বছরের শিশুকে এক তরুণ তাদের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করে। এসময় ওই ছেলের এক বন্ধু এই ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে। পরে ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা নেয়। এরপর আবারও এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তাদের দাবি করা চাঁদার টাকা না দেওয়ায় আসামিরা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বাধ্য হয়ে শিশুটির মা বাদী হয়ে ৩ জনের নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হয়।

জামিনের পর তারা আবারও ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে বলে। এ ঘটনায় ধর্ষণ মামলার বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। বিষয়টি মীমাংসার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এসময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে মামলা তুলে নিতে অব্যাহত চাপ দিতে থাকেন।

খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মী তুষার ইমরান ও সিয়াম আহাম্মেদ। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তুষার ও সিয়ামের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে উপস্থিত হন পুলিশ সুপার মাকসুদা খানম। বিচারের আশ্বাস দিয়ে পুলিশ সুপার স্থান ত্যাগ করতে চাইলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা পুলিশ সুপারের বক্তব্য প্রত্যাখান করেন। তবে শেষ পর্যন্ত ছাত্রদের শর্ত মেনে মধ্য রাতে এসআই প্রত্যাহার, আসামীর জামিন বাতিলে উদ্যোগী হওয়া ও আসামিদের পুনরায় গ্রেপ্তারের আশ্বাসে ছাত্র-জনতা স্থান ত্যাগ করেন।

পুলিশ সুপার মাকসুদা আখতার খানম বলেন, ছাত্রদের দাবি অনুযায়ী উপরিদর্শক (এসআই) সুজয় কুমার মল্লিককে সাময়িক বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। এ ছাড়া অভিযুক্ত অন্য দুজনকে আটক করতে সেনাবাহিনীসহ পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ