‘জ্যাক অব অল ট্রেড’ বা ‘সকল কাজের কাজী’ই ছিলেন জ্যাক ক্যালিস। ব্যাট হাতে কার্যকর সব ইনিংস খেলতেন, বল হাতেও দক্ষিণ আফ্রিকার অন্যতম ভরসা ছিলেন সাবেক এই খেলোয়াড়। ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার—ক্যালিসকে পরিচয় করিয়ে দিতে এই শব্দগুলো ব্যবহার করতে দুবার ভাবতে হয় না।

দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক তারকার অলরাউন্ডার হয়ে ওঠার প্রথম মঞ্চটা ছিল আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ১৯৯৮ সাল, জগমোহন ডালমিয়ার ক্রিকেট বিশ্বায়নের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে ঢাকায় বসে উইলস ইন্টারন্যাশনাল কাপ। তবে পোশাকি এই নামে নয়, টুর্নামেন্টটি সাধারণ্যে পরিচিতি পেয়েছিল নকআউট বিশ্বকাপ নামেই। পরে যেটি নাম বদলে হয়ে যায় আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি।

১৯৯৮ সালে ঢাকায় সেই টুর্নামেন্টেই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নিজেকে সত্যিকারের অলরাউন্ডার হিসেবে মেলে ধরেন ক্যালিস। ব্যাট হাতে তিন ম্যাচে ১৬৪ রান করা ক্যালিস, বল হাতে নেন ৮ উইকেট। সেমিফাইনালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সেঞ্চুরি করা ক্যালিস ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩০ রানে নেন ৫ উইকেট। ২৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৩৭ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকাকে চ্যাম্পিয়ন করতে সবচেয়ে বড় ভূমিকাই রাখেন ক্যালিস। তাঁকে ফাইনাল ও টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি দিতে দুবার ভাবতে হয়নি নির্বাচকদের।

১৯৯৮ নকআউট বিশ্বকাপের ফাইনালে জ্যাক ক্যালিস.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

নিউ জিল্যান্ডের প্রথম বড় আইসিসি টুর্নামেন্ট জয়

২০০০ সালে কেনিয়ায় আয়োজিত আইসিসি নকআউট ট্রফির দ্বিতীয় আসরে খেলার সুযোগ পায় বাংলাদেশ।সেবার আয়োজক কেনিয়াসহ মোট ১১টি দেশ অংশ নেয়। যেহেতু নকআউট ট্রফি, সেহেতু কোয়ার্টার ফাইনাল খেলবে ৮টি দল। 

নিয়মানুযায়ী ৩টি দলকে বাদ দিতে হবে। আর সেটা করা হয় প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলার মধ্য দিয়ে। র‌্যাংকিংয়ের শীর্ষ পাঁচটি দল (পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, নিউ জিল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে) সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল খেলে। বাকি দলগুলোকে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল খেলতে হয়। তাতে অংশ নেয় ভারত, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, বাংলাদেশ ও কেনিয়া।

প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলাদেশ পায় ইংল্যান্ডকে। বাংলাদেশ প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩২ রান করে। জাভেদ ওমর  ৮৪ বলে ৬৩ রানের ইনিংস খেলেন। জবাবে ৮ উইকেট ও ৩৭ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের নাসের হুসেন ১২০ বলে ৯৫ রানের ইনিংস খেলেন। বাংলাদেশের মোহাম্মদ রফিক ১টি উইকেট নেন। বাংলাদেশকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নেয় ইংল্যান্ড। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে শেষ আটে যায় শ্রীলঙ্কা। আর স্বাগতিক কেনিয়াকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ভারতও কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট পায়। কেনিয়ার বিপক্ষের এই ম্যাচে অভিষেক হয় ভারতের জহির খান, যুবরাজ সিং ও বিজয় দাহিয়ার।

কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাকিস্তান পায় শ্রীলঙ্কাকে। নিউ জিল্যান্ড পায় জিম্বাবুয়েকে। ভারত পায় শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে। আর ইংল্যান্ড পায় দক্ষিণ আফ্রিকাকে। কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে সেমিফাইনালে ওঠে পাকিস্তান, নিউ জিল্যান্ড, ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। বিদায় নেয় শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ে।

সেমিফাইনালে নিউ জিল্যান্ডের মুখোমুখি হয় পাকিস্তান। আর দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হয় ভারত। নিউ জিল্যান্ড পাকিস্তানকে ৪ উইকেটে ও ভারত প্রোটিয়াদের ৯৫ রানে হারিয়ে ফাইনালে ওঠে।

১৫ অক্টোবর নাইরোবির জিমখানা ক্লাব মাঠে অনুষ্ঠিত ফাইনালে টস হেরে ব্যাট করতে নামে ভারত। সৌরভ গাঙ্গুলি ও শচীন টেন্ডুলকারের অসাধারণ উদ্বোধনী জুটিতে ১৪১ রান তোলে ভারত। এরপর ব্যক্তিগত ৬৯ রানে আউট হন শচীন। কিন্তু সৌরভ তুলে নেন সেঞ্চুরি। সৌরভের ১১৭ ও শচীনের ৬৯ রানে ভর করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান সংগ্রহ করে ভারত।

এই রান তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি নিউ জিল্যান্ড। ৬ রানে প্রথম, ৩৭ রানে দ্বিতীয় ও ৮২ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় কিউইরা। এরপর ১০৯ রানে চতুর্থ ও ১৩২ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় তারা। সেখান থেকে অপরাজিত সেঞ্চুরি (১০২) করে নিউ জিল্যান্ডকে শিরোপা জেতান ক্রিস কেয়ার্নস। তার সঙ্গে ৪৬ রানের ইনিংস খেলেন ক্রিস হ্যারিস। তাতে ৪৯.৪ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় কিউইরা। পাশাপাশি জিতে নেয় আইসিসি নকআউট ট্রফি। যা তাদের ক্রিকেট ইতিহাসে আইসিসি আয়োজিত কোনো বড় ইভেন্টের শিরোপা।

ভারতের ভেঙ্কটেশ প্রসাদ ৭ ওভার বল করে ২৭ রান দিয়ে ৩টি উইকেট নেন। ২টি উইকেট নেন অনিল কুম্বলে। ফাইনালের ম্যাচসেরা হন নিউ জিল্যান্ডের ক্রিস কেয়ার্নস।

এক নজরে আইসিসি নকআউট ট্রফি-২০০০

তারিখ : ৩ অক্টোবর থেকে ১৫ অক্টোবর-২০০০

আয়োজক : কেনিয়া

ফরম্যাট : ওয়ানডে ইন্ডারন্যাশনাল

টুর্নামেন্ট : নকআউট ভিত্তিক

অংশগ্রহণকারী দেশ : ১১টি

মোট ম্যাচ : ১০টি

চ্যাম্পিয়ন : নিউজিল্যান্ড

রানার্স-আপ : ভারত

সবচেয়ে বেশি রান : ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলি (৩৪৮)

সবচেয়ে বেশি উইকেট : ভারতের ভেঙ্কটেশ প্রসাদ (৮ উইকেট)।

ঢাকা/আমিনুল/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মডার্ন ক্ল্যাসিক আজ
  • নিউ জিল্যান্ডের প্রথম বড় আইসিসি টুর্নামেন্ট জয়
  • চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুর ইতিহাস